শুধু সচেতনতা বাড়ানো নয়, স্কুল বা সরকারি দফতরে স্যানিটারি ন্যাপকিন ‘ভেন্ডিং মেশিন’ এবং বিজ্ঞানসম্মত ভাবে তা পোড়ানোর ‘ইনসিনেরেটর’ যন্ত্র বসাতে বলছে কেন্দ্র। কিন্তু বেশির ভাগ জায়গাতেই এখনও বসেনি তা। আবার হাতে গোনা যে ক’টি জায়গায় আছে সেখানেও দেখভালের অভাবে মরচে পড়েছে যন্ত্রে।
কাটোয়া শহরের তিনটি বালিকা বিদ্যালয় ঘুরে দেখা যায়, ২০০৮-০৯ অর্থবর্ষে শৌচাগার সংস্কার বাবদ বরাদ্দ টাকা দিয়ে ব্যবহৃত স্যানিটারি ন্যাপকিন পুড়িয়ে ফেলার যন্ত্র কেনা হয়েছে। তার মধ্যে কাটোয়া বালিকা বিদ্যালয়ে ওই যন্ত্র ব্যবহার হলেও কাশীশ্বরী ও ডিডিসি গার্লসে তাতে মরচে ধরেছে। কাশীশ্বরী উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মাধবী দাসের অবশ্য দাবি, সর্বশিক্ষা মিশন থেকে টাকা না আসায় ন্যাপকিন ভেন্ডিং মেশিন বসানো যায়নি। তবে ছাত্রীদের প্রয়োজনের কথা ভেবে স্কুল তহবিলের টাকাতেই কিছু ন্যাপকিন রাখেন তাঁরা। আবার মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার সময় যেহেতু একটি স্কুলে আশপাশের ২-৩টি বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা পরীক্ষা দেয়, তখন আরও বেশি ব্যবস্থা রাখা হয় বলে দাবি কাটোয়া বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা সোমা দাস রায়ের।
একই হাল পুরসভা, মহকুমাশাসকের দফতরে। মহকুমাশাসকের দফতরের কর্মী করবী রায়, কাটোয়া আদালতের কর্মী রেশমা খাতুন, তপতী মণ্ডলদের কথায়, ‘‘ব্যাগে ন্যাপকিন নিয়ে ঘুরতে হয়। কখনও না থাকলে সমস্যায় পড়ি। ভেন্ডিং মেশিন থাকলে সুবিধা হতো।’’ কাটোয়া হাসপাতালের নার্স রিজিয়া সুলতানারও ক্ষোভ, ‘‘রোগী তো দূর, নার্স ও কর্মীদের ব্যবহারের জন্যও ভেন্ডিং মেশিন নেই।’’
স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ তথা অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক কবিতা শাসমল বলেন, ‘‘ব্যবহৃত ন্যাপকিন রাস্তায় ফেললে অনেক সময় নর্দমার মুখ বন্ধ হয়ে যায়। খোলা জায়গায় ফেললে ব্যকটেরিয়া বাসা বাঁধে।’’ তবে সরকারি কার্যালয় বা হাসপাতালে ভেন্ডিং মেশিন বা ইনসিনারেটর মেশিন লাগানোর নির্দেশিকা এখনও আসেনি বলেও তাঁর দাবি। সর্বশিক্ষা মিশনের জেলা প্রকল্প আধিকারিক শারদ্যুতি চৌধুরীও জানান, থাকলে ভাল কিন্তু স্কুলের ক্ষেত্রে মেশিন বাধ্যতামূলক এমন নির্দেশিকা নেই।