agriculture

জীবাণুমুক্ত বীজ আলু চাষে বিশেষ ‘নেট হাউস’

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আলু চাষে বেশির ভাগ রোগই বীজ বাহিত। গত এক দশক ধরে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। চড়া দামে বীজ কিনেও বহু চাষি প্রত্যাশিত ফলন পাচ্ছেন না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কালনা শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৩৩
Share:

এই ভাবে চলছে বীজ আলু চাষ। নিজস্ব চিত্র

ক্ষতিকারক বিভিন্ন পোকার হামলার কারণে খোলা মাঠে জীবাণুমুক্ত আলু বীজ তৈরি করা কঠিন। ফলে বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি নেট হাউসে উন্নত মানের জীবাণুমুক্ত আলুবীজ তৈরি করতে উদ্যোগী হয়েছে কালনা মহকুমা কৃষি দফতর। ইতিমধ্যে সেই কাজ অনেকটা এগিয়েও গিয়েছে।

Advertisement

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আলু চাষে বেশির ভাগ রোগই বীজ বাহিত। গত এক দশক ধরে বিভিন্ন রোগের প্রকোপ ক্রমশ বাড়ছে। চড়া দামে বীজ কিনেও বহু চাষি প্রত্যাশিত ফলন পাচ্ছেন না। আলুতে ভাল ফলন পেতে জীবাণুমুক্ত বীজ অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। কৃষি কর্তাদের দাবি, খোলা মাঠে আলু বীজ তৈরির সময়ে জাবপোকা, সাদা মাছি, ছোট ছোট আরও পোকা ক্ষতিকারক ভাইরাসের বাহক হিসাবে কাজ করে। ফলে খোলা মাঠে জীবাণুমুক্ত বীজ তৈরি করা সম্ভব হয় না। কালনা মহকুমা কৃষি খামারে গিয়ে দেখা যায়, জীবাণুমুক্ত বীজ তৈরির জন্য তৈরি করা হয়েছে দুটি আলাদা আলাদা নেট হাউস। একটিতে লোহার দন্ডে নেট টাঙিয়ে, বিশেষ সেচ ব্যবস্থা গড়ে আলুবীজ চাষ করা হয়েছে। অন্যটিতে রয়েছে বাঁশের পরিকাঠামোর চারিপাশে নেট। দুটি জায়গাতেই আলু গাছ রয়েছে সতেজ। কৃষি আধিকারিকেরা জানান, বিশেষ এই জাল ভেদ করে অতি ক্ষুদ্রক পোকাও ঢুকতে পারে না। অথচ পর্যাপ্ত আলো, বাতাস সহজেই পৌঁছয়। দুটি পরিকাঠামো তৈরি করতে জমি লেগেছে হাজার বর্গমিটার।

জানা গিয়েছে, দুটি জায়গাতেই কুফরি হেমালিনী প্রজাতির বীজ চাষ করা হয়েছে। এই ধরনের চাষের জন্য রোগবিহীন টিস্যু কালচার করা বীজ আনা হয় পরীক্ষাগার থেকে। মহকুমা কৃষি আধিকারিক পার্থ ঘোষ বলেন, ‘‘আশা করা যায় দুটি নেট হাউসে ভাল ফলন মিলবে। ৯ ডিসেম্বর চাষ করা বীজ তোলা হবে ৮০ দিন পরে। হিমঘরে সংরক্ষণের পরে পরের বছর ওই বীজ তুলে দেওয়া হবে কৃষি খামার এবং প্রগতিশীল আলু চাষিদের হাতে।’’ জীবাণুমুক্ত বীজ আলু চাষের জন্য বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছেন কালনা মহকুমার সহ কৃষি অধিকর্তা ভাস্কর দত্ত। মঙ্গলবার তিনি জানান, এই ধরনের চাষের শুরুতে জমির মাটি শোধনও বেশ জরুরি। মাটি শোধন করতে হয় চুন অথবা ডলোমাইট দিয়ে। নেট হাউসে গাছেদের দূরত্ব রাখতে হয় তিন ইঞ্চি। জীবাণুমুক্ত বীজ তৈরির জন্য এক হেক্টর জমিতে দু’টন টিসু কালচার করা বীজ আলু প্রয়োজন। সংখ্যায় যা দাঁড়ায় প্রায় ৭৫ হাজার। আধিকারিকদের দাবি, কালনার পাশাপাশি মেমারি, জামালপুর এবং জেলার বেশ কিছু প্রগতিশীল চাষি নেট হাউস পদ্ধতিতে জীবাণুমুক্ত আলু বীজ তৈরির কাজ শুরু করেছেন।

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন