চলছেই বালি পাচার, আটক ট্রাক্টর

শাসনের নির্দেশ এই নদী থেকে বালি তোলাই যাবে না। অথচ, নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কুনুর নদী থেকে চলছে দেদার বালি তোলা। এই খবর পেয়ে রবিবার সকালে মহকুমাশাসকের (দুর্গাপুর) নেতৃত্বে কাঁকসার দোমড়ায় ওই নদীর পাড়ে আচমকা অভিযান চালাল পুলিশ-প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০১৭ ০৫:৩০
Share:

প্রশাসনের অভিযান। নিজস্ব চিত্র

প্রশাসনের নির্দেশ এই নদী থেকে বালি তোলাই যাবে না। অথচ, নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কুনুর নদী থেকে চলছে দেদার বালি তোলা। এই খবর পেয়ে রবিবার সকালে মহকুমাশাসকের (দুর্গাপুর) নেতৃত্বে কাঁকসার দোমড়ায় ওই নদীর পাড়ে আচমকা অভিযান চালাল পুলিশ-প্রশাসন। আটক করা হয়েছে চারটি বালির ট্রাক্টর। অভিযান চালানো হয় কাঁকসার সাতকাহনিয়ায় অজয়ের বালিঘাটেও। সেখানেও বেশ কিছু বালিবোঝাই ট্রাক্টর ও গাড়ি আটক করেছে প্রশাসন।

Advertisement

তবে বালির গাড়ি, ট্রাক্টর আটক করা হলেও চালক ও অন্যান্য কর্মীরা প্রশাসনের কর্তাদের দেখেই চম্পট দেন বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিনের অভিযানে ছিলেন মহকুমাশাসক (দুর্গাপুর) শঙ্খ সাঁতরা, কাঁকসা থানার পুলিশ, বিডিও, মহকুমা পরিবহণ দফতর এবং মহকুমা ভূমি ও ভূমি রাজস্ব দফতরের কর্তারা।

দোমড়া এলাকায় পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কের তলা দিয়ে বয়ে গিয়েছে কুনুর নদী। দোমড়ায় নদীর উপরে সেতু পেরিয়ে ইলামবাজারের দিকে যাওয়ার পথে বাঁ দিকে রয়েছে নদীতে নামার রাস্তা। পুলিশ জানায়, বেশ কয়েক মাস ধরেই ওই রাস্তা ধরে নদীগর্ভ থেকে হরদম বালি তোলার অভিযোগ মিলছিল।

Advertisement

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক বাসিন্দার দাবি, ফি দিন গড়ে ৫০ থেকে ৬০ ট্রাক্টর বালি তোলা হচ্ছে কুনুর থেকে। অথচ মহকুমাশাসক শঙ্খবাবু বলেন, ‘‘কুনুর থেকে বালি তোলার কোনও অনুমতিই নেই।’’ তার পরেও কেন এমনটা? — এই প্রশ্ন করলেই বালি ব্যবসায়ীরা জবাব দিত, ‘অনুমতি রয়েছে।’ এমনটাই দাবি করে বাসিন্দাদের একাংশের অভিযোগ, নদীর পাড়ে কয়েক জন যুবক রীতিমতো ঘাঁটি গেড়়ে ট্রাক্টর পিছু দু’শো টাকা করে আদায়ও করতেন।

অবৈধ বালির কারবারের কারণে ইলামবাজার সেতুটিও দুর্বল হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।

এই এলাকায় অভিযান চালিয়ে মহকুমাশাসক কাঁকসার সাতকাহনিয়ার অজয়ের ঘাটে যান। সেখানে তিনটি ট্রাক্টর, একটি ডাম্পার আটক করেন তিনি। এ ছাড়া ‘ওভারলোডিং’-এর জন্য ২৩টি বালিবোঝাই গাড়িও আটক করা হয়েছে। বসুধা ঘাটে বালি তোলার দু’টি যন্ত্র আটক করে মহকুমা প্রশাসন।

প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, এর আগে একাধিকবার কুনুর, অজয় ও দামোদরের নানা এলাকায় এ ধরনের অভিযান চালানো হয়েছে। হয়েছে ধরপাকড়ও। এমনকী মাস ছয়েক আগে অবৈধ বালির কারবারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন বিডিও (কাঁকসা)। তার জন্য তাঁকে ফোনে হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ওই ঘটনায় এক জনকে গ্রেফতারও করে পুলিশ। তার পরেও অবৈধ বালির কারবারে যে লাগাম পড়েনি, দাবি নানা এলাকার বাসিন্দাদের। যদিও শঙ্খবাবু বলেন, ‘‘বালির অবৈধ কারবার রুখতে ধারাবাহিক অভিযান চলবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন