স্মরণ সমাবেশে বাম নেতারা। নিজস্ব চিত্র
মুখ্যমন্ত্রী একের বিরুদ্ধে এক লড়াই চাইছেন। কিন্তু আসলে বিজেপি ও তৃণমূল ‘টু-ইন ওয়ান’— সোমবার বর্ধমান শহরের টাউন হলের মাঠে নিরুপম সেনের স্মরণসভায় এ ভাবেই শাসকদলকে আক্রমন করলেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। বিজেপির বিরুদ্ধেও সরব ছিলেন। দলের শীর্ষ নেতা প্রকাশ কারাতও বুঝিয়ে দেন, তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে তাঁদের লড়াই। এ দিন তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বিজেপিকে হারানোর জন্য গণতান্ত্রিক ও ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলি জোট বাঁধতে শুরু করেছে। প্রতি রাজ্যে বিজেপি-বিরোধী দলগুলি নিজেদের মধ্যে তালমিল করে জোট গড়ছে। যেমন, উত্তরপ্রদেশে হয়েছে, বিহারে, মহারাষ্ট্রে চেষ্টা চলছে। তৃণমূলের সঙ্গে জোটবন্ধনের কোনও প্রশ্নই নেই।’’
প্রয়াত নেতা নিরুপম সেনকে স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘‘পাঁচ দশক ধরে পরিচয় আমাদের। ছাত্র আন্দোলন থেকে এক সঙ্গে কাজ করছি। এসএফআইয়ের এক বৈঠকে হরিদাস বন্দ্যোপাধ্যায় নামে পরিচয় হয়েছিল ওঁর সঙ্গে। চার বছর পরে জানলাম উনি নিরুপম সে। এই সময় তাঁকে হারানো লোকসান।’’
রাজ্য সম্পাদক কথায় ছিল আত্মসমালোচনা। তিনি বলেন, “আমরা কি বেঁচে থাকার মত বেঁচে আছি? সন্ত্রাসের মুখে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ করতে না পারলে বাঁচা আর মরার মধ্যে কোনও দেওয়াল খুঁজে পাওয়া যাবে কি!” ব্রিগেডের মাঠ ভরে যায়, জনসভায় লোক হয়। তারপরেও বুথে গিয়ে দাঁড়ানোর মত কর্মী থাকে না কেন?’’ সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, তৃণমূলের শক্তি দ্রুত ক্ষয় হচ্ছে। একসময় তা বিজেপির দিকে ঝুঁকলেও সম্প্রতি পাঁচ রাজ্যের ফলের পরে তা থমকে গিয়েছে। একটা রাজনৈতিক শূন্যতা দেখা দিয়েছে। সূর্যকান্তবাবু নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, “ওই শূন্যতা দ্রুততার সঙ্গে ভরাট করতে হবে।’’
তাঁর কথায়, “কোনও সংকীর্ণতা থাকলে চলবে না। যদি মনে করেন, আমি থাকব আর কেউ থাকবে না, এই সংকীর্ণতা পাল্টাতে হবে। আমাকে অনেক মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে। চৌহদ্দি বাড়াতে হবে।’’ দলের কারও কারও মধ্যে ‘আমি সবজান্তা’ ভাব রয়েছে দাবি করে, তা ফেলে রেখে মানুষের কাছে গিয়ে শেখারও পরামর্শ দেন সূর্যকান্তবাবু।
জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক উত্তম সেনগুপ্তের যদিও দাবি, “৩৪ বছর পরে মানুষ শিক্ষা দিয়েছে। এখন বিজেপিকে সাহায্য করতে চাইছে। ব্রিগেডের সভার পর তা পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে মানুষের কাছে।’’