কয়েন-গুজবে নাকাল ক্রেতা

আসানসোলের রাহা লেন বাসস্ট্যান্ডে এক দোকানে জিনিস কিনে পাঁচটি এক টাকার কয়েন দিয়েছিলেন ক্রেতা। দোকানদার দাবি করলেন, ‘‘এক ও দু’টাকার কয়েন বন্ধ করে দিয়েছে সরকার, জানেন না!’’ শুনে তাজ্জব ক্রেতা। তিনি জানালেন, এ সব একেবারেই গুজব।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৭ ০১:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

দৃশ্য ১: কুলটি ডাকঘরের রেজিস্ট্রি কাউন্টারে মূল্য বাবদ এক ও দু’টাকার কয়েন মিলিয়ে ১২ টাকা দিয়েছিলেন এক গ্রাহক। দেখেই চেঁচামেচি জুড়লেন কর্তব্যরত কর্মী। সাফ বললেন, ‘‘কয়েন নেওয়া হবে না। বারণ আছে। নোট দিন।’’ পাল্টা তর্ক জুড়ে গ্রাহকের দাবি, কয়েন নিতেই হবে। দু’জনের বাদানুবাদের মাঝে হাজির হলেন পোস্টমাস্টার সজল মাজি। তিনিও বলে দিলেন, ‘‘কয়েন নিতে পারব না। ব্যাঙ্ক জমা নিচ্ছে না।’’ কিন্তু গ্রাহকরাও মানতে নারাজ। শেষে চাপে পড়ে কয়েন নিলেন ডাকঘর কর্তৃপক্ষ।

Advertisement

দৃশ্য ২: আসানসোলের রাহা লেন বাসস্ট্যান্ডে এক দোকানে জিনিস কিনে পাঁচটি এক টাকার কয়েন দিয়েছিলেন ক্রেতা। দোকানদার দাবি করলেন, ‘‘এক ও দু’টাকার কয়েন বন্ধ করে দিয়েছে সরকার, জানেন না!’’ শুনে তাজ্জব ক্রেতা। তিনি জানালেন, এ সব একেবারেই গুজব। বচসা বেধে গেল দু’পক্ষে। শেষে ছুটে এসে মেটায় পুলিশ।

কয়েক দিন ধরেই আসানসোল শিল্পাঞ্চলের বাজার, দোকান, এমনকী কিছু সরকারি বিভাগেও কয়েন নিয়ে বিভ্রাট চলছে। শহরবাসীর অভিযোগ, মাছ, আনাজ, মুদির দোকান থেকে কিছু ব্যাঙ্ক, ডাকঘরও কয়েন নিতে চাইছে না। পকেট ভর্তি কয়েন নিয়ে ফাঁপরে পড়ছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের প্রশ্ন, সত্যিই কি এক ও দু’টাকার কয়েন নিষিদ্ধ করেছে সরকার? আসানসোলের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রলয় রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘এই রকম কোনও সরকারি নির্দেশিকা আসেনি। কয়েন নিয়ে বিভ্রাটের অভিযোগ প্রশাসনের কাছেও এসেছে।’’

Advertisement

কুলটি ডাকঘরে কয়েন না নেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে আসানসোলের মুখ্য ডাকঘর আধিকারিক গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘আমরা এমন কোনও নির্দেশিকা উপ-ডাকঘরগুলির কাছে পাঠাইনি। গ্রাহকদের কাছে কয়েন নেওয়া যেতেই পারে। ফিরিয়ে দেওয়া ঠিক নয়।’’ তবে তাঁর সংযোজন, কোনও গ্রাহক কয়েক হাজার টাকার কয়েন নিয়ে এলে নেওয়া মুশকিল। কারণ এত কয়েন ব্যাঙ্কও জমা নিতে চাইছে না।

শহরবাসীর অনেকের অভিযোগ, কয়েন বিভ্রাটের সুযোগে এক দল লোক কালোবাজারির কারবার ফেঁদে বসেছে। ব্যবসায়ী বা সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তারা শতকরা তিরিশ টাকা কম দিয়ে কয়েন নিয়ে নিচ্ছে। গুজবের জেরে অনেক ক্রেতাও দোকানদারদের কাছ থেকে কয়েন নেওয়া বন্ধ করেছেন। ফলে, সমস্যা তৈরি হচ্ছে দু’তরফেই। এক সংবাদপত্র বিক্রেতা বলেন, ‘‘খুচরো ফেরত দিতে হলে এক ও দু’টাকার কয়েনই তো ভরসা। ক্রেতারা তা নিতে চাইছে না। তাই বিক্রিও কমছে।’’ অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রলয়বাবুর আশ্বাস, বিভ্রাট বন্ধ করতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন