আজ শিক্ষক দিবস

দুঃস্থদের পড়ানোই ওঁদের ব্রত

প্রথাগত শিক্ষাকতার বাইরে বেরিয়ে নিজেদের মতো করে পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ান তাঁরা। কেউ স্কুলে ফেরান স্কুলছুটদের, কেউ আবার দুঃস্থ পড়ুয়াদের খুঁজে এনে পড়ান নিখরচায়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৩২
Share:

প্রথাগত শিক্ষাকতার বাইরে বেরিয়ে নিজেদের মতো করে পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়ান তাঁরা। কেউ স্কুলে ফেরান স্কুলছুটদের, কেউ আবার দুঃস্থ পড়ুয়াদের খুঁজে এনে পড়ান নিখরচায়।

Advertisement

পানাগড় বাজার হাইস্কুলের বাংলার শিক্ষক সন্দীপ চট্টোপাধ্যায় শুধু স্কুলে পড়াশোনা করিয়েই দায়িত্ব শেষ বলে মনে করেন না। তিনি স্কুলছুট পড়ুয়াদের ‘কাউন্সেলিং’ করে থাকেন। ২০০১ সালে বীরভূমের শেখপুর গ্রামের বাসিন্দা সন্দীপবাবু এই স্কুলে শিক্ষক হিসেবে যোগ দেন। তিনি জানান, স্কুলে এসে দেখেছেন, কিছু পড়ুয়া নিয়মিত স্কুলে আসে না। কেউ-কেউ আবার একেবারেই স্কুল আসা বন্ধ করে দিয়েছে। সন্দীপবাবু খুঁজে-খুঁজে সেই সব পড়ুয়াদের বের করেন। তিনি বলেন, ‘‘জাতি, ধর্ম, বর্ণ বলে কিছু হয় না। মনুষ্যত্বই আসল। আর তা গড়তে পারে স্কুলই।’’ অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত মিড-ডে মিল চালু আছে। কিন্তু নবম ও দশম শ্রেণিতেও কিছু পড়ুয়া আছে, যাদের বাড়িতে দু’বেলা খাবার জোটা সমস্যার। মিড-ডে মিলের খাবার পেলে তাদের সুবিধে হয়। স্কুলে খাবার পেলে ভাল, তা না হলে সন্দীপবাবু নিজের পকেট থেকেই টাকা দিয়ে সেই রকম পড়ুয়াদের খাওয়ার ব্যবস্থা করেন। এ ছাড়া দুঃস্থ পড়ুয়াদের বই-খাতা কিনে দেওয়া, ভর্তির ফি দিয়ে দেওয়া, প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় বসার প্রশিক্ষণ-সহ নানা সাহায্য করে পাশে থাকার চেষ্টা করেন। তাঁর কথায়, ‘‘অর্থের অভাবে কেউ যেন পড়াশোনা থেকে বঞ্চিত না হয়, সেটাই আমি চাই।’’

মানকরের দেবদাস পালও দুঃস্থ পড়ুয়াদের পাশে দাঁড়িয়ে তাদের পড়াশোনা করিয়ে চলেছেন প্রায় দশ বছর ধরে। বর্ধমান রাজ কলেজ থেকে স্নাতক দেবদাসবাবু মানকরে গৃহশিক্ষকতা শুরু করেন ২০০৬ সালে। দেখেন, পড়ুয়াদের মধ্যে কয়েক জন আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া পরিবারের। তাদের পড়াশোনার খরচ চালানোর সামর্থ্য পরিবারের নেই। সেই থেকে শুরু। প্রতি বছর তেমন ৮-১০ জনকে তিনি বিনা পারিশ্রমিকে পড়িয়ে থাকেন। দেবদাসবাবু শুধু বলেন, ‘‘আমার সামর্থ্য অনুযায়ী যেটুকু পারি করি।’’

Advertisement
(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন