নির্মল বাংলার সমীক্ষায় বাড়ি-বাড়ি যাবে পড়ুয়ারা

বাড়িতে শৌচাগার রয়েছে কি? খাওয়ার আগে কি হাত ধোওয়ার রেওয়াজ রয়েছে বাড়িতে? খাবার জল কি ঢে়কে রাখা হয়? বাড়ি-বাড়ি ঘুরে এ বার এই সব প্রশ্ন করবে স্কুল পড়ুয়ারা।

Advertisement

অর্পিতা মজুমদার

অন্ডাল শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০১৫ ০০:৩৯
Share:

বাড়িতে শৌচাগার রয়েছে কি?

Advertisement

খাওয়ার আগে কি হাত ধোওয়ার রেওয়াজ রয়েছে বাড়িতে?

খাবার জল কি ঢে়কে রাখা হয়?

Advertisement

বাড়ি-বাড়ি ঘুরে এ বার এই সব প্রশ্ন করবে স্কুল পড়ুয়ারা। নির্মল বাংলা অভিযানে এ ভাবে ছাত্রছাত্রীদের সামিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। নবম শ্রেণির পড়ুয়ারা গরমের ছুটিতে গ্রামে ঘুরে সমীক্ষা করবে। সঙ্গে থাকবেন শিক্ষক-শিক্ষিকারা। এর মাধ্যমে সচেতনতা গড়ে তোলা যাবে বলে মনে করছেন প্রশাসনের কর্তারা।

বর্ধমান জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি-বাড়ি গিয়ে কী প্রশ্ন করতে হবে, তার ‘মডেল’ ইতিমধ্যে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে স্কুলগুলিতে। গ্রাম পঞ্চায়েতের নাম, গ্রামের নাম, পাড়ার নাম, পরিবারের সদস্য সংখ্যা কত, শৌচালয় আছে না নেই, থাকলে ব্যবহার করা হয় কি না, না করলে কেন, খাবার বা জল ঢেকে রাখা হয় কি না, খাবার আগে হাত ধোওয়া হয় কি না— এই রকম মোট ২৬টি প্রশ্ন থাকছে। নবম শ্রেণির পড়ুয়াদের কয়েকটি দলে ভাগ করা হবে। প্রতিটি দলের নেতৃত্বে থাকবেন এক জন করে শিক্ষক বা শিক্ষিকা। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, গরমের ছুটির মাঝে ১৮ থেকে ২১ মে ওই দলগুলি গ্রামে ঘুরে তথ্য সংগ্রহ করবে। দিনে ৩০-৫০টি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষা করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এর পরে সেই সব তথ্য ২২-২৩ মে স্কুলে জমা দিতে হবে।

কিন্তু পড়ুয়াদের দিয়ে এমন সমীক্ষা করানোর খবর শুনে কপালে ভাঁজ অভিভাবকদের একাংশের। এই ধরনের কাজে যে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে উঠবে, মেলামেশার ক্ষমতা বাড়বে— এ বিষয়ে সকলেই এক মত। কিন্তু, অভিভাবকদের চিন্তা শুধু গরম নিয়ে। এই গরমের মধ্যে গ্রামে ঘুরে সমীক্ষার কাজ করে পড়ুয়ারা অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে বলে তাঁদের আশঙ্কা।

তবে বিভিন্ন স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েতের সঙ্গে কথা বলে তারা সমীক্ষার কাজ সকাল-সকাল সেরে ফেলার পরিকল্পনা করেছে। অন্ডাল উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা তপতী ভট্টাচার্য যেমন বলেন, ‘‘গোটা বিষয়টি নিয়ে ছাত্রীরা বেশ আগ্রহী। পঞ্চায়েতগুলির সঙ্গে কথা বলে ঠিক করেছি, সকাল ৮টা থেকে ১১টার মধ্যে সমীক্ষা সারা হবে।’’ জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনও বলেন, ‘‘সময় নিয়ে কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। পড়ুয়াদের যাতে কোনও অসুবিধা না হয় সে কথা মাথায় রেখে কখন কাজের সুবিধা হবে তা ঠিক করার পূর্ণ স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে স্কুলগুলিকে।’’

নানা পঞ্চায়েতের তরফেও জানানো হয়েছে, স্কুলগুলির সঙ্গে যোগাযোগ রেখে সমীক্ষার কাজে সব রকম সহযোগিতা করবে তারা। স্কুল থেকে দূরের গ্রামে যাওয়ার জন্য প্রয়োজনে গাড়ির ব্যবস্থাও করা হবে বলে কয়েকটি পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেন। এবিটিএ-র দুর্গাপুর মহকুমা শাখার সম্পাদক তন্ময় চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অনেক আগে এক বার এ ভাবেই পড়ুয়াদের সাক্ষরতা অভিযানে সামিল করা হয়েছিল। এই বয়সে এমন যে কোনও সমাজিক কাজ পড়ুয়াদের অনেক পরিণত করে তোলে। তবে দুশ্চিন্তা শুধু গরম।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন