শিশুপাচার, যৌন হেনস্থা, বাল্য বিবাহ প্রভৃতি বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা এবং এ সব বিষয় প্রতিরোধ সংক্রান্ত সচেতনতা প্রচার এই ক্লাবের সদস্যাদের মূল উদ্দেশ্যে। জেলা সমাজকল্যাণ দফতরের তৈরি ‘স্বজন’ নামে এই ক্লাব ইতিমধ্যেই জেলার কিছু স্কুলে কাজ করতে শুরুও করেছে। কর্তাদের দাবি, সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় এর সুফলও লক্ষ করা যাচ্ছে।
কী কী বিষয়ে সচেতনতা প্রচার করবে এই ক্লাবের সদস্যরা? জেলা সমাজ কল্যাণ আধিকারিক সুদেষ্ণা মুখোপাধ্যায় জানান, আপাতত যে সব স্কুলে কন্যাশ্রী ক্লাব রয়েছে, সেই সব স্কুলেই অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রীদের নিয়ে ‘স্বজন’ তৈরি করা হচ্ছে। আপাতত কন্যাশ্রী ক্লাবের ছাত্রীরাই ‘স্বজন’-এর সদস্যা হচ্ছে। শিশু সুরক্ষা, বয়ঃসন্ধির সমস্যা, শিশুপাচার, শিশুশ্রম, যৌন হেনস্থা, স্কুলছুট এবং বাল্য বিবাহ-সহ নানা বিষয়ে সচেতনতা প্রচারের জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে। ছাত্রীরা নিজেদের এবং অন্যদের স্কুলে এই প্রচার চালাবে। ছাত্রীদের সঙ্গে থাকবেন দু’জন করে শিক্ষক। শিক্ষকদের দায়িত্ব, ক্লাবের সদস্যাদের কাজকর্মের বিষয়ে সমাজকল্যাণ দফতরের নির্দিষ্ট বিভাগে জানানো। দফতরের দাবি, আপাতত ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে পূর্ব ও পশ্চিম বর্ধমানের মোট ৩৮টি স্কুলকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই ৩৪টি স্কুলে ‘স্বজন’ কাজ করছে। চলতি মাসেই চারটি স্কুলেও ক্লাব তৈরির কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যাবে।
‘স্বজন’ ক্লাবের সদস্যারা কী ভাবে তৈরি হচ্ছে? প্রশাসনের কর্তা জানান, প্রাথমিক পর্যায়ে শিশু সুরক্ষার বিষয়ে নানা খুঁটিনাটি বিষয় ছাত্রীদের বোঝানো হয়েছে। পরে ৩৮টি স্কুলের ক্লাবের সদস্যাদের নিয়ে হবে একটি কর্মশালা। সেখানেও নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা এবং প্রাথমিক আড়ষ্টতা কাটিয়ে তোলার পাঠ দেওয়া হবে। অ্যানিমেশন, শর্ট ফিল্ম প্রভৃতির মাধ্যমে সচেতনতার নানা দিক সম্পর্কে বোঝানো হবে ছাত্রীদের। সুদেষ্ণাদেবী বলেন, ‘‘কর্মশালায় আড়ষ্টতা কাটিয়ে ছাত্রীদের আত্মবিশ্বাসী করে তোলা হবে।’’
সুদেষ্ণাদেবীর দাবি, ইতিমধ্যেই এই ক্লাবের সুফল মিলতে শুরু করেছে। তাঁর দাবি, ‘‘কাটোয়ার হাপানিয়া গার্লস স্কুলে নাবালিকা ছাত্রীর বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছিল। ‘স্বজন’-র সদস্যারা তার পাশে দাঁড়ায়। ছাত্রীটিও বিয়েতে বেঁকে বসায় পিছু হঠে পরিবারটি।’’ ক্লাবের সদ্যসারাও জানায়, নারী সুরক্ষা এ বার মেয়েরা নিজেরাই করবে।