চলছে দেওয়াল বোজানো।—নিজস্ব চিত্র
আদালতের লক-আপ থেকে পালানো বন্দি এখনও অধরা। ওই ঘটনার তিন দিন বাদে, সোমবার লক-আপের দেওয়ালের ভাঙা জায়গাটি ভরাট করল প্রশাসন। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বর্ধমান সদর) দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “কোর্ট ইনস্পেক্টরকে রিপোর্ট করতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
গত শুক্রবার শাবল বা অন্য কোনও যন্ত্র দিয়ে লক-আপের দেওয়াল কেটে চম্পট দেন বিহারের বাসিন্দা টনটন মিশ্র। তাঁর বিরুদ্ধে কুলটি ও অন্ডাল থানায় মাদক ও অস্ত্র পাচারের অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ জানায়, এর আগে বিহারের একটি আদালত থেকেও চম্পট দিয়েছিলেন টনটন। সে যাত্রা ডেরা বেধেছিলেন আসানসোলে।
এই ঘটনার আগেও এক বার বন্দি পালানোর ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময়ে জেলা পুলিশের কর্তারা, চার জন কর্মীকে ‘ক্লোজ’ করেছিলেন। এ ভাবে বারবার বন্দি চম্পট দেওয়ার ঘটনায় নিরাপত্তার দিকটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বর্ধমান বার অ্যাসোসিয়েশন। ওই সংগঠনের সম্পাদক সদন তা’র অভিযোগ, “আইনজীবীদের সঙ্গে আলোচনা না করে একের পরে এক ভবন তৈরি হয়েছে। ফলে নিরাপত্তায় খামতি থেকে গিয়েছে।” বার সূত্রেই জানা যায়, বন্দি পালানো ছাড়াও বেশ কিছু চুরির ঘটনারাও এ পর্যন্ত কিনারা হয়নি। বছর তিনেক আগে সিজেএম-এর ঘর থেকে কম্পিউটার চুরি যায়। তার হদিস মেলেনি। এ ছাড়াও আদালত চত্বর থেকে কল, কলের পাইপ, আলো চুরির ঘটনাও ঘটছে।
তবে ‘পরিকল্পনা’ করে দেওয়াল ভেঙে পালানোর ঘটনায় টনক নড়েছে সব মহলে। প্রত্যেকেরই এক প্রশ্ন, শক্তপোক্ত ইঁটের গাঁথনি ভাঙতে যথেষ্ট সময় লাগার কথা। এই সময়ে গোটা বিষয়টি কী ভাবে কারও নজরে পড়ল না বা কেউ কোনও আওয়াজও পেলেন না। পুলিশের এক কর্তার অবশ্য দাবি, ‘‘অনেক প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। তবে অনুমান, দেওয়াল কাটে চম্পট দেওয়ার সময়ে টনটনের সঙ্গীরা চারি দিকে পাহারায় ছিলেন।” টনটন পালানোর পরে অবশ্য ওই গর্তের সামনে সশস্ত্র পুলিশ পাহারায় ছিল। সোমবার বিকেলে ওই গর্ত বোজানোর কাজ হয়েছে। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, “প্রতি মাসে জেলা জজ, পুলিশ সুপারের সঙ্গে প্রশাসনের বৈঠক হয়। সেখানে নিরাপত্তার বিষয়টি কী ভাবে আরও জোরালো করা যায়, তা নিয়ে আলোচনা
করা হবে।”