ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি। (ইনসেটে) এই ট্রাকই ‘ধাক্কা’ মারে। নিজস্ব চিত্র
বালিবোঝাই একটি ট্রাককে আটকেছিলেন বিএলএলআরও (দুর্গাপুর-ফরিদপুর)। পিছনেই দাঁড়িয়ে ছিল ভূমিকর্তাদের গাড়ি। কিন্তু ভূমিকর্তারা ট্রাকটি পরীক্ষা করতে যাবেন, এমন সময়ে আচমকা ‘ব্যাকগিয়ার’! ট্রাক ধাক্কা মারল সরকারি গাড়িতেই। অল্পের জন্য রক্ষা পান আধিকারিকেরা। বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার সরপি মোড়ের কাছে ঘটনাটি ঘটে।
পুলিশ সূত্রে জানা জানা যায়, এ দিন বিএলএলআরও (দুর্গাপুর-ফরিদপুর) রাজকুমার দীক্ষিত বালির অবৈধ কারবার রুখতে অভিযানে নামেন। সঙ্গে ছিলেন ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের দু’জন রাজস্ব আধিকারিক ও দু’জন আমিন।
তাঁরা জানান, বালিবোঝাই ট্রাকটিকে দেখে সেটিকে থামানো হয়। তার পরে রাজকুমারবাবুরা তাঁদের গাড়িটি ট্রাকের পিছনে দাঁড় করান। সরকারি কর্তারা ট্রাক পরীক্ষা করার তোড়জোড় করেন। সেই সময়েই ট্রাকটি আচমকা পিছিয়ে এসে তাঁদের গাড়িতে ধাক্কা মারে। তখনই ওই আধিকারিকেরা গাড়ি থেকে নেমে ছুটে যান। তাঁদের দাবি, ওই ট্রাকের চালক ও খালাসি বালি নিয়ে যাওয়ার চালান দেখাতে পারেননি। এর পরে আধিকারিকদের সামনে থেকেই ট্রাক ফেলে চম্পট দেন চালক ও খালাসি।
ঘটনার খবর পেয়ে আসে পুলিশ। পুলিশ জানায়, ট্রাকটিকে আটক করা হয়েছে। চালক ও খালাসির খোঁজে তল্লাশি চলছে। রাজকুমারবাবুর বক্তব্য, ‘‘আচমকা বালির ট্রাকটি ‘ব্যাকগিয়ারে’ এসে আমাদের গাড়িটিকে ধাক্কা মারে। কোনও রকমে প্রাণে বেঁচেছি আমরা।’’
ঘটনার কথা চাউর হতেই এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, তৃণমূলের এক ‘হেভিওয়েট’ নেতার এক অনুগামী গত প্রায় ছ’মাস ধরে অজয়ে দু’টি বেআইনি বালির ঘাট চালাচ্ছেন। এই ট্রাকটিও ওই ঘাট থেকেই বালি নিয়ে তা ‘পাচার’ করছিল। শাসকদলের ওই নেতার কারণেই পুলিশও বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ করে না বলে অভিযোগ। যদিও তৃণমূল নেতা তথা জেলা পরিষদের সদস্য সুজিত মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলের কেউ বালির অবৈধ কারবারে জড়িত নন।’’
ঘটনাচক্রে সম্প্রতি দুর্গাপুরের শ্যামপুরে রাস্তা বাঁচাতে বালির গাড়ি আটকাতে দেখা যায় দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তিকে। সেই সময়ে তিনিও জানিয়েছিলেন, অভিযান চালানোর সময়ে কোনও পুলিশকর্মী নজরে পড়েনি। তবে কয়েক জন সিভিক ভলান্টিয়ারকে দেখা গিয়েছিল।
যদিও আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, তাঁরা বালির অবৈধ কারবারের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চালাচ্ছেন।