জলে ডোবা গুসকরায় বর্ষাই আতঙ্ক

প্রায় তিন দশক হল আলাদা পুরসভার মর্যাদা পেয়েছে গুসকরা। কিন্তু এখনও পরিকল্পনা অনুযায়ী নিকাশি ব্যবস্থা না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে অধিকাংশ ওয়ার্ডই জলমগ্ন হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

Advertisement

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

গুসকরা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৭ ০১:৪২
Share:

বেহাল: সাফাই হয় না নর্দমা, গুসকরায়। নিজস্ব চিত্র

এ বার বর্ষাতেও কি ভাসবে গুসকরা, আশঙ্কায় শহরবাসী।

Advertisement

প্রায় তিন দশক হল আলাদা পুরসভার মর্যাদা পেয়েছে গুসকরা। কিন্তু এখনও পরিকল্পনা অনুযায়ী নিকাশি ব্যবস্থা না হওয়ায় সামান্য বৃষ্টিতে অধিকাংশ ওয়ার্ডই জলমগ্ন হয়ে পড়ে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। তাঁদের বক্তব্য, চলতি বোর্ডের নির্বাচনের আগে রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম খোদ গুসকরায় এসে কথা দিয়েছিলেন, শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজা হবে। বোর্ডের মেয়াদ আর কয়েক মাস, অথচ এখনও এ ব্যাপারে কোনও উদ্যোগই চোখে পড়ছে না বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। পুর-কর্তৃপক্ষ অবশ্য অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, শহরের নিকাশি ব্যবস্থা ঢেলে সাজতে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

কয়েক বছর আগে বেশ কয়েক লক্ষ টাকা খরচ করে শিরীষতলা থেকে স্কুলমোড় পর্যন্ত একটা বড় নর্দমা তৈরি হয়েছে। তবে বাসিন্দাদের অভিযোগ, নর্দমাটি অপেক্ষাকৃত নিচু এলাকা থেকে উঁচুর দিকে গিয়েছে। ফলে, তা দিয়ে জল বয়ে যাওয়ার বদলে জমে থাকে এবং সামান্য বৃষ্টিতেই জল উপচে এলাকা জলমগ্ন হয়ে পড়ে। গুসকরার বিরোধী কাউন্সিলর সিপিএমের রজত সরকারেরও অভিযোগ, ওই নর্দমাটি অসম্পূর্ণ। শান্তিপুর এলাকায় বাসস্ট্যান্ডের কাছে তা শেষ হয়ে গিয়েছে। ফলে, নিকাশির জল বা বৃষ্টির জল ওই এলাকাতেই জমে থাকে।

Advertisement

ফি-বছর বর্ষায় জলমগ্ন হওয়ার কারণ হিসেবে গুসকরার ভৌগোলিক অবস্থানকেও দায়ী করেন বাসিন্দারা। গুসকরার উত্তরে রয়েছে কুনুর নদী এবং দক্ষিণে কাঁদর। ফলে, বর্ষায় এই এলাকা থেকে জল বেরোতে পারে না। উল্টে কুনুর নদীর জল উপচে এলাকায় ঢুকে পড়ে। এ ছাড়া, কুনুরের নাব্যতা কমে যাওয়াও গুসকরা জলমগ্ন হওয়ার অন্যতম কারণ বলে ধারণা বাসিন্দাদের। পুরসভার পূর্ত দফতরের স্থায়ী কমিটির সভাপতি নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায় জানান, জলপ্রবাহ বাড়াতে অবিলম্বে কুনুরের সংস্কার প্রয়োজন। কেন্দ্র থেকে একবার টাকা বরাদ্দ হলেও বিভিন্ন কারণে সে কাজ হয়ে ওঠেনি। তাঁর মতে, আউশগ্রাম ও ভাতার ব্লক প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সমিতি যদি দক্ষিণে কাঁদরটিরও সংস্কার করে, তা হলেও গুসকরার নিকাশিতে সুবিধা হয়।

পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায় জানান, ‘বুস্টার পাম্প’ ছাড়া গুসকরা থেকে জল বার করা সম্ভব নয়। পুরসভা সূত্রে খবর, রাজ্য সরকারের কাছে বুস্টার পাম্পের জন্য প্রস্তাব পাঠানো হলেও উত্তর মেলেনি। পুরপ্রধান অবশ্য জানান, গুসকরার নিকাশি ব্যবস্থা নিয়ে ‘মাস্টার প্ল্যান’ তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে একটি সংস্থাকে। সেখান থেকে রিপোর্ট পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন