Water Bodies

Raniganj: রানিগঞ্জ শহরে ‘হারাচ্ছে’ জলাশয়

স্থানীয় সূত্রে অভিযোগ, রেল স্টেশন, বড়বাজার, মাড়োয়ারিপট্টি, কলেজ রোডের একাংশ-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় সংযোগকারী রাস্তাগুলি বেহাল।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২২ ০৭:৫৭
Share:

রানিগঞ্জে যানজট। ছবি: ওমপ্রকাশ সিংহ।

আসানসোল পুরসভার রানিগঞ্জে ৩২ থেকে ৩৭ এবং ৮৮ থেকে ৯৩ নম্বর ওয়ার্ড দু’নম্বর বরোর অন্তর্গত। নাগরিকদের একাংশের মতে, এই বরো তথা রানিগঞ্জ শহরের মূল সমস্যা চারটি— এক, বেহাল সংযোগকারী রাস্তা। দুই, পরিশ্রুত পানীয় জলের অভাব। তিন, নিকাশি-সমস্যা ও জলাশয় ‘ভরাট’ এবং চার, যানজট।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে অভিযোগ, রেল স্টেশন, বড়বাজার, মাড়োয়ারিপট্টি, কলেজ রোডের একাংশ-সহ বিস্তীর্ণ এলাকায় সংযোগকারী রাস্তাগুলি বেহাল। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে প্রচারেও নেমেছে সিপিএম। ৩৪ নম্বর ওয়াডের সিপিএম প্রার্থী সঞ্জয় পরামানিকের অভিযোগ, “পুরভোটের আগে লোক দেখাতে কয়েকটি সংযোগকারী রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু বড়বাজার, সিআর রোডে রাস্তার গর্তগুলি বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে। এতে বেশি দিন রাস্তা টিকবে না।”

সে সঙ্গে রানিসায়র, সিহারসোল, আমরাসোঁতা, সুকান্তপল্লি, নতুনবস্তির মতো এলাকাগুলিতে পরিশ্রুত পানীয় জলের সরবরাহ ‘অপর্যাপ্ত’। সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়, নিত্য বাউড়ি, অনুপ বাউড়িদের মতো স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, “অনেক এলাকাতেই বাসিন্দাদের কুয়ো অথবা পুকুরের জল ব্যবহার করতে হয়। মাঝেমধ্যে পেটের রোগও দেখা যায়।”

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে এ-ও অভিযোগ, রানিগঞ্জের ৬৭টি বস্তি এলাকাতেই নিকাশি ব্যবস্থা বেহাল। সাফাই ঠিক মতো হয় না। ৩৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী শম্পা রায় জানান, রাজারবাঁধ জলাশয়টির আয়তন একশো বিঘা। তাতে শহরের বিভিন্ন এলাকার আবর্জনা মেশে। তার পরে সে সব নালার মাধ্যমে দামোদর নদে মেশে। কিন্তু এই জলাশয়টির সংস্কার না হওয়ায় এক দিকে দামোদরে দূষণ বাড়ছে, অন্য দিকে, অল্প বৃষ্টি হলেই রাজারবাঁধের জলাশয় ছাপিয়ে জল ঢুকছে বাড়িতে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, জলাশয় সংস্কার তো দূর অস্ত্, বরং, সেটির একাংশ ভরাট করে নির্মাণকাজ করার চেষ্টা চলছে। অভিযোগ, একই চিত্র, শহরের নানা এলাকার অন্তত ২০টি জলাশয়ের।

তবে এই শহরের মূল সমস্যা যানজট, এমনটাই মনে করছেন নাগরিকদের একাংশ। ‘রানিগঞ্জ সিটিজেন্স ফোরাম’-এর সভাপতি রামদুলাল বসু জানান, শহরের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তার একাংশ দখল করে অস্থায়ী বাজার বসছে। রয়েছে, ‘টোটো-দৌরাত্ম্য’। কুমারবাজারের অলোক চট্টোপাধ্যায়, হিলবস্তির বিষ্ণু করদের অভিযোগ, “রানিগঞ্জ বাজারের প্রায় সব ক’টি সংযোগকারী রাস্তার পাশে, স্থায়ী দোকানদারদের একাংশ টাকার বিনিময়ে তাঁদের দোকানের সামনে হকারদের বসতে দিচ্ছেন। ফলে, ব্যস্ত সময়ে শহর যানজটে অবরুদ্ধ হয়ে যায়।” তা ছাড়া, দিনভর রাস্তায় গাড়ি দাঁড় করিয়ে পণ্য তোলা-নামানোও চলে এই শহরে। যদিও ‘সাউথ বেঙ্গল চে্ম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ড্রাস্টিজ়’-এর কার্যকরী সভাপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ খেতানের দাবি, “একাধিক বার পুর-প্রশাসনকে বলা হয়েছে, পঞ্জাবি মোড়ের কাছে রানিগঞ্জের প্রধান বাসস্ট্যান্ডটিকে স্থানান্তরিত করা হোক। শহরে চলা টোটো, অটোর রুট বেঁধে দেওয়া হোক। তা ছাড়া, শহরে আরও দু’টি বাজারও তৈরি করতে হবে।”

ঘটনাচক্রে, এই বরোর দায়িত্বে রয়েছেন আসানসোলের পুর-প্রশাসক তথা এ বারেও তৃণমূল প্রার্থী অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দাবি, অধিকাংশ এলাকায় জল-সঙ্কট মিটেছে। যে এলাকায় সমস্যা আছে, সেখানে পুরসভা নিয়মিত জলের ট্যাঙ্কার পাঠায়। পাশাপাশি, সংযোগকারী রাস্তাগুলির সংস্কার চলছে। নিকাশি সমস্যা ও জলাশয় ভরাটের অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “ইতিমধ্যেই ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর এ বিষয়ে একাধিক মামলা দায়ের করেছে। আমরাও বিষয়টিতে নজর রাখি। নিকাশির বিষয়ে বিস্তারিত পরিকল্পনা নেওয়া হবে।” শহরের যানজট সমস্যা মেটাতে বরো অফিসটির স্থানান্তর এবং বণিক সংগঠন-সহ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা হবে বলেও তিনি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন