অভিভাবক নিয়মকানুন মানতে না চাওয়ার জেরেই সমস্যা তৈরি হয়েছে, ছাত্রকে স্কুলে যেতে মানার ঘটনায় এমনই দাবি করলেন দুর্গাপুরের স্কুলটির কর্তৃপক্ষ। ওই বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা সাহিদা সুলতানা দাবি করেন, ওই ছাত্রের বাবা-মা তাঁদের ইচ্ছে-অনিচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও আয়াদের উপরে চাপানোর চেষ্টা করতেন। তা নিয়েই সমস্যা হয়। এ দিন সন্ধ্যায় দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরার সঙ্গে দেখা করে ওই শিক্ষিকা বিষয়টি বিশদে জানান। পরে মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘দু’পক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করা হবে।’’
লোয়ার কেজির ওই ছাত্রের মা রবিবার মহকুমাশাসকের কাছে অভিযোগ করেছিলেন, স্কুলের শিক্ষিকা ও সহকারী (অ্যাটেনড্যান্ট) ছেলের সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করেছেন। তিনি প্রতিবাদ করতে স্কুলে গেলে জুটেছে হেনস্থা। তাঁর ছেলেকে ‘স্পেশাল চাইল্ড’ ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ স্কুলে য়েতে নিষেধ করেছেন বলেও অভিযোগ ছাত্রের মায়ের।
সোমবার স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা অভিযোগ অস্বীকার করে পাল্টা দাবি করেন, ‘‘পরিকল্পিত ভাবে মনগড়া অভিযোগ করা হয়েছে। ‘স্পেশাল চাইল্ড’ তকমা আমাদের দেওয়া নয়। উনি দাবি করেছিলেন, ছেলের প্রতি বিশেষ ভাবে নজর (স্পেশাল কেয়ার) দিতে হবে। আমরা বলেছিলাম, স্কুলের সব পড়ুয়াই আমাদের কাছে সমান। উনি জোরাজুরি করায় উপযুক্ত মেডিক্যাল শংসাপত্র-সহ বিষয়টি লিখিত ভাবে জানাতে বলেছিলাম। তা না করে উনি আমাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে নিজের ছেলের ক্ষতি করছেন।’’ তাঁর দাবি, ওই ছাত্রের মা স্কুলে ঢুকে শিক্ষিকা ও আয়াদের নাম ধরে হুমকি দিয়েছেন। পঠনপাঠনের ক্ষতি হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা বলেন, ‘‘এমন করলে আর স্কুলে আসবেন না বলার পরে উনি আর ছেলেকে পাঠাননি। চার মাসের টিউশন ফি বকেয়া রয়েছে। তা নিয়ে আমরা কোনও কথা বলিনি। তবু উনি ছেলেকে স্কুলে পাঠান না।’’
স্কুলটিতে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পঠনপাঠনের ব্যবস্থা রয়েছে। পড়ুয়া ২৪০। সোমবার স্কুলে পরীক্ষা ছিল। ওই ছাত্র আসেনি। তার মা দাবি করেন, ‘‘স্কুল থেকে পরীক্ষার কথা জানানো হয়নি।’’ এ দিন সন্ধ্যায় স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মহকুমাশাসকের সঙ্গে দেখা করেন। মহকুমাশাসক জানান, স্কুল কর্তৃপক্ষ নিজে থেকেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। ওই পড়ুয়ার অভিভাবকদেরও আসতে বলা হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা আসেননি। মহকুমাশাসক বলেন, ‘‘দু’পক্ষকেই মুখোমুখি বসিয়ে অভিযোগ, দাবিদাওয়া শুনে সমস্যার সমাধান করতে হবে।’’