ডাক্তারের অভাবে অসুবিধা পশুপালনে, নেই প্রাণিবন্ধু

এক দিকে প্রাণিবন্ধুর আকাল। অন্য দিকে আবার পর্যাপ্ত প্রাণী চিকিৎসক নেই। এর ফলে বর্ধমান জেলা জুড়েই সমস্যা হচ্ছে প্রাণী প্রতিপালনে। বিপাকে পড়ছেন গ্রামের পশুপালকেরা। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথের অবশ্য আশ্বাস, শীঘ্রই শূন্যপদে নিয়োগ হবে।

Advertisement

সুব্রত সীট

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৩ জুলাই ২০১৫ ০১:৩৭
Share:

এক দিকে প্রাণিবন্ধুর আকাল। অন্য দিকে আবার পর্যাপ্ত প্রাণী চিকিৎসক নেই। এর ফলে বর্ধমান জেলা জুড়েই সমস্যা হচ্ছে প্রাণী প্রতিপালনে। বিপাকে পড়ছেন গ্রামের পশুপালকেরা। প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের প্রতিমন্ত্রী স্বপন দেবনাথের অবশ্য আশ্বাস, শীঘ্রই শূন্যপদে নিয়োগ হবে।

Advertisement

হাঁস, মুরগি, গরু, ছাগল প্রতিপালনই মূল জীবিকা গ্রামাঞ্চলের অনেকের। অনেকে আবার বাড়তি আয়ের জন্যও পশুপালন করেন। কিন্তু এই সব প্রাণীর নিয়মিত পরিচর্যা, সময়ে টীকাকরণ, অসুস্থ হলে দ্রুত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা জরুরি। আগে প্রথাগত পদ্ধতিতে পশুপালনের ফলে নানা সমস্যা দেখা দিত। সেই সমস্যার সমাধানে প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর থেকে পশুপালনের আধুনিক পদ্ধতির প্রসারে উদ্যোগ হয়েছে। গ্রামবাসীদের পশুপালনে সহযোগিতা করার জন্য সব ব্লকে প্রাণী চিকিৎসক থাকেন। এ ছাড়া পঞ্চায়েত এলাকায় থাকেন প্রাণিবন্ধু। কৃত্রিম প্রজনন, টীকাকরণ, বিমা করানো ইত্যাদি করে থাকেন প্রাণিবন্ধু। কাজেই, বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পশুপালনের জন্য প্রাণী চিকিৎসক এবং প্রাণিবন্ধুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে বলে মনে করেন পশুপালকেরা। কিন্তু জেলা জুড়েই এই দুই পদ অনেক ফাঁকা পড়ে রয়েছে বলে প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে।

“প্রতি পঞ্চায়েতে আটশো পশু পিছু এক জন করে প্রাণিবন্ধু নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
চাপ কমাতে প্রাণিমিত্রা নিয়োগও শুরু হয়েছে।”
—স্বপন দেবনাথ (মন্ত্রী, তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান)

Advertisement

ওই দফতর সূত্রের খবর, দুর্গাপুর, পাণ্ডবেশ্বর, মেমারি ১, বর্ধমান ১, ভাতার-সহ প্রায় ১২টি ব্লকে স্থায়ী প্রাণী চিকিৎসক নেই। অস্থায়ী চিকিৎসক দিয়ে কোনও রকমে কাজ চালানো হচ্ছে। ফলে, সপ্তাহে পাঁচ-ছ’দিনের জায়গায় বাসিন্দারা পরিষেবা পাচ্ছেন গড়ে ২-৩ দিন। বহু পঞ্চায়েতেই পশুপালনের চল আগের থেকে অনেকখানি বেড়েছে। স্বয়ম্ভরতার লক্ষ্যে সরকারি স্তরেও পশুপালনের হার বাড়ানোর উদ্যোগ হয়েছে। কাজ বেড়েছে প্রাণিবন্ধুদের। কিন্তু প্রাণিবন্ধুর সংখ্যা সে ভাবে না বাড়ায় অনেকে অবৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতেই পশুপালনের দিকে ঝুঁকছেন। ফলে, পশুর স্বাস্থ্য ভাল হচ্ছে না। ঠিক সময়ে প্রজনন করানো হচ্ছে না। দুধ-মাংসের পরিমাণ কমছে। সব মিলিয়ে পশুপালন থেকে আয়ও কমছে।

প্রাণিসম্পদ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, পশুপালন যাতে কোনও ভাবে ব্যাহত না হয় সে জন্য প্রাণিবন্ধু নিয়োগের প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। বর্তমান নিয়মে সাধারণত গড়ে এক হাজার প্রজননক্ষম গরু-মহিষের দায়িত্বে থাকেন এক জন প্রাণিবন্ধু। ওই দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী স্বপনবাবু জানান, প্রতি পঞ্চায়েতে আটশো পশু পিছু এক জন করে প্রাণিবন্ধু নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া প্রাণিবন্ধুর কাজের চাপ কমাতে স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের থেকে পঞ্চায়েত পিছু দু’জন করে প্রাণিমিত্রা নিয়োগের প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। তাঁরা ছোট প্রাণি এবং হাঁস-মুরগির টীকাকরণের কাজ করবেন। এর ফলে সব ধরনের পশুর জন্যই প্রয়োজনীয় পরিষেবা পাবেন গ্রামবাসীরা। প্রাণী চিকিৎসকের শূন্যপদেও দ্রুত নিয়োগের আশ্বাস দিয়েছেন মন্ত্রী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন