Burdwanb University

অনিয়ম কোন খাতে, খুঁজতে এল বিশেষ দল

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন বেলা আড়াইটে নাগাদ তারাবাগের অতিথিশালা থেকে ওই কমিটি সুবর্ণজয়ন্তী ভবনে (গোল্ডেন জুবিলি) যায়।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৬ মার্চ ২০২৪ ০৫:৪২
Share:

—প্রতীকী চিত্র।

গত কয়েক দিন ধরে সল্টলেকে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্প অফিসে বসে গত ১০ বছরের অডিট রিপোর্ট খুঁটিয়ে দেখার পরে, মঙ্গলবার সরেজমিন তদন্তে এল বিশেষ তদন্তকারী দল। এ দিন ওই কমিটির চেয়ারম্যান, বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কমার্সের শিক্ষক অরিন্দম গুপ্ত ও হাবড়ার শ্রীচৈতন্য মহাবিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যক্ষ চিন্তাহরণ সেনগুপ্ত দু’টি ব্যাঙ্কের ম্যানেজার, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিনান্স অফিসার (এফও) সৌগত চক্রবর্তী ও অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য গৌতম চন্দ্রের সঙ্গে দেখা করেন। প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে সরেজমিন পরিদর্শন, তথ্য সংগ্রহের পরে তারাবাগের অতিথিশালায় যান তাঁরা। আজ, বুধবারও অডিট কমিটি বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে গত ১০ বছরে কোন কোন খাতে অনিয়ম হয়েছে তার খোঁজ চালাবে।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন বেলা আড়াইটে নাগাদ তারাবাগের অতিথিশালা থেকে ওই কমিটি সুবর্ণজয়ন্তী ভবনে (গোল্ডেন জুবিলি) যায়। সেখানে এফও-র সঙ্গে প্রাথমিক কথা বলে বেশ কিছু তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা। সেখান থেকে প্রথমে যান বড় বাজারের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে। ওই ব্যাঙ্কের ম্যানেজারই জাল সই ও জাল নথির বিষয়টি সামনে নিয়ে এসেছিলেন। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী ভক্ত মণ্ডল ও এনামুল শেখের নামে বর্ধমান থানায় এফআইআরও করেছিলেন। এনামুল এখন জেল হেফাজতে রয়েছেন। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা যায়, অডিট কমিটি জানতে চেয়েছিল, কী ভাবে তাদের সন্দেহ হল? ম্যানেজার তাদের জানান, প্রথমত সেভিংস অ্যাকাউন্টের বদলে অন্য একটি সংস্থার অ্যাকাউন্টে স্থায়ী আমানত ভাঙিয়ে টাকা দিতে বলা হয়। দ্বিতীয়ত, ভক্ত মণ্ডল টাকা দেওয়ার জন্য ‘চাপ’ দিচ্ছিলেন। সে জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে বিষয়টি জানতে চান তাঁরা। তখনই জানা যায় বিষয়টি।

একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ‘পেমেন্ট অ্যাডভাইস’ নিয়ে সন্দেহ হওয়ায় টাকা পাঠানো আটকে দিল, আর একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের জেলখানা মোড়ের শাখা ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা তিন ধাপে একজনের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দিল কী ভাবে? ওই শাখার ব্যাঙ্ক ম্যানেজারের বদল হয়েছে। ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা যায়, অডিট কমিটির কাছে নতুন ম্যানেজার জানান, তাঁরা নিয়ম মেনে, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে স্থায়ী আমানত ভেঙে টাকা দিয়েছেন। প্রতারণা বা দুর্নীতি কিছু হয়ে থাকলে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে হয়েছে। এফও এ দিন অডিটি কমিটির কাছে কী ভাবে, কোন কোন স্তরে ব্যাঙ্কের গাফিলতি হয়েছে তার তথ্য তুলে দেন। এমনকী ব্যাঙ্ক ই-মেল করে সেভিংস অ্যাকাউন্ট করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে বলে। তার পরেও কিসের তাড়ায় স্থায়ী আমানত ভেঙে অন্য জনের অ্যাকাউন্টে টাকা দিল ব্যাঙ্ক, সে প্রশ্নও কমিটির কাছে রাখা হয়েছে।

Advertisement

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, বড় বাজারের শাখার ঘটনা নজরে আসার পরেই রেজিস্ট্রার, এফওকে নিয়ে একটি গঠন করেছিলেন উপাচার্য। প্রশ্ন ওঠায় কমিটি ভেঙে দেন তিনি। তার আগে ওই কমিটি উপাচার্যকে রিপোর্ট দিয়ে জানায়, ১০ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তী অডিট হয়নি। এর পরেই উপাচার্য ১০ বছর ধরে বন্ধ থাকা অন্তর্বর্তী অডিট করাতে ছ’জনের একটি বিশেষ কমিটি গঠন করে দেন। কমিটির চেয়ারম্যান কোনও কথা বলতে রাজি হননি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন