সংরক্ষণের আওতায় পুরনো ওয়ার্ড

নেতাদের নামতে হবে অচেনা মাঠে

পুরভোটের জন্য দুর্গাপুরে আসন সংরক্ষণের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করল প্রশাসন। সোমবার জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন এই তালিকা প্রকাশ করেন। আর তার পরেউ চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে শাসক ও বিরোধী, দু’পক্ষেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৫০
Share:

পুরভোটের প্রস্তুতি শুরু শহরে। নিজস্ব চিত্র।

পুরভোটের জন্য দুর্গাপুরে আসন সংরক্ষণের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করল প্রশাসন। সোমবার জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন এই তালিকা প্রকাশ করেন। আর তার পরেউ চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে শাসক ও বিরোধী, দু’পক্ষেই। কারণ, ডেপুটি মেয়র, মেয়র পারিষদ থেকে বিরোধী দলনেতা, অনেকেই গত বার যে ওয়ার্ড থেকে জিতেছিলেন, এ বার সংরক্ষণের গেরোয় সেখানে প্রার্থী হতে পারবেন না তাঁরা। দল টিকিট দিলে লড়তে হবে অন্য কোনও এলাকা থেকে।

Advertisement

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্ভবত মে মাসে দুর্গাপুরে পুরভোট হবে। নির্বাচন হবে এখনকার ৪৩টি ওয়ার্ডেই। এলাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব থাকলেও এ বার তা কার্যকর হচ্ছে না। ওয়ার্ড সংরক্ষণের প্রাথমিক তালিকা আগেই জেনে গিয়েছিল রাজনৈতিক দলগুলি। তার পরেই টিকিট পেলে কোন-কোন নেতাকে ওয়ার্ড পাল্টাতে হবে, সে নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে যায়। সোমবার সরকারি ভাবে প্রকাশিত তালিকা সেই চর্চা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে নিয়ম অনুযায়ী এই সংরক্ষণ সংক্রান্ত কোনও আপত্তি থাকলে দু’সপ্তাহের মধ্যে তা জানানোর সুযোগ আছে দলগুলির কাছে। যদিও কোনও তরফেই কোনও আপত্তি জানানো হচ্ছে না বলে প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে।

তালিকা অনুযায়ী, পুরসভার ১, ২৮, ৩৪, ৩৫, ৩৭, ৩৯ নম্বর ওয়ার্ড তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত রাখা হয়েছে। এর মধ্যে ১, ২৮ ও ৩৫ নম্বর ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত। তফসিলি উপজাতির জন্য একমাত্র ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডটি সংরক্ষিত। সাধারণ মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত ৩, ৬, ৯, ১২, ১৫, ১৮, ২১, ২৪, ২৭, ৩১, ৩৮ ও ৪২ নম্বর ওয়ার্ড। বর্তমান ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়, মেয়র পারিষদ প্রভাত চট্টোপাধ্যায়, লাভলি রায়, মধুসূদন মণ্ডল ও প্রমোদ সরকার, ৩ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান চন্দন সাহা, কাউন্সিলর পল্লব নাগ, পবিত্র মুখোপাধ্যায় ও অরবিন্দ নন্দী এবং বিরোধী দলনেতা শিবশঙ্কর চট্টোপাধ্যায়েরা যে সব ওয়ার্ড থেকে জিতেছিলেন, সেগুলি সংরক্ষণের তালিকায় রয়েছে। ফলে এ বার ওই নেতাদের দল প্রার্থী করলে লড়তে হবে নতুন কোনও ওয়ার্ড থেকে।

Advertisement

পুরনো জায়গা ছেড়ে অচেনা মাঠে খেলতে হলে অসুবিধে যে খানিকটা হবে, অনুগামীদের কাছে তা স্বীকার করছেন অনেকেই। যদিও প্রকাশ্যে কেউই তা মানতে নারাজ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘নিজের ওয়ার্ডের সবাইকে চিনি। পাঁচ বছর ধরে এলাকায় কাজ করছি। এ বার দল যদি প্রার্থী করে তাহলে নতুন ওয়ার্ডে গিয়ে জনসংযোগ গড়তে হবে। এই অল্প সময়ে তা বেশ কঠিন কাজ।’’

ডেপুটি মেয়র তথা তৃণমূল নেতা অমিতাভবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘আমার ওয়ার্ড মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়েছে। দল প্রার্থী করলে নতুন ওয়ার্ডে দাঁড়াব। মানুষের জন্য কাজ করি। কোনও সমস্যা হবে না।’’ পুরসভার বিরোধী দলনেতা সিপিএমের শিবশঙ্করবাবুর বক্তব্য, ‘‘সংরক্ষণের প্রাথমিক তালিকা আমরা খতিয়ে দেখছি। তবে ওয়ার্ড বদল নিয়ে আমরা চিন্তিত নই। মানুষের প্রতি আমাদের আস্থা আছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন