Chandrayan 3 Moon Landing

চাঁদে ভারত-বিক্রম, শামিল রানিগঞ্জের সানি

‘বিক্রম’ চাঁদে অবতরণের আগের মুহূর্তের অনুভূতিও সংবাদমাধ্যমের একাংশের সঙ্গে ভাগ করে নেন সানি। জানান, চন্দ্রযান ২-এর ক্ষেত্রে তীরে এসে তরি ডুবেছিল।

Advertisement

নীলোৎপল রায়চৌধুরী

রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০২৩ ০৮:৪৩
Share:

সানি মিত্র। —নিজস্ব চিত্র।

বড় হওয়া খনি এলাকায়। দেখেছেন কয়লা শিল্পাঞ্চল। তিনি সানি মিত্র। পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জ থেকে ইসরোয় চন্দ্রযান-৩ অভিযানের প্রযুক্তিবিদ। এলাকার ছেলের এমন নজরকাড়া জয়যাত্রায় উদ্বেল রানিগঞ্জ।

Advertisement

সানির প্রাথমিক পড়াশোনা এই জেলাতেই। দুর্গাপুরের ইংরেজি মাধ্যম বেসরকারি একটি স্কুল থেকে দশম শ্রেণি ও অন্য একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুল থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। তার পরে আইআইটি খড়গপুর থেকে মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে বিটেক ও এমটেক। এমটেক হওয়ার পরেই ২০১৮-য় যোগ দেন ইসরোয়।

অন্য বহু চাকরির সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কেন ইসরোয়? কেরলের তিরুঅনন্তপুরম থেকে ফোনে সানি বলেন, “লোভনীয় বেতনের চাকরিটাই সব নয়। ছোট থেকেই আকাশ, চাঁদ, তারা ভীষণ ভাল লাগত। চেয়েছিলাম, এমন একটি কর্মক্ষেত্র হোক, যেখানে মহাকাশ নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাব।” এই সূত্রেই ইসরোর কাজে আনন্দ খুঁজে পেয়েছেন, জানান বিজ্ঞানী সিভি রমনের ভক্ত সানি।

Advertisement

রানিগঞ্জের ডালপট্টি মোড়ে ছোটেলাল মাড়োয়ারি লেনের শঙ্কর ও মুনমুনের সন্তান সানি। সানি জানাচ্ছেন, চন্দ্রযান ৩ অভিযানের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ‘বিকাশ ইঞ্জিন’ তৈরির সিস্টেম ডিজ়াইন দলের সদস্য তিনি। সানি ছাড়াও এই দলে রয়েছেন ঝাড়খণ্ডের রূপেশ সিংহ, তিরুঅনন্তপুরমের ম্যাথুউস স্যাক্সন এবং আনিস রাজন। সানি জানান, তাঁদের কাজ ছিল বিকাশ ইঞ্জিনটির নকশা-সহ যাবতীয় খুঁটিনাটি বিষয় তৈরি করা।

‘বিক্রম’ চাঁদে অবতরণের আগের মুহূর্তের অনুভূতিও সংবাদমাধ্যমের একাংশের সঙ্গে ভাগ করে নেন সানি। জানান, চন্দ্রযান ২-এর ক্ষেত্রে তীরে এসে তরি ডুবেছিল। তাই প্রচণ্ড উৎকণ্ঠা ছিল, এটা ঠিক। “এ বার আমাদের প্রস্তুতি নিখুঁত ছিল। ফলে, আমরা খুবই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম”, বলছেন অবসরে ক্রিকেট-ফুটবলে ভক্ত সানি। তাঁর প্রিয় ক্রিকেটার এমএস ধোনি। প্রিয় ফুটবলার রোনাল্ডো।

ছেলের সাফল্যে উচ্ছ্বসিত বাবা-মা। পেশায় পরিবহণ ব্যবসায়ী শঙ্কর এবং মুনমুন বলেন, “খুবই উৎকণ্ঠায় ছিলাম আমরা। শেষমেশ এই গর্বের মুহূর্তটা তৈরি হয়েছে। আরও ভাল লাগছে, আমাদের ছেলে দেশের এত বড় কাজে যোগ দিয়েছে বলে।” রোগশয্যায় শুয়েও নাতির সাফল্য টেলিভিশনে দেখেছেন সানির ঠাকুমা, বছর ৮৫-র যূথিকা।

শহরের ছেলের এই সাফল্যে গর্বিত রানিগঞ্জের বিভিন্ন স্তরের মানুষও। বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমরা সানিকে নাগরিক সংবর্ধনা জানাব। এটা আমাদের সবার জন্য গর্বের।” সংবর্ধনা জানানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরাও, জানান রানিগঞ্জ টিডিবি কলেজের অধ্যক্ষ আশিস দে-ও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন