এইচআইভি সন্দেহে স্কুলে ভর্তিতে বাধা

দুই ছাত্রকে ভর্তি না করিয়েই ফিরতে হয় আধিকারিকদের। অথচ শিশু দু’টি আদৌ এইচআইভি আক্রান্ত নয়!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৪:২৭
Share:

সাত বছরের ব্যবধানে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। সচেতনতার অভাবে ও নিছক সন্দেহের বশে সরকারি হোমের দুই শিশু স্কুলে ভর্তি হতে পারল না।

Advertisement

বর্ধমান শহর থেকে ৯ কিলোমিটার দূরে ঝিঙুটি প্রাথমিক স্কুলে একটি হোমের দুই শিশুকে মঙ্গলবার দুপুরে ভর্তি করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন জেলা শিশু সুরক্ষা ও প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের আধিকারিকেরা। কিন্তু শিশু দু’টি এইচআইভি আক্রান্ত, এই সন্দেহে বাধা দেন কিছু গ্রামবাসী। তাঁদের বিক্ষোভে দুই ছাত্রকে ভর্তি না করিয়েই ফিরতে হয় আধিকারিকদের। অথচ শিশু দু’টি আদৌ এইচআইভি আক্রান্ত নয়!

এমন সন্দেহের কারণ কী? প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ঝিঙুটির অদূরে তালিতে সমাজকল্যাণ দফতর অনুমোদিত একটি হোমে নানা জায়গা থেকে উদ্ধার করা শিশুদের রাখা হয়। সেটির কাছাকাছি আর একটি হোম রয়েছে, যেখানে এইচআইভি আক্রান্তেরা থাকেন। ২০১১ সালেও অনাথ শিশুদের হোমটি থেকে কয়েক জন পড়ুয়াকে ভর্তি করাতে নিয়ে গেলে ঝিঙুটির বাসিন্দারা বাধা দিয়েছিলেন। এ বারও তাঁদের দাবি, ওই দুই খুদেও এইচআইভি আক্রান্ত। গ্রামের ছেলেমেয়েদের সঙ্গে তাদের পড়ানো হলে স্কুলে তালা ঝুলিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তাঁরা।

Advertisement

পূর্ব বর্ধমান জেলা শিশু সুরক্ষা আধিকারিক সুদেষ্ণা মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “ওই শিশুরা যে কোনও রোগে আক্রান্ত নয়, তা চেষ্টা করেও বাসিন্দাদের বোঝানো যায়নি। ওঁরা ভ্রান্ত ধারণায় অনড়।” শহর লাগোয়া এলাকা, যেখানে সাক্ষরতার হার প্রায় ৮০%, সেখানে এমন ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে সচেতনতা প্রচার নিয়েও। বর্ধমানের ডেপুটি সিএমওএইচ (২) সুনেত্রা মজুমদার বলেন, “যথেষ্ট প্রচার হয়। কিন্তু এড্‌স যে ছোঁয়াচে নয়, তা অনেকে বুঝতেই চাইছেন না!”

জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘এ ভাবে কোনও শিশুকে পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত করা ঠিক নয়। গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের ভ্রান্তি দূর করে ওই পড়ুয়াদের স্কুলে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন