হেলমেট সচেতনতায় উদ্যোগ। নিজস্ব চিত্র।
বছরের প্রথম দিন কোগ্রামে উজানী মাতার মন্দিরে সপরিবার পুজো দিতে যাচ্ছিলেন কাটোয়ার সুবীর মণ্ডল। মঙ্গলকোট থানার সামনে পথ আটকায় জনা চারেক উর্দিধারী। সুবীরবাবুর ছোট ছেলের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় ফুল, রঙিন কাগজে মোড়া চকোলেট। প্রথমে বুঝতে না পারলেও পরে তিনি জানতে পারেন হেলমেট ছাড়া যাতায়াতকারীদের সচেতন করতেই বছরের প্রথম দিন এমন গাঁধীগিরি করছে পুলিশ। বিব্রত সুবীরবাবু বলেন, ‘‘নাহ, হেলমেট না পড়ে আর বেরোবো না।’’
একেই শীতের শুরু, তার উপর নতুন বছর। ফলে রবিবার দিনভরই মঙ্গলকোটের কাছেপিঠে ক্ষীরগ্রামের যোগাদ্যা মন্দির বা কোগ্রাম, কিংবা অজয়ের পারে বনভোজনে ভিড় ছিল দেখার মতো। বাদশাহী সড়ক দিয়েই যাতায়াত ছিল বেশির ভাগ পিকনিকের গাড়ি, মোটরবাইকের। ফলরে সকাল থেকেই রাস্তায় নেমে পড়েন জনা আটেক পুলিশকর্মী। কখনও হাতজোড় করে, কখনও পিঠ চাপড়ে মোটরবাইক আরোহীদের হেলমেটের প্রয়োজনীয়তা বোঝান তাঁরা। ওসি প্রসেনজিৎ সাহার কথায়, ‘‘এসপি সাহেব এ ভাবে সচেতনতা প্রসারের উপর জোর দেন। ওঁর নির্দেশেই এই উদ্যোগ।’’
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গত বছর থেকেই কড়াকড়ি চলেছিল হেলমেট ব্যবহারে। পেট্রোল পাম্পগুলি মাথা ফাঁকা দেখলে তেলও দিচ্ছিল না। তবে মাসখানেক যেতেই পরিস্থিতি ফের যে কে সেই। মাঝেমধ্যে নজরদারি চললেও শহরের মধ্যে বহু জায়গাতেই চোখে পড়ে হেলমেটহীন বাইকচালক।
পুলিশের দাবি, এ দিন দুপুর পর্যন্ত জনা চল্লিশেক মোটরবাইক আরোহীকে আটকে প্রচার চালান কনস্টেবল দেবনারায়ণ পান্ডা, প্রসেনজিৎ ঘোষ, এসআই গণেশ সেনরা। এসডিপিও শচিন মাঁকড় বলেন, ‘‘পাম্পগুলোতে হেলমেট ছাড়া পেট্রোল না দেওয়ার নির্দেশিকা অনেকদিন ধরেই চলছে। তাতেও সওয়ারিরা সচেতন হচ্ছেন কই! তাই এভাবে রাস্তায় নেমে বোঝানো!’’
আর চকোলেট হাতে সলজ্জ সওয়ারিদের দাবি, ‘‘পুলিশের অন্যরকম ভূমিকায় প্রথমে অবাক হয়েছিলাম। তবে এ বার থেকে হেলমেট নেব।’’