‘বিকট শব্দে কাটল ঘোর’, বলছেন শিক্ষকেরা

Advertisement

সুশান্ত বণিক

আসানসোল শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৯ ০১:৪২
Share:

স্কুল চত্বরেই বোমা ফাটার দাগ। ছবি: পাপন চৌধুরী

তখন সময় সাড়ে ১২টা। স্কুলে সবেমাত্র তৃতীয় পিরিয়ডের ঘণ্টা পড়েছে। শিক্ষক-শিক্ষিকারা ক্লাস নিতে ঢুকছেন। আচমকা কাছেই কোথাও বোমা ফাটার বিকট শব্দ। একটা নয়, বরং পরপর বেশ কয়েকটা। মুহূর্তে গোটা স্কুল চত্বরে সাদা ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়ল। সঙ্গে পড়ুয়াদের কান্না, দ্রুত দরজা-জানলা বন্ধ করার শব্দ, হতভম্ব শিক্ষকেরা।

Advertisement

— বৃহস্পতিবার বারাবনিতে অশান্তির জেরে এ ভাবেই কতক্ষণ যে কেটেছে, তা ঠিক হিসেবে করে বলতে পারছিলেন না দোমহানি কেলেজোড়া বালিকা বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা (টিচার ইনচার্জ) সুচিতা মণ্ডল। তিনি জানান, খানিকটা ধাতস্থ হন বারাবনি পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ প্রদীপ মিশ্রকে স্কুলে দেখে।

এই স্কুলের পাশেই দোমহানি কেলেজোড়া উচ্চমাধ্যমিক স্কুল। বোমা পড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেই স্কুলেও একই হাল। অষ্টম শ্রেণিতে বাংলা ক্লাস নিতে যাচ্ছিলেন দীপঙ্কর মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘আচমকা বিকট শব্দে গোটা স্কুলঘরটা যেন কেঁপে উঠল। প্রথমে ভেবেছিলাম, কোনও গাড়ির টায়ার ফেটেছে। পরপর একই রকম বিকট শব্দ হওয়ায় ঘোর কাটল। বুঝতে পারি বোমা পড়ছে।’’

Advertisement

দুই স্কুলেরই শিক্ষক-শিক্ষিকারা জানান, সেই মুহূর্তে তাঁরা চেয়েছেন, পড়ুয়াদের যেন কোনও বিপদ না হয়। প্রায় মিনিট ১০-১৫ এমন অবস্থা চলে স্কুলে, জানান শিক্ষকেরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক অভিভাবকেরা জানান, স্কুলের মাঠের সীমানা পাঁচিলের ভিতরেও বোমা পড়েছে।

দু’টি স্কুলেরই অভিভাবকেরা জানান, এ দিন সকাল থেকেই এলাকায় যথেষ্ট পুলিশকর্মী মোতায়েন ছিল। বন্ধ রাখা ছিল দোকানপাটও। কিন্তু এ ক্ষেত্রে প্রশ্ন, স্কুল দু’টি কেন খোলা ছিল। সুচিতাদেবী ও অন্য স্কুলটির প্রধান শিক্ষক মৃণালজ্যোতি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা তো কিছুই জানতাম না। প্রশাসন কিছু জানালে নিশ্চয় স্কুল বন্ধ রাখতাম।’’ জেলা স্কুল পরিদর্শক অজয় পালও বলেন, ‘‘প্রশাসনের তরফে আমাকে এ বিষয়ে জানানো হলে আমিই স্কুল বন্ধ রাখতে উদ্যোগী হতাম।’’ তবে বিডিও (বারাবনি) সুরজিৎ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘বিষয়টা নিয়ে আগাম কিছু অনুমান করলে পদক্ষেপ করা যেত।’’ তবে ঘটনার শেষে স্কুলের পড়ুয়ারা যাতে ঠিক মতো বাড়ি পৌঁছতে পারে, সে বিষয়ে তিনি খোঁজ খবর করেছেন বলে জানান।

ঘটনা নিয়ে যথেষ্ট আতঙ্কে স্কুল দু’টির পড়ুয়া, অভিভাবকেরা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বেশ কয়েক জন পড়ুয়া বলে, ‘‘পরপর ক্লাস হচ্ছিল। এমনটা যে এখানে ঘটবে ভাবিনি। খুবই ভয় পেয়ে গিয়েছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন