ট্রাক-পুলকার ধাক্কায় জখম ছয় স্কুল পড়ুয়া

মুর্শিদাবাদের ডোমকল, কলকাতার সল্টলেক, বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরের পর ফের পুলকার দুর্ঘটনা। এ বার বর্ধমানের মাধবডিহিতে। শনিবার সকালে একটি ট্রাকের সঙ্গে পুলকারের সংঘর্ষে জখম হলেন চালক এবং ছ’জন খুদে পড়ুয়া।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০১৬ ০১:২২
Share:

মাধবডিহিতে ক্ষতিগ্রস্ত গাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

মুর্শিদাবাদের ডোমকল, কলকাতার সল্টলেক, বর্ধমানের পাণ্ডবেশ্বরের পর ফের পুলকার দুর্ঘটনা। এ বার বর্ধমানের মাধবডিহিতে। শনিবার সকালে একটি ট্রাকের সঙ্গে পুলকারের সংঘর্ষে জখম হলেন চালক এবং ছ’জন খুদে পড়ুয়া।

Advertisement

শনিবার সকাল ১০টা নাগাদ উচালনের কিশলয় বিদ্যাপীঠের নামে একটি বেসরকারি স্কুলের দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণির ছ’জন পড়ুয়াকে নিয়ে পূর্ব চক থেকে স্কুলে আসছিল পুলকারটি। মাধবডিহি থানার সূত্রে জানা গিয়েছে, দিঘিরকোন এলাকায় আরামবাগ-বর্ধমান রোডের উপর বাঁ দিক ধরে একটি ট্রাক ধীর গতিতে আসছিল। উল্টো দিক থেকে আসছিল পুলকারটি। স্কুলের সামনে পুলকারটি ডান দিকে বাঁক নেওয়ার সময় ট্রাকটির সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয় বলে খবর। বাসিন্দারা চালক ও ছ’জন পড়ুয়াকে উদ্ধার করে প্রথমে মাধবডিহি প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। পরে তাঁদের বর্ধমান মেডিক্যালে স্থানান্তরিত করানো হয়। প্রাথমিক চিকিৎসার পর পড়ুয়াদের ছেড়ে দেওয়া হলেও চালক রাজু পাত্র শনিবার রাত পর্যন্ত হাসপাতালেই ভর্তি রয়েছেন।

এই রাস্তাটি বরাবরই দুর্ঘটনাপ্রবণ বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। এই রাস্তার উপরেই সেহারবাজার, বাদুলিয়া মোড়-সহ বেশ কয়েকটি এলাকায় প্রায়শই দুর্ঘটনার খবর আসে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, উচালন, সেহারাবাজার, বাদুলিয়ার মতো বেশ কয়েকটি জায়গায় রাস্তার সম্প্রসারণ করা হয়েছে। কিন্তু এ যাবৎ রাস্তায় যানবাহনের গতি নিয়ন্ত্রণ বা সুষ্ঠু ট্রাফিক ব্যবস্থার জন্য কোনও রকম উদ্যোগ নজরে পড়েনি। জেলা জুড়ে চলা বেআইনি পুলকারগুলির বিরুদ্ধেও কোনও ব্যবস্থাও সে ভাবে করা হয় না বলে জানা গিয়েছে। যদিও প্রশাসনের আশ্বাস, ওই এলাকাগুলিতে দ্রুত ট্রাফিক পুলিশের পোস্ট ও সিগন্যাল বসানো হবে।

Advertisement

পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা যায়, পড়ুয়াদের নিয়ে যাতায়াত করা গাড়িতে বিশেষ রং ও প্রতীক থাকা বাঞ্ছনীয়। কিন্তু এই পুলকারটিতে সেই সব বিধি মানা হয়নি বলে খবর।

বেআইনি পুলকারগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা কী ব্যবস্থা নেওয়া হয় জিজ্ঞেস করা হলে জেলা আঞ্চলিক পরিবহণ আধিকারিক আবরার আলম বলেন, ‘‘জেলা জুড়ে বিভিন্ন বেসরকারি স্কুলগুলিই পুলকারগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা কোনও বেনিয়ম দেখলে ব্লক প্রশাসন ও পুলিশকে ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানায়।’’ যদিও এ যাবৎ জেলা জুড়ে কত সংখ্যক বেআইনি পুলকার চলছে, তার নির্দিষ্ট কোনও হিসেব পরিবহণ দফতরের কাছে নেই বলে খবর। প্রধান শিক্ষক অসিত চট্টোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, ‘‘আমাদের স্কুলে মোট ছ’টা ভাড়ার গাড়ি রয়েছে। লাইসেন্স দেখেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়। তবে নির্দিষ্ট কোনও রং বা প্রতীক থাকার নিয়মটি আমরা জানি না।’’ এ দিন অবশ্য ট্রাকটিকে আটক করেছে পুলিশ। চালক পলাতক।

এই পরিস্থিতিতে হাসপাতাল থেকে বাবা-মা’য়ের হাত ধরে বেরনোর সময়েও আতঙ্কের রেশ কাটেনি মুন্সী আফিযা সুলতানা, শাশ্বতী ঘোষদের মতো পড়ুয়াদের চোখে-মুখে। তাদের বক্তব্য, ‘‘দুর্ঘটনার সময় ভয়ে চোখ বুজে ফেলি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন