প্রতীকী ছবি।
রাত বারোটা। থানায় আচমকা এক যুবকের প্রবেশ। কর্তব্যরত পুলিশকর্মীদের বললেন, ‘বাবাকে মারধর করেছি। গিয়ে দেখুন, কী হল। বোধহয় মারা গিয়েছে।’— সোমবার রাত বারোটা নাগাদ এমনই দৃশ্যের সাক্ষী রইল হিরাপুর থানা। পরে পুলিশ ওই বৃদ্ধকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। চিকিৎসকেরা জানিয়ে দেন, মৃত্যু হয়েছে ওই বৃদ্ধের। পুলিশ জানায়, বাবাকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই যুবককে।
পুলিশ জানায়, বার্নপুরের নবঘণ্টি এলাকায় ইস্কোর প্রাক্তন কর্মী মলিন দাস (৬৫) এবং তাঁর ছেলে বুদ্ধদেব থাকতেন। পড়শিদের দাবি, প্রায়শই মদ খাওয়া নিয়ে বচসা হতো বাবা-ছেলের মধ্যে। মলিনবাবুর ভাইপো সুনয়বাবুর অভিযোগ, ওই রাতেও মদ কেনার জন্য বাবার কাছে টাকা চায় বুদ্ধদেব। অভিযোগ, টাকা না পেয়ে মলিনবাবুকে প্রথমে লাঠি দিয়ে মারধর করে বুদ্ধদেব। পরে লাথিও মারে।
এর পরেই বুদ্ধদেব হিরাপুর থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করে বলে পুলিশের দাবি। সুনয়বাবু জানান, রাত একটা নাগাদ পুলিশ এসে তাঁর বাবাকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাড়িতে ঢোকে। সেখানে দেখা যায়, মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন মলিনবাবু। তাঁকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই পরীক্ষার পরে ওই বৃদ্ধকে মৃত বলে জানান চিকিৎসকেরা।
পড়শিদের ও সুনয়বাবুর দাবি, এর আগেও এমন গোলমাল ঘটেছিল বাবা-ছেলের মধ্যে। পেশায় রাজমিস্ত্রি জোগাড়ে বুদ্ধদেব এর আগে গত বছর নভেম্বরে মদ খাওয়ার জন্য টাকা চায় বাবার কাছে। পুলিশের দাবি, সেই সময় টাকা না পেয়ে বাবার পা ভেঙে দেয় ছেলে। ১০ দিন জেল-হাজতে থাকার পরে মায়ের মৃত্যুর কারণে জামিনে ছাড়া পায় বছর ৩৫-এর বুদ্ধদেব। পড়শিদের দাবি, এক বছর আগে বাড়িতে নিত্য অশান্তির কারণে স্ত্রী’ও বুদ্ধদেবকে ছেড়ে চলে যান।
পুলিশ জানায়, বুদ্ধদেবের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে।