অভিযোগের অন্ত ছিল না। তবে দেরিতে হলেও বেআইনি পার্লার এবং স্পা-এর বিরুদ্ধে পুলিশ ও পুরসভা ব্যবস্থা নিতে শুরু করায় স্বস্তিতে দুর্গাপুরের বাসিন্দারা। মঙ্গলবার বিকেলে সিটি সেন্টার ও বিধাননগরের বেশ কিছু পার্লার ‘সিল’ করা হয়। লাগাতার অভিযানের আশ্বাস দিয়েছেন পুরসভার কমিশনার কস্তুরী সেনগুপ্ত।
বছর দশেক আগেও দুর্গাপুর শহরে ইউনিসেক্স পার্লার বা স্পা-এর এমন রমরমা ছিল না। কিছু বিউটি পার্লার ছিল, যার বেশিরভাগই মেয়েদের জন্য। তবে ২০১০ থেকে অলিতে-গলিতে স্পা-পার্লার গজিয়ে উঠতে শুরু করে। সেগুলির রমরমা দেখে মুনাফার লোভে কিছু সাধারণ বিউটি পার্লারেও এই পরিষেবা শুরু হয়। ক্রেতা টানতে প্রতিযোগিতায় কিছু স্পা ও পার্লারে অবৈধ কাজ-কারবার শুরু হয় বলে অভিযোগ।
পুরসভা সূত্রে জানা যায়, মোট ১২২টি বিউটি পার্লার পুরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়েছিল। তার মধ্যে সিটি সেন্টারে ৩৫টি ও বিধাননগরে ১৭টি। বহু পার্লারেই স্পা-এর পরিষেবা দেওয়া হতো। ২০১৪ সালের শেষ থেকে অধিকাংশ পার্লারের বিরুদ্ধে অবৈধ কাজ-কারবারের অভিযোগ উঠতে শুরু করে। ২০১৫-র এপ্রিলের শেষ থেকে পার্লারগুলির ট্রেড লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ বন্ধ করে দেয় পুরসভা। সেই বছরই জুলাইয়ে বাঁকুড়ার ঠিকাদার বিপুল রায়চৌধুরীকে খুনে নাম জড়ায় বেঙ্গল অম্বুজা এলাকার একটি স্পা-এর। পুলিশ সেটি বন্ধ করে দেয়।
তবে ট্রেড লাইসেন্স না থাকলেও অধিকাংশ পার্লার আগের মতোই ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছিল বলে অভিযোগ। আবার ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে ব্যবসা করা বেশ কিছু পার্লারের মালিক দাবি করেন, তাঁরা নিময় মেনে পরিষেবা দেন। লাইসেন্স পুনর্নবীকরণ না করার ফলে ব্যবসা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। এর বদলে প্রশাসনের তরফে কড়া নজরদারির দাবি জানান তাঁরা।
সম্প্রতি বিধাননগরের বাসিন্দারা নিজেরাই এলাকার কিছু পার্লারে গিয়ে বেআইনি কাজ-কারবার বন্ধের দাবি জানান। তার পরেই নড়েচড়ে বসে পুরসভা ও পুলিশ। মঙ্গলবার পুরসভার কমিশনার, মেয়র পারিষদ মধুসূদন মণ্ডল ও পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি (পূর্ব) বিমলকুমার মণ্ডল সিটি সেন্টার ও বিধাননগরের বেশ কিছু পার্লারে অভিযানে যান। যদিও আগাম খবর পেয়ে তালা দিয়ে পালায় বেশ কিছু পার্লারের লোকজন। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, পার্লারগুলিতে সিসি ক্যামেরা বসানো বাধ্যতামূলক করার ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। সিটি সেন্টারের বাসিন্দা পিনাকী বসু, বিধাননগরের রমেন চট্টোপাধ্যায়েরা বলেন, ‘‘এ সব পার্লারের জন্য শহরের সামাজিক পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। আশা করি ধারাবাহিক অভিযান চলবে।’’
ছাত্রের দেহ। কলকাতার নিউটাউনে ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হল দুর্গাপুরের এক তরুণের দেহ। দুর্গাপুরের ডিএসপি টাউনশিপের এডিসন রোডের বাসিন্দা ধ্রুবজ্যোতি দেব (২০) নিউটাউনের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে পড়াশোনা করতেন। সেখানেই একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকতেন। বুধবার সকালে প্রতিবেশীদের কাছে খবর পেয়ে তালা ভেঙে ভিতরে ঢোকে পুলিশ। তখনই ঝুলন্ত দেহ মেলে। এ দিন দুর্গাপুরে ধ্রুবজ্যোতির বাড়িতে গিয়ে পরিবারের কারও দেখা মেলেনি। বাড়ি দেখভালের দায়িত্বে থাকা অচিন্ত্য দে বলেন, ‘‘কেন এমন হল, কিছুই বুঝতে পারছি না!’’