উদ্ধার হওয়া মোটরবাইক। অণ্ডাল থানায়। নিজস্ব চিত্র
দুই বোনকে ঘরে বন্দি করে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনায় অভিযুক্তের খোঁজ মেলেনি রূপনারায়ণপুরে। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চলছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। খোঁজ মিললেই গোটা ঘটনা পরিষ্কার হবে বলে মনে করছেন কমিশনারেটের আধিকারিকেরা।
সালানপুরের রূপনারায়ণপুরের রূপনগর এলাকায় একটি বাড়ি থেকে সোমবার সন্ধ্যায় অসুস্থ অবস্থায় চল্লিশোর্ধ্ব দুই মহিলাকে উদ্ধার করেন প্রতিবেশীরা। ঘটনাস্থলে পৌঁছয় রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির পুলিশও। ওই মহিলাদের পিঠাইকেয়ারি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠানো হয়। প্রতিবেশীরা পুলিশকে জানান, ওই দুই মহিলার সঙ্গে তাঁদের এক ভাই এই বাড়িতে থাকেন। মহিলাদের উদ্ধারের সময়ে সেই ভাই বাড়িতে ছিলেন না। দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করা ছিল।
মঙ্গলবার সারা দিন পুলিশ ও প্রতিবেশীরা নিঁখোজের সন্ধান করেছেন। কিন্তু কোনও হদিস মেলেনি বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘পুলিশ নিখোঁজের সন্ধান করছে।’’ মঙ্গলবার সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে প্রতিবেশীরা ওই বাড়ির আশপাশে ভিড় জমিয়েছেন। আতঙ্কের রেশ রয়েছে দুই মহিলার চোখেমুখে। তাঁদেরই এক জন দীপালি নাগ বলেন, ‘‘কয়েক দিন আগে ভাই আমাদের একটা ট্যাবলেট খেতে দিয়েছিল। আমরা তা খাওয়ার পরেই ঘুমিয়ে পড়ি। সোমবার বিকেলে ঘুম ভেঙে উঠে দেখি, ভাই বাড়িতে নেই। বাড়ির দরজাও বাইরে থেকে বন্ধ।’’ ক’দিন তাঁরা ঘরবন্দি ছিলেন, তা নিশ্চিত ভাবে জানাতে পারেননি দীপালিদেবী।
রূপনগরের যে বাড়িতে তাঁরা ভাড়া রয়েছেন, সেটির মালিক তপন সরকার বলেন, ‘‘সোমবার বিকেলে ঘরের ভিতর থেকে ওঁদের আর্তনাদ শুনতে পাই। অথচ, বাইরে থেকে দরজার কড়ায় তালা ঝুলছিল। কিন্তু ‘লক’ করা ছিল না। সন্দেহ হওয়ায় প্রতিবেশীদের নিয়ে দরজা খুলে ভিতরে ঢুকে জানতে পারি, ওঁরা বন্দি হয়ে রয়েছেন।’’ এর পরেই তাঁরা পুলিশ ডেকে দুই বোনকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
দীপালিদেবী জানিয়েছেন, তাঁরা চার ভাইবোন। বাবা হিন্দুস্তান কেবলসে কর্মরত অবস্থায় মারা যান। মা বাবার চাকরিতে যোগ দেন। সীমান্তপল্লি এলাকায় তাঁদের নিজেদের বাড়ি ছিল। ২০০৩ সালে মা মারা যান। ২০১৩ সালে বাড়ি বিক্রি করে তাঁরা বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন। ভাই তেমন কিছু করেন না। বিভিন্ন জায়গায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থেকেছেন তাঁরা। ইতিমধ্যে তাঁদের বড় দিদি মারা যান। রূপনগরের এই বাড়ি তাঁরা মাস ছয়েক আগে ভাড়া নিয়েছেন।