Madhabdihi

মোমবাতি জ্বেলে রাত কাটছে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে

হাসপাতালের ভিতরে দু’টি ইনর্ভাটার ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’-এর পরে নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আবার বছর খানেক আগে পরিবেশ-সহায়ক জেনারেটর পেলেও তেলের জোগানের জন্য সরকার কোনও টাকা দেয় না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রায়না শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২০ ০০:৩৩
Share:

লোডশেডিং হলে এ ভাবেই রাত কাটাতে হয় মাধবডিহি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র

ইনভার্টার আছে। জেনারেটর আছে। তার পরেও লোডশেডিং হলেই আঁধার নামে রায়না ২ ব্লকের মাধবডিহি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। অন্ধকার কাটাতে চিকিৎসক-নার্সদের ভরসা, মোমবাতি-টর্চ।

Advertisement

বৃহস্পতিবার রাতেও মোমবাতির আলোয় রাত কাটাতে হয়, যা নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন ভর্তি থাকা রোগী ও তাঁদের পরিজনেরা। রায়না ২ ব্লকের মিরেপোতা গ্রামের কৃষ্ণ সাহার দাদু হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর অভিযোগ, “বৃষ্টি শুরু হতেই রাত ১১টা ২০ নাগাদ বিদ্যুৎ চলে যায়। ভোর পর্যন্ত বিদ্যুৎ আসেনি। বেশ কয়েকজন রোগী হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। তাঁরা হাঁসফাঁস করছিলেন। মোমবাতির আলোয় রাত কাটল।’’ তিনি জানান, অন্ধকার থাকায় রোগীর শয্যার পাশেই আশ্রয় নিতে হয়। বেশ কয়েকটি বিছেও চোখে পড়ে, দাবি তাঁর। অন্য রোগীরাও জানান, প্রায় তিন মাস ধরে এই সমস্যা চলছে মাধবডিহি স্বাস্থ্যকেন্দ্র। রাতে শৌচাগার যেতে গেলে বয়স্কদের খুবই সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, অস্ত্রোপচারের সময়ে সবচেয়ে বেশি সঙ্কট দেখা দেয়। এক ডাক্তারের ক্ষোভ, “প্রতি মাসে তিরিশটির মতো প্রসব হয়। প্রায়ই লোডশেডিং হয়। তখন এমার্জেন্সি আলো ব্যবহার করে প্রসব করাতে হয় অথবা অস্ত্রোপচার করতে হয়। এ ভাবে ঝুঁকি নেওয়া কি সম্ভব?” রাতবিরেতে জরুরি রোগী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এলে চিকিৎসক বা নার্সদের মোমবাতির আলোয় কিংবা টর্চের আলোয় চিকিৎসা করতে হয়।

Advertisement

তাঁদের দাবি, জরুরি বিভাগে ‘লকডাউন’ চলাকালীনও প্রতিদিন গড়ে ১৫০ জন রোগী চিকিৎসার জন্য এসেছেন। লোডশেডিং-এ তাঁদের চিকিৎসা করতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠেছে ডাক্তারদের। আবার করোনাভাইরাসের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে এই হাসপাতালে। এক স্বাস্থ্যকর্মীর কথায়, “পিপিই পরে নমুনা সংগ্রহ করতে হচ্ছে। লোডশেডিং হয়ে গেলে আমরাই অসুস্থ হয়ে পড়ছি।’’

স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালের ভিতরে দু’টি ইনর্ভাটার রয়েছে। তবে ঘূর্ণিঝড় ‘আমপান’-এর পরে সেগুলি নষ্ট হয়ে গিয়েছে। যাতায়াতের সমস্যা থাকায় ইনভার্টারগুলি সারাতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ। আবার বছর খানেক আগে পরিবেশ-সহায়ক জেনারেটর পেলেও তেলের জোগানের জন্য সরকার কোনও টাকা দেয় না। ফলে, সেটিও বন্ধ। এই সমস্যা চলতে থাকলে যে কোনও দিন স্থানীয় মানুষজনের ক্ষোভের মুখে পড়তে হবে বলে মনে করছেন ডাক্তার, নার্স থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ।

জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক (সিএমওএইচ) প্রণব রায় বলেন, “রোগী পরিষেবা বিঘ্নিত করা যাবে না। মাধবডিহিতে ককী হয়েছে খোঁজ নিচ্ছি।’’ ব্লকের মেডিক্যাল অফিসার (বিএমওএইচ) সঞ্জয় গুহ বলেন, “সমস্যার সমাধান করা নিয়ে বিডিওর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন