অন্য দিনের তুলনায় কম ছাত্র হাজির স্কুলে। নিজস্ব চিত্র
শৌচাগারে গুলিতে ছাত্রের মৃত্যুর পর দিন স্কুল খুলল কেতুগ্রামের দধিয়ায়। কিন্তু বুধবার অনুপস্থিত থাকল বেশিরভাগ পড়ুয়া। ফলে, পঠনপাঠনও তেমন হয়নি বলে স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে। এ দিন স্কুলে এসে পড়ুয়াদের সঙ্গে দেখা করেন সহকারী স্কুল পরিদর্শক (কাটোয়া মহকুমা) শেখর মণ্ডল।
মঙ্গলবার কেতুগ্রামের দধিয়া গোপালদাস হাইস্কুলের শৌচাগারে মাথায় গুলির আঘাতে মৃত্যু হয় দশম শ্রেণির ছাত্র কলিম শেখের (১৫)। পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, আত্মঘাতী হয়েছে ওই ছাত্র। ঘটনার পরেই এলাকার নানা সূত্রে পুলিশ জেনেছিল, কলিমের সঙ্গে ওই স্কুলে তার এক সহপাঠী ছাত্রীর প্রণয়ের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটির বাড়ি কাঁচড়া গ্রামে। পুলিশ জানায়, স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সম্প্রতি মেয়েটির অন্যত্র বিয়ে ঠিক হয়েছে খবর পাওয়ার পরে কলিমের সঙ্গে তার গোলমাল চলছিল। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলিমের এক সহপাঠী দাবি করে, ‘‘মেয়েটিকে প্রায়ই আত্মহত্যার হুমকি দিত কলিম।’’
ঘটনার পরে সে দিন স্কুল ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। বুধবার স্কুল খুললেও হাজিরা ছিল খুব কম। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০৪৪ জন পড়ুয়ার মধ্যে এ দিন এসেছিলেন একশো জনেরও কম। দশম শ্রেণির ১৩০ জন পড়ুয়ার মধ্যে মাত্র ১৮ জন হাজির ছিল। ছাত্রের কাছে কী ভাবে পিস্তল এল, সে নিয়ে চিন্তায় পুলিশ ও স্কুল কর্তপক্ষ। মৃতদেহের পাশ থেকে যে ৭ এমএম পিস্তলটি পাওয়া গিয়েছে সেটি বিহারের মুঙ্গেরে তৈরি বলে জেনেছে পুলিশ। কিন্তু কলিমের পরিবারের যা আর্থিক অবস্থা তাতে এই পিস্তল কেনার সামর্থ্য তার ছিল না। পুলিশ সূত্রের খবর, অন্য কাউকে বিক্রি করিয়ে দেওয়ার নাম করে স্থানীয় এক দুষ্কৃতীর কাছ থেকে কলিম পিস্তলটি নিয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। তবে বুধবার বিকেল পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। কোনও ধরপাকড়ও হয়নি।
এ দিন স্কুলে আসেন সহকারী স্কুল পরিদর্শক শেখরবাবু। তিনি অযথা আতঙ্কিত না হয়ে পড়াশোনা করার পরামর্শ দেন পড়ুয়াদের। কোনও ছাত্র আচমকা ক্লাসে ফাঁকি দিতে শুরু করেছে কি না, কাদের সঙ্গে তারা মেলামেশা করছে, এ সব দিকে তিনি শিক্ষকদের খেয়াল রাখার নির্দেশ দেন। প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘ছাত্রদের আতঙ্ক কাটাতে প্রয়োজনে সচেতনতামূলক শিবিরের আয়োজন করব।’’