গুসকরায় গ্রেফতার দুই
TMC

TMC: নেতার মৃত্যুর পরে ‘তাণ্ডব’ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে

কর্মরত চিকিৎসক, নার্স-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা 

শেষ আপডেট: ২৩ অগস্ট ২০২১ ০৫:৫৭
Share:

ছড়িয়ে রয়েছে ভাঙা কাচ। রবিবার। গুসকরা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। নিজস্ব চিত্র।

তৃণমূল নেতার মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভাঙচুরের অভিযোগ উঠল গুসকরায়। শনিবার রাতে গুসকরা প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক, নার্স, কর্মীদের হেনস্থা করা হয় বলেও অভিযোগ। পুলিশ এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় জোর দেওয়ার আর্জি জানিয়েছেন চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীরা।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আউশগ্রামের গুসকরা ২ পঞ্চায়েতের শিবদা কলোনির বাসিন্দা গৌতম পালকে (৪২) শনিবার রাত সাড়ে ৯টা নাগাদ বুকে যন্ত্রণা নিয়ে গুসকরার ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আনা হয়। গৌতমবাবু তৃণমূলের বুথ সভাপতি। মৃতের পরিবারের দাবি, গৌতমবাবুকে দু’টি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়।

স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর পরেই চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ তুলে ক্ষোভ জানাতে থাকেন রোগীর সঙ্গে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসা লোকজনেরা। খবর পেয়ে ওই এলাকা থেকে আরও লোকজন এসে পৌঁছয়। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে তারা তাণ্ডব চালায় বলে অভিযোগ। কর্মরত চিকিৎসক, নার্স-সহ স্বাস্থ্যকর্মীদের হেনস্থা করার অভিযোগ ওঠে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীরা। স্বাস্থ্যকর্মীদের অনেকে একটি ঘরে ঢুকে দরজা-জানলা বন্ধ করে দেন।

Advertisement

ঘটনার সময়ে কর্তব্যরত নার্স কমলিকা ভট্টাচার্যের অভিযোগ, ‘‘এক দল লোক হাসপাতালে এসে আমাদের গালিগালাজ করে, হুমকি দেয়। চিকিৎসা সংক্রান্ত কাগজপত্র কেড়ে নেয়। জানলা-দরজার কাচ ভেঙে দেয়। প্রায়ই এই ধরনের ঘটনায় আমরা আতঙ্কিত। স্থায়ী ভাবে পুলিশ মোতায়েনের দাবি জানাচ্ছি।’’ অভিযোগ, প্রায় আধ ঘণ্টা ধরে তাণ্ডব চলে। খবর পেয়ে গুসকরা ফাঁড়ির পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনায় জড়িত অভিযোগে সে রাতেই শিবদা কলোনির বাসিন্দা প্রশান্ত ঘোষ ও কার্তিক বৈরাগ্য নামে মৃতের দুই পড়শিকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

মৃতের ভাই বাপি পালের অভিযোগ, ‘‘কয়েকদিন ধরে দাদা অসুস্থ ছিল। কাল রাতে আচমকা বুকে ব্যথা শুরু হয়। দাদাকে গুসকরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে এক নার্স ইঞ্জেকশন দেন। এর পরেই দাদার মৃত্যু হয়।’’ মৃতের পড়শি অভিজিৎ দাসের অভিযোগ, “চিকিৎসায় গাফিলতির কারণেই মৃত্যু হয়েছে গৌতমের।’’

যদিও চিকিৎসায় গাফিলতির কথা অস্বীকার করেছেন স্বাস্থ্যকেন্দ্র কর্তৃপক্ষ। আউশগ্রাম ১ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রাজু সানা বলেন, ‘‘রোগীকে এর আগেও দু’বার ‘রেফার’ করা হয়েছিল। এ দিন তাঁকে ব্যথার ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। কী কারণে মৃত্যু, তা ময়না-তদন্তের রিপোর্টে বোঝা যাবে। চিকিৎসায় কোনও গাফিলতি হয়নি। তবে রোগীর পরিবারের তরফে লিখিত অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখা হবে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘ঘটনার পরে কয়েকজন হাসপাতালের দরজা-জানলা ভেঙেছেন। পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। হাসপাতালে স্থায়ী পুলিশি পাহারার জন্যও আবেদন জানানো হবে।’’ রবিবার হাসপাতালে এক জন সিভিক ভলান্টিয়ার মোতায়েন থাকতে দেখা যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement