বাড়ির চারপাশে গজিয়েছে ঝোপঝাড়। নিজস্ব চিত্র।
জল-বিদ্যুতের বন্দোবস্ত নেই। বর্ষায় দামোদরের জল উঠে আসে উঠোনে। অন্ডালের মদনপুর পঞ্চায়েতের বাসকায় গীতাঞ্জলি প্রকল্পে তৈরি ২২টি বাড়িতে এমন নানা অসুবিধে রয়েছে অভিযোগ করে বাস করতে চাইছেন না উপভোক্তারা। ফলে, প্রকল্পের টাকা খরচ করে তৈরি বাড়িগুলি পড়ে রয়েছে ফাঁকাই। সুযোগ পেয়ে দরজা-জানলা চোরেরা চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৩ সালের মে মাসে ওই বাড়িগুলির নির্মাণকাজ শুরু হয়েছিল। মাসখানেকের মধ্যে ১০টি বাড়ি তৈরি হয়ে গেলেও উপভোক্তারা সেখানে যাননি। তার জেরে বাকি ১২টি বাড়ি অর্ধেক তৈরি করার পরে আর কাজ এগোনো হয়নি। ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, প্রকল্পের পুরো টাকা জলে যেতে পারে বুঝে ওই বাড়িগুলির কাজ আর শেষ করা হয়নি। পুরোপুরি তৈরি হয়ে পড়ে থাকা বাড়়িগুলিতে বাসিন্দারা বসবাস শুরু করলে বাকিগুলির কাজ শেষ করা হবে বলে জানান তিনি।
বাসকার বাসিন্দা আভা দাস, বুলু রায়, গোসাইডাঙার তনুপা বাউরি, অনিতা বাউরিরা অভিযোগ করেন, যেখানে বাড়িগুলি তৈরি হয়েছে সেখানে জল ও বিদ্যুৎ নেই। পাশেই দামোদর। বর্ষায় জল বাড়লে জল ওই আবাসন প্রকল্পের জায়গা ভাসিয়ে দেয়। হাঁটু সমান জল জমে থাকে বেশ কয়েক দিন। এ সব কারণেই তাঁরা সেখানে যেতে ভয় পাচ্ছেন।
লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা জানান, ফাঁকা পড়ে থাকায় এরই মধ্যে একটি আবাসনের জানলা চুরি গিয়েছে। কিছু লোকের দুষ্কর্মের আসরের জায়গায় পরিণত হয়েছে বাড়িগুলি। ফলে, সন্ধের পরে সে দিকে যাতায়াত করা মুশকিল হয়ে উঠছে। দ্রুত পরিকাঠামোগত অব্যবস্থা দূর করে আবাসনগুলি বসবাসের উপযুক্ত করে তোলা হোক, দাবি এলাকার মানুষজনের।
মদনপুর পঞ্চায়েতের এক সদস্যের আবার অভিযোগ, “নাম নথিভুক্ত করার আগে পঞ্চায়েত সমিতির সমীক্ষা করে দেখা উচিত ছিল, কোন উপভোক্তার সত্যিই বাড়ির প্রয়োজন আছে। প্রয়োজন নেই এমন কিছু লোকজনের নাম নথিভুক্ত করায় এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, এমন কোনও প্রকল্প হাতে নেওয়ার আগে স্থানীয় পঞ্চায়েতের সব সদস্যকে ডেকে সমীক্ষা করা প্রয়োজন।
অন্ডাল পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কালোবরণ মণ্ডল জানান, ২০১৩ সালে তাঁরা পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতায় আসার আগেই ওই প্রকল্পের কাজ হয়েছে। প্রকল্পে জল, বিদ্যুৎ সরবরাহের কোনও সংস্থান নেই। তবে তিনি বলেন, ‘‘বাসিন্দারা আবাসনে গিয়ে থাকতে শুরু করলে আমরা জল, বিদ্যুতের ব্যবস্থা করব। তার আগে শ্রীঘ্রই প্রত্যেক উপভোক্তাকে চিঠি দিয়ে সেখানে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হবে। তাঁরা যেতে না চাইলে নতুন নাম নথিভুক্ত করে বাড়িগুলি বিলি হবে।’’