Bardhaman

পড়ায় ঘাটতি যেন না হয়, ছুটিতেও ক্লাস শিক্ষকের

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়ারাই মূলত ক্লাসে আসছে। ডিসেম্বরে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা একটি বৃত্তি পরীক্ষায় বসবে। সেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

Advertisement

সুপ্রকাশ চৌধুরী

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১১ মে ২০২৩ ০৯:৩৮
Share:

পড়ুয়াদের পড়াচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। নিজস্ব চিত্র

ছুটি কিন্তু ছুটি নয়।

Advertisement

গরমের ছুটি পড়ে গিয়েছে স্কুলে। তার আগে তাপপ্রবাহের কারণে সাত দিন ছুটি ছিল। ছুটির বহর লম্বা হওয়ায় পড়ুয়াদের ক্ষতির সম্ভাবনা নিয়ে উঠে এসেছে নানা মত। তবে সে সবে না ঢুকে পড়ুয়াদের কথা ভেবে ছুটিতেও ক্লাস নিয়ে চলেছেন প্রধান শিক্ষক। অষ্টম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত আগ্রহী পড়ুয়াদের নিয়ে সপ্তাহে দু’দিন করে ক্লাস হচ্ছে খণ্ডঘোষের সরঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ে।

প্রধান শিক্ষক অনুপকুমার মণ্ডল বলেন, ‘‘কোভিড এবং লকডাউন পর্বে পড়ুয়াদের শিক্ষার ঘাটতি ছিল মারাত্মক। সেই ঘাটতির বোঝা এখনও পড়ুয়াদের বইতে হচ্ছে। এর মাঝে প্রবল তাপের কারণে সাত দিন স্কুলে ছুটি ঘোষণা করা হয়। এ মাসের গোড়ায় শুরু হয় গরমের ছুটি। এই পরিস্থিতিতে পড়ুয়াদের শিক্ষা বিস্তারে বাধা যাতে না আসে, তা নিশ্চিত করতেই এই উদ্যোগ।’’ তাঁর দাবি, গ্রামের পিছিয়ে পড়া এলাকা থেকে পড়ুয়ারা এই স্কুলে পড়তে আসে। বেশির ভাগের টিউশন নেই। স্কুলই ভরসা। সেই স্কুল যদি দীর্ঘ দিন বন্ধ থাকে তাহলে ছেলেমেয়েরা অনেক পিছিয়ে পড়বে। সেই কারণেই এই ভাবনা। অন্য কয়েকজন শিক্ষকও এই উদ্যোগে সামিল হতে চেয়েছেন বলে প্রধান শিক্ষকের দাবি।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির পড়ুয়ারাই মূলত ক্লাসে আসছে। ডিসেম্বরে অষ্টম শ্রেণির পড়ুয়ারা একটি বৃত্তি পরীক্ষায় বসবে। সেই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। নবম ও দশম শ্রেণি মিলিয়ে একটি ক্লাস হচ্ছে। সেখানেই ইংরেজি পড়ানো হচ্ছে। পাশাপাশি, কোনও বিষয়ে সমস্যা হলে সেই বিষয়েও সাহায্য করছেন প্রধান শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘‘শিক্ষার পরিবেশ থেকে পড়ুয়ারা যাতে সরে না যায় তাই এই উদ্যোগ। এই ক্লাস চালানোর জন্য একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খোলা হয়েছে। সেই গ্রুপে জানানো হয়, কবে হবে ক্লাস।’’ সপ্তাহে দু’দিন বেলা ১১টা থেকে দেড়টা অবধি ক্লাস চলছে। অষ্টম শ্রেণির জনা কুড়ি এবং নবম, দশমের প্রায় ৪০ জন পড়ুয়া আসছে বিশেষ ক্লাসে।

কৃষ্ণেন্দু মণ্ডল, সাত্ত্বিকা দত্ত, অঙ্গনা যশ, রুপম দত্তের মতো পড়ুয়ারা জানায়, ক্লাস হওয়ায় খুবই উপকার হচ্ছে। পড়াশোনায় যে সব সমস্যা হচ্ছে সবই মিটিয়ে নেওয়া যাচ্ছে। স্যর আগেও ছুটির সময়ে এ ভাবে সাহায্য করেছেন, দাবি তাঁদের।

এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন অভিভাবক থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তারাও। খণ্ডঘোষ (১) সার্কেলের এসআই সুদীপ মালিক বলেন, ‘‘এই ধরনের উদ্যোগ প্রশংসার। ওই স্কুলে অনেক প্রান্তিক পড়ুয়ারা আসে। তাদের যদি উপকার হয়, এর থেকে ভাল আর কিহতে পারে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন