এটিএম-সুরক্ষায় প্রযুক্তি

ফলে, শুধু সঙ্কেত মিললেই হবে না, রেখাচিত্রও মিলতে হবে। এই রেখাচিত্র তৈরি করবে এটিএমের বোতামের তলায় থাকা রাসায়নিক আয়ন। বোতাম টিপলেই রাসায়নিকের আয়ন নতুন রেখাচিত্র তৈরি করবে।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০১৭ ১৩:২১
Share:

গবেষণা বলছে পাঁচ সংখ্যার ‘পাসওয়ার্ড’ তত্ত্ব।

এ যেন বাড়তি নিরাপত্তার জন্য দরজায় জো়ড়া ‘তালা’। আর সেই দরজা খুলতে হলে একই সঙ্গে দু’টি তালাই খুলতে হবে!

Advertisement

এটিএমে লেনদেনে নিরাপত্তা বাড়াতে কম্পিউটার বিজ্ঞানের সঙ্গে রসায়নকে মিশিয়ে এমনই পদ্ধতি বার করেছেন তিন বাঙালি গবেষক— বর্ধমানের বিবেকানন্দ কলেজের বাসুদেব হালদার, পুরুলিয়ার কাশীপুর মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ের অরবিন্দ মল্লিক ও কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়ের তাপস মজুমদার। সকলেই রসায়নেরই শিক্ষক। নতুন প্রযুক্তির গবেষণাপত্র ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক পত্রিকা ‘নেচার-সায়েন্টিফিক রিপোর্টস’-এ প্রকাশিত হয়েছে। এটিএমে পাসওয়ার্ডকে সাঙ্কেতিক ভাষায় মুড়ে রাখা হয়, যা ‘ক্রিপ্টোগ্রাফি’ নামে পরিচিত। অর্থাৎ এক-একটি নম্বরকে কম্পিউটার প্রোগ্রামিংয়ে বিভিন্ন সঙ্কেতে পরিণত করে যন্ত্রের মগজে পুরে দেওয়া হয়। ধরা যাক, কেউ পাসওয়ার্ড দিয়েছেন ‘১২৩৪’। তা কম্পিউটার ওই নম্বরের প্রেক্ষিতে তৈরি বিভিন্ন সঙ্কেত দিয়ে চেনে। অরবিন্দবাবু জানান, এই ধারণাটাই বদলাতেই তাঁদের গবেষণা। সেখানে প্রতিটি ‘ইনপুট’-কে (সংখ্যা, অক্ষর বা চিহ্ন) সঙ্কেতে পরিণত করার পাশাপাশি প্রতিটি ‘ইনপুট’ একটি করে রেখাচিত্র তৈরি করবে।

ফলে, শুধু সঙ্কেত মিললেই হবে না, রেখাচিত্রও মিলতে হবে। এই রেখাচিত্র তৈরি করবে এটিএমের বোতামের তলায় থাকা রাসায়নিক আয়ন। বোতাম টিপলেই রাসায়নিকের আয়ন নতুন রেখাচিত্র তৈরি করবে। ‘‘ওই রাসায়নিকটি ঠিক কী, তা জানবে শুধু সংশ্লিষ্ট সংস্থা। ফলে, হ্যাকিংয়ের আশঙ্কা অনেক কম’’, দাবি বাসুদেববাবুর। রাজ্য পুলিশের এক কর্তা জানান, কেউ চার সংখ্যা বা ‘ইনপুট’ দিয়ে তৈরি ‘পাসওয়ার্ড’-এর তিনটি ‘ইনপুট’ জেনে আর একটি আন্দাজে ‘কি-ইন’ করে এটিএম থেকে কোনও গ্রাহকের টাকা তুলে নিতে পারে। কিন্তু রেখাচিত্রের ক্ষেত্রে একটি ‘ইনপুট’ ভুল টিপলেই কম্পিউটার তা ধরে ফেলবে। ফলে, টাকা মিলবে না।

Advertisement

নিরাপত্তা আরও বাড়াতে চারের বদলে পাঁচটি ‘ইনপুট’-এর ‘পাসওয়ার্ড’-এর কথাও বলেছে গবেষণা। কারণ, গণিতের হিসেবে পাঁচ সংখ্যার ‘পাসওয়ার্ড’ তুলনায় পোক্ত। অরবিন্দবাবু জানান, তাঁদের গবেষণা অনলাইন ব্যাঙ্কিং-সহ নেট দুনিয়ায় ব্যবহার করা েযতে পারে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন