সমীর সাহা। নিজস্ব চিত্র।
সক্রিয় ‘না থেকে’ প্রশাসক, ধন্দ দলের একাংশেরনতুন প্রশাসক হিসেবে কাটোয়া পুরসভার দায়িত্বভার নিলেন সমীর সাহা। শুক্রবার বিদায়ী প্রশাসক তথা কাটোয়ার বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় তাঁকে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন। শুভেচ্ছা জানান পুরসভার বিদায়ী কাউন্সিলর থেকে পুরকর্মীরা। তবে গত পাঁচ বছর সক্রিয় কোনও ভূমিকায় না থেকেও সমীরবাবু এই পদে মনোনীত হওয়া নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে দলের অন্দরে। বিরোধীদেরও দাবি, পুরসভা এলাকাকে ভাল ভাবে চেনেন না নতুন প্রশাসক। রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ হওয়ার কারণেই তাঁকে ওই পদ দেওয়া হয়েছে বলেও দাবি তাঁদের।
সমীরবাবুর অবশ্য দাবি, ‘‘সকলের মত প্রকাশ করার গণতান্ত্রিক অধিকার রয়েছে। আমি যা দায়িত্ব পেয়েছি, তা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করব। নাগরিক পরিষেবার মান ধরে রাখাই আমার একমাত্র লক্ষ্য হবে।’’
কাটোয়া শহরের চার নম্বর ওয়ার্ডের সার্কাস ময়দানের বাসিন্দা সমীরবাবু। দাঁইহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক ছিলেন তিনি। বছর চারেক আগে অবসর গ্রহণ করেন। কাটোয়ার রাজনীতিতে বরাবরই তিনি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামী হিসেবেই পরিচিত। মিতভাষী সমীরবাবু ২০০৫ সাল থেকে ১০ বছর কংগ্রেসের টিকিটে জিতে চার নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হন। ২০১৫ সালের পুরভোটে তৃণমূলের কাছে হেরে যান তিনি। ওই বছর কাটোয়া পুরসভাতেও পালাবদল হয়। রবিবাবু অনুগামীদের নিয়ে তৃণমূলে যোগ দেন। তবে গত পাঁচ বছরে রাজনীতিতে সমীরবাবুকে সক্রিয় ভাবে দেখা যায়নি। সভা, সমিতিতেও তাঁর উপস্থিতি নজর কাড়েনি।
এমন এক জনকে প্রশাসক মনোনীত করায় অনেক তৃণমূল নেতা-কর্মীই বিস্মিত। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক কর্মীদের দাবি, ‘‘উনি কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে কবে এসেছেন, সেটাই কেউ জানেন না। দলের কোনও অনুষ্ঠানে, ভোটের সময়েও ওঁকে দেখা যায়নি।’’ তবে মাসখানেক ধরে তৃণমূলের কিছু কর্মসূচিতে রবীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে তাঁকে দেখা যাচ্ছে, দাবি তাঁদের। সমীরবাবু অবশ্য এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি।
কাটোয়ার সিপিএম নেতা অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “নতুন প্রশাসক কাটোয়ার মানচিত্রই ঠিকঠাক চেনেন না। পুরসভাগুলিকে তৃণমূল দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করেছে। মানুষ সবই বুঝতে পারছেন। নীতি পরিবর্তন না হলে, ব্যক্তি পরিবর্তন করে কোনও লাভ নেই।” বিজেপি নেতা অনিল দত্তেরও দাবি, “তৃণমূলের স্বার্থেই চার দিনের মধ্যে নতুন প্রশাসককে বসানো হল। সাধারণ মানুষের লাভ হল না।”
বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘বিরোধীদের অপপ্রচারে মানুষ কান দেন না। সমীরবাবু অত্যন্ত ভাল মানুষ। দীর্ঘদিন কাউন্সিলর ছিলেন। পুরসভার কাজে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা রয়েছে ওঁর। সরকার তাঁকে মনোনীত করায়
আমরা খুশি।’’