পিলসোঁয়ায় ভাঙা ছাদের নীচেই পড়ছে খুদেরা

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঞ্চাশ আগে তৈরি হওয়া ত্রাণ শিবিরের পরিকাঠামোর উপর তৈরি হয় এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন। স্কুলের দোতলায় রয়েছে চারটি শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষকদের জন্য একটি বসার ঘর।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:১০
Share:

এমনই অবস্থা ক্লাসঘরের। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

দেওয়ালে ফাটল, মাঝেমধ্যেই জল চুঁইয়ে পড়ে ছাদ দিয়ে, বারবার শর্ট সার্কিটও হয়। তার মধ্যেই লেখাপড়া করে মঙ্গলকোটের পিলসোঁয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা। অভিভাবক, শিক্ষকদের আশঙ্কা, যে কোনও দিন বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। ভবন সংস্কারের জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানিয়েও লাভ হয়নি বলে তাঁদের দাবি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর পঞ্চাশ আগে তৈরি হওয়া ত্রাণ শিবিরের পরিকাঠামোর উপর তৈরি হয় এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন। স্কুলের দোতলায় রয়েছে চারটি শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষকদের জন্য একটি বসার ঘর। নিচের তলায় রয়েছে বড় হলঘর। সেখানেই পড়ুয়ারা বসে মিড-ডে মিল খায়। পাশে একটি ঘরে হয় রান্না।

পড়ুয়া, অভিভাবকদের অভিযোগ, প্রত্যেক শ্রেণিকক্ষের দেওয়ালে বড় বড় ফাটল তৈরি হয়েছে। ছাদ থেকে মাঝেমধ্যেই খসে পড়ে চাঙর। বৃষ্টি হলে জলও পড়ে। এর আগে শ্রেণিকক্ষে একাধিক বার শর্ট সার্কিটের ঘটনায় বেশ কয়েকটি সিলিং ফ্যান নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলেও তাঁদের দাবি। চতুর্থ শ্রেণির পড়ুয়া ছট্টু শেখ বলে, ‘‘স্কুলের মধ্যে সবসময় ভয় লাগে। কখন মাথার উপর ছাদ ভেঙে পড়বে!’’ আর এক পড়ুয়া আসারুল শেখ বলে, ‘‘বৃষ্টি হলে ক্লাসের মধ্যেই জল পড়ে। বই খাতা সব ভিজে যায়।’’ একই ভয় নিয়ে স্কুলে আসে পলি মুখোপাধ্যায়, মহব্বত শেখ, প্রিয়াঙ্কা মাজি, রানা শেখরাও। অভিভাবক শঙ্কর মাজি, মিঠু মাজিদের দাবি, ‘‘স্কুলের এই অবস্থায় ছেলেমেয়েদের পাঠানোটা খুবই ঝুঁকির। ওদের কোনও ক্ষতি হলে তার দায় কে নেবে?’’

Advertisement

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নীলাদ্রি পাল বলেন, ‘‘স্কুলের বর্তমান পরিস্থিতিতে আমি আতঙ্কিত। আপাতত দুটি ঘরে ৭৯ জন পড়ুয়াকে বসিয়ে পঠনপাঠন চালানো হচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, বিষয়টি ব্লক প্রশাসন থেকে শিক্ষা দফতরে জানানো হয়েছে। সরকারি ভাবে বেশ কয়েকবার বিদ্যালয়ে পরিদর্শনও হয়েছে। কিন্তু ওই পর্যন্তই। জানা গিয়েছে, বছর দেড়েক আগে এক সরকারি রিপোর্টে বিদ্যালয়টিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করার সুপারিশ করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

মঙ্গলকোট ১ চক্রের বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্যামল ঘোষের দাবি, ‘‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’ জেলার প্রকল্প আধিকারিক মৌলী সান্যাল মঙ্গলকোটের বিডিও-র কাছ থেকে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। বিডিও (মঙ্গলকোট) মুস্তাক আহমেদের দাবি, ‘‘রিপোর্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন