আত্মহত্যা না খুন, জোড়া কঙ্কালে ধন্দ

কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘ওড়না দেখেই পরিবারের লোকজন কঙ্কালগুলি নিখোঁজ দুই কিশোরীর বলে শনাক্ত করেছেন। পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিক তদন্তে এই ঘটনা আত্মহত্যা বলেই মনে করা হচ্ছে। কঙ্কালগুলি বর্ধমানে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

সালানপুর শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৮ ০১:৫০
Share:

এই জঙ্গলেই উদ্ধার হয় কঙ্কালগুলি। নিজস্ব চিত্র

খুন না আত্মহত্যা, দুই কিশোরীর অপমৃত্যু নিয়ে চাপান-উতোর তৈরি হয়েছে পরিবার ও পুলিশের মধ্যে। সালানপুরের শিবদাসপুর গ্রামে মাসখানেক ধরে নিখোঁজ ছিল মেয়ে দু’টি। শনিবার বিকেলে গ্রামের অদূরে জঙ্গল থেকে দু’টি কঙ্কাল উদ্ধার হয়। এই ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে সরব হয়েছেন গ্রামবাসীদের একাংশ। পুলিশ যদিও তা মানতে চায়নি।

Advertisement

পরিবার সূত্রে জানা হয়, গত ২৪ এপ্রিল দুপুর ২টো নাগাদ বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি বছর পনেরো-ষোলোর সোনালি রুইদাস ও গঙ্গা রুইদাস। শিবদাসপুর গ্রামে পাশাপাশি বাড়ি তাদের। পর দিন সালানপুর থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন পরিজনেরা। ২৬ এপ্রিল পুলিশের তৎপরতার অভাবের অভিযোগ তুলে পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসীরা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। তবে তার পরেও দুই কিশোরীর কোনও সন্ধান মেলেনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, শনিবার বিকেলে বনবিড্ডি ও শিবদাসপুর গ্রামের মাঝে জঙ্গলে কাঠ কুড়োতে গিয়ে দু’টি নরকঙ্কাল পড়ে থাকতে দেখেন কয়েকজন মহিলা। দেখা যায়, সেখানেই একটি ডুমুর গাছের ডালে দু’টি ওড়না ঝুলছে। খবর পেয়ে গ্রামবাসী ও দুই কিশোরীর পরিজনেরা সেখানে যান। খানিক পরে পুলিশও পৌঁছয়। পুলিশের সামনেই পরিজনেরা ওড়নাগুলি তাঁদের মেয়ের বলে শনাক্ত করেন। কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘ওড়না দেখেই পরিবারের লোকজন কঙ্কালগুলি নিখোঁজ দুই কিশোরীর বলে শনাক্ত করেছেন। পরিবারের লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে প্রাথমিক তদন্তে এই ঘটনা আত্মহত্যা বলেই মনে করা হচ্ছে। কঙ্কালগুলি বর্ধমানে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়েছে।’’

Advertisement

যদিও আত্মহত্যার কথা মানতে চাইছে না মেয়ে দু’টির পরিবার। রবিবার সোনালির মা উষাদেবী ও বাবা শ্যামলবাবু দাবি করেন, ‘‘আমরা বিশ্বাস করি, দুষ্কৃতীরা ওদের খুন করেছে। পুলিশের দোষীদের ধরে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানিয়েছি।’’ গঙ্গার মা মিনিদেবীরও অভিযোগ, ‘‘এটা আত্মহত্যার ঘটনা নয়। ওদের খুনই করা হয়েছে।’’ দুই পরিবারেরই দাবি, ঘটনার দিন তাঁদের বাড়িতে বা পাড়ায় কোনও অশান্তি হয়নি। কী কারণে দু’জন এক সঙ্গে একই জায়গায় গিয়ে আত্মহত্যা করবে, তার কোনও যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন না বলে পরিজনেরা জানান। গ্রামবাসীদের অনেকেরও দাবি, দুষ্কৃতীদের হাতে খুন হয়েছে দুই কিশোরী। তাঁদের অভিযোগ, যখন নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল পুলিশ তখনই তৎপর হলে হয়তো এই ঘটনা এড়ানো যেত।

যদিও এডিসিপি অনমিত্র দাসের আশ্বাস, ঘটনার পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্ত করা হচ্ছে। তবে দুই কিশোরীর পরিবারের তরফে খুনের কোনও লিখিত অভিযোগ করা হয়নি বলে সালানপুর থানা জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন