Indian Railways

রেলের উচ্ছেদ অভিযান শুরু আসানসোলে

মঙ্গলবার স্টেশন রোডের দু’পাশের অংশ দখল মুক্ত করা হয়। রেলের দাবি, দিন পনেরো আগে উচ্ছেদের জন্য নোটিস দেওয়া হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৫ মে ২০২২ ০৮:৪৪
Share:

স্টেশন রোড দখলমুক্ত করা হয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।

পূর্ব নির্ধারিত ঘোষণা মতো উচ্ছেদ অভিযান শুরু করল রেল। পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশন জানিয়েছে, মঙ্গলবার আসানসোলের স্টেশন রোডকে দখলমুক্ত করা হয়েছে। তবে জিটি রোড লাগোয়া এলাকায় রেলের জমি দখলমুক্ত করতে গিয়ে বাধা পেয়ে ফিরে এসেছেন রেল-কর্তারা। আজ, বুধবার ফের অভিযান চালানো হবে বলে রেল জানিয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার দুপুরে রেলকর্তা, আরপিএফ-এর উপস্থিতিতে স্টেশন রোডের দু’পাশের অংশ দখল মুক্ত করা হয়। রেলের দাবি, দিন পনেরো আগে উচ্ছেদের জন্য নোটিস দেওয়া হয়। কিন্তু কেউই প্রায় সরে না যাওয়ায় মঙ্গলবার উচ্ছেদ করতে হয়। অভিযোগ, আসানসোল পুরসভা লাগোয়া জিটি রোড থেকে সোজা যে রাস্তাটি আসানসোল স্টেশনে গিয়েছে, সে রাস্তার দু’পাশ দখল করে গড়ে উঠেছিল স্থায়ী-অস্থায়ী দেকান। ফলে, হারিয়ে গিয়েছিল হাঁটাপথ। এই অবস্থায় মূল রাস্তা ধরে পথচারীদের যাতায়াত করতে হওয়ায় স্টেশন রোডে নিত্য যানজট লেগেই ছিল। ট্রেন ধরতে গিয়েও সমস্যায় পড়তেন বাসিন্দারা। এ দিন ওই এলাকা ফাঁকা করতে গিয়ে কোনও রকম সমস্যার মুখে পড়তে হয়নি রেলকে।

কিন্তু উল্টো চিত্র দেখা যায়, জিটি রোডের উত্তর প্রান্তে সুভাষ ইনস্টিটিউট লাগোয়া এলাকায় অভিযান চালানোর সময়। অভিযোগ, সেখানে স্থানীয় এক দল দোকান মালিক রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই দোকান মালিকদের কয়েক জন দাবি করেন, সেখানে রেলের জমি নেই। তাঁরা জমি কিনে দোকান তৈরি করেছেন। যদিও রেল দাবি করেছে, সেখানে জমির পুরোটাই তাদের। তা নিয়ে, দু’পক্ষের মধ্যে বচসা বাধে। তবে সেখানে আগে থেকেই আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এসিপি তথাগত পাণ্ডের নেতৃত্বে পুলিশ মোতায়েন করা ছিল। পুলিশের মধ্যস্থতায় পরিস্থিতি শান্ত হয়। ঠিক হয়, বুধবার রেলের তরফে উপযুক্ত নথি দেখিয়ে, এলাকা দখলমুক্ত করার অভিযান চালানো হবে। রেলের আসানসোল ডিভিশনের সিনিয়র সিকিওরিটি কমিশনার চন্দ্রমোহন মিশ্র বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট ও রেলের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে দখলমুক্ত করার কাজ চলছে। আগামী দিনেও এই কাজ করা হবে।”

Advertisement

ঘটনাচক্রে, আসানসোলে রেলপাড়ের, চাঁদমারি ও মহুয়াডাঙাল এলাকায় রেলের জমি ও পরিত্যক্ত আবাসন দখল করে বসবাসকারিদের উঠে যাওয়ার নোটিস দেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবার সে সময়সীমা পেরিয়ে গিয়েছে। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, বুধবার আরপিএফ-কে সঙ্গে নিয়ে এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে। তবে ইতিমধ্যেই উচ্ছেদ-অভিযানের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেছেন ‘জবরদখলকারীরা’। দাবি তুলেছেন, পুনর্বাসন ছাড়া, তাঁরা কিছুতেই উঠবেন না। সোমবারই বাসিন্দাদের একাংশের সঙ্গে বিক্ষোভে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অভিজিৎ ঘটক-সহ আসানসোলের কয়েক জন তৃণমূল কাউন্সিলর। এ দিন অভিজিৎ বলেন, “পুনর্বাসন ছাড়া, উচ্ছেদ করা যাবে না। এটা আমাদের ঘোষিত নীতি। প্রয়োজনে, বড় আন্দোলন হবে।”

উচ্ছেদ অভিযানের প্রাথমিক প্রক্রিয়া শুরু করেছে ‘চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস’ও (সিএলডব্লিউ)। গত সোমবার চিত্তরঞ্জন রেল-শহরে আগামী ১০ জুনের মধ্যে ‘জবরদখলকারীদের’ নির্মাণ ভাঙার নোটিস দেওয়া হয়েছে। সময়সীমার মধ্যে তা করা না হলে, কর্তৃপক্ষ তা ভেঙে ফেলবেন। এমনকি, সে ক্ষেত্রে দখল মুক্ত করার জন্য যে খরচ হবে, তা-ও ‘জবরদখলকারীদের’ থেকে নেওয়া হবে। সিএলডব্লিউ-র এই নোটিসের পরে, দুশ্চিন্তা ছড়িয়েছে জনতার একাংশে। কারণ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দাদের দাবি, রেল-শহরের ফতেপুর অঞ্চলে ৫৭ নম্বর রাস্তা, সিমজুড়ি এলাকার ৯৯ নম্বর রাস্তা লাগোয়া অঞ্চল, আমলাদহি বাজার ও চিত্তরঞ্জন এক নম্বর গেট লাগোয়া এলাকায় প্রচুর পরিমাণে রেলের জমি দখল হয়ে রয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন