ডুবেছে সব্জি খেত। —নিজস্ব চিত্র।
বৃষ্টি কমলেও দুর্ভোগ কমেনি জেলায়। রাস্তা, সেতু ভেসে যাতায়াতে দুর্ভোগের সঙ্গে বেড়েছে চাষিদের সমস্যাও। কৃষি দফতরের হিসাবে, মাস খানেক আগে লাগানো আমন ধানের ২০ হাজার হেক্টরেরও বেশি জমি জলমগ্ন। পরিস্থিতির অবনতি হলে ধান গাছ পচে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তাঁদের দাবি। যদিও জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন জানিয়েছেন, কোনও নদীর জলই বিপদসীমার কাছে পৌঁছায়নি। তবে সবাইকে সতর্ক করে রাখা হলেও পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।
সোমবারও দফায় দফায় জল ছাড়ে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত মোট জল ছাড়া হয়েছে ১ লক্ষ ১৩ হাজার ১৫০ কিউসেক। মাইথন এবং পাঞ্চেত থেকে ছাড়া হয়েছে আরও ৭০ হাজার। ফলে বিপদসীমা না পেরোলেও ভাগীরথী, অজয়, দামোদরে জল বেড়েছে বহু।
কৃষি দফতর সূত্রে জানা যায়, গোটা জেলায় গড়ে ১৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে বর্ধমান শহর ও মন্তেশ্বরে। দফতরের উপঅধিকর্তা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বেশ কিছু জায়গাতে ধান জমিতে জল জলে থাকায় ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। কোন ব্লকে কত জমি জলমগ্ন তা নিয়ে এ দিন কৃষি দফতর একটি রিপোর্ট তৈরি করে। জানা গিয়েছে, মোট ২১ হাজার ৪১৫ হেক্টর ধানের জমি জলমগ্ন। যার মধ্যে কালনায় রয়েছে ১৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমি, বর্ধমান সদরে ৫ হাজার ৭৪৫ হেক্টর, কাটোয়া মহকুমায় ১১৭৯ এবং দুর্গাপুর মহকুমায় ১৩৯১ হেক্টর জমি। জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘স্বর্ণ সাব ওয়ান নামে একটি প্রজাতির ধান জেলায় ব্যাপক পরিমাণে চাষ হয়। এই প্রজাতির ধানের জল সহ্য করার ক্ষমতা রয়েছে।’’ ক্ষতির মুখে সব্জি চাষও। পূর্বস্থলী এলাকার বহু খেতে জল দেখা গিয়েছে। চাষিদের দাবিস ঝিমিয়ে পড়েছে সব্জি গাছ। ক্ষয়ক্ষতির রিপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে বলেও উদ্যানপালন দফতরের দাবি।
কালনা শহরের বৈদ্যপুর মোড়, মেডিসিন কমপ্লেক্স, আদালতমুখী রাস্তাতেও জল জমেছিল দীর্ঘক্ষণ। পূর্বস্থলীর চর গোয়ালপাড়া এলাকার রাস্তাও তলিয়ে যায়। সমুদ্রগড়, নসরতপুর পঞ্চায়েতে এলাকার বেশ কিছু বাড়ি ও তাঁত ঘরে নর্দমা উপচে জল ঢুকে যায়। পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি দিলীপ মল্লিক জানান, এলাকায় বেশ কিছু কাঁচাবাড়ি নষ্ট হয়েছে দুর্যোগে। প্রায় সাড়ে ছশো ত্রিপল বিলি করা হয়েছে।
রাতে গুসকরার দুটি ওয়ার্ডও কুনুর নদীর জলে ভেসে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।