Burdwan University

বিক্ষোভের মাঝে ঢুকতে ‘বাধা’ উপাচার্যকে

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতিতে ম্যাজিস্ট্রেট ও বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবিতে টিএমসিপি, এবিভিপি থেকে ‘বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও কমিটিও’ সরব হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ মার্চ ২০২৪ ০৯:২৪
Share:

গোলমালের মুখে। নিজস্ব চিত্র।

বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজবাটী ক্যাম্পাসে দুর্নীতির নিরপেক্ষ তদন্ত ও হাপিশ হয়ে যাওয়া টাকা উদ্ধারের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছিল এসএফআই। শুক্রবার অন্তর্বতী উপাচার্য অফিসে ঢুকতে গেলে তাঁকেও বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বেশ কিছুক্ষণ গাড়ি বারান্দায় আটকে থাকতে হয় তাঁকে। উপাচার্যকে বাঁচাতে গিয়ে এসএফআইয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তারক্ষী, কর্মীদের মধ্যে ধ্বস্তাধ্বস্তিও হয় বলে অভিযোগ।

Advertisement

এ দিন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্থিক দুর্নীতিতে ম্যাজিস্ট্রেট ও বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবিতে টিএমসিপি, এবিভিপি থেকে ‘বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও কমিটিও’ সরব হয়। টাকা উদ্ধারের দাবিও ওঠে। পরে উপাচার্য স্পষ্ট ভাবেই তদন্ত প্রক্রিয়ার গতি প্রকৃতির ব্যাখা আন্দোলনকারীদের দেন। কর্তৃপক্ষের দাবি, দেড়-দু’বছর আগেকার ঘটনা। বিষয়টি নজরে আসতেই টাকা উদ্ধারের জন্য সব রকম ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কাউকে আড়াল করা হচ্ছে না। বরং যাঁদের সই জাল করে টাকা ব্যাঙ্ক থেকে উঠেছে বলে মনে করছি, তাঁদের তদন্ত কমিটিতে রাখা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আরও দাবি, উপাচার্য বিচারবিভাগীয় তদন্তের জন্য এগিয়েছিলেন। কিন্তু এগজ়িকিউটিভ কমিটি বা ইসির বৈঠক ছাড়া বিচারবিভাগীয় তদন্তের সিদ্ধান্ত উপাচার্য নিতে পারেন না। আর রাজ্যের নির্দেশে ইসি বৈঠক গত চার মাস ধরে হচ্ছে না।

এ দিন বেলা ২টো নাগাদ রাজবাটী ক্যাম্পাসের গাড়ি বারান্দা ও সিঁড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিল এসএফআই। সিঁড়িতে ঢোকার মুখে কোলাপসিপেবল গেটে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মীরা। বিক্ষোভ চলাকালীন কয়েক জন তালা ভাঙার চেষ্টা করেন। উপাচার্যের নামে স্লোগানও ওঠে। তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করেন সংগঠনের জেলা সম্পাদক অনির্বাণ রায়চৌধুরী। এরই মধ্যে আড়াইটা নাগাদ উপাচার্যের গাড়ি আসে। গাড়ির সামনেই বসে পড়েন এসএফআইয়ের কর্মীরা। গাড়ি থেকে নেমে অফিসে যেতে গেলে বাধা পান উপাচার্য। তাঁকে ঘিরে বিক্ষোভ শুরু হয়। কয়েক জনকে অভব্য আচরনও করতে দেখা যায়। কর্মীদের সঙ্গে ধ্বস্তাধ্বস্তিও হয় বলে অভিযোগ। উপাচার্যও ক্ষুব্ধ হয়ে তাঁদের বলেন, “তোমাদের নিজেদের উপরে নিয়ন্ত্রণ নেই? তোমরা কি ছাত্র? ধিক্, ধিক্, ধিক্কার বলছো, কিসের ধিক্কার?” পরে এসএফআইয়ের প্রতিনিধিদের কাছ থেকে স্মারকলিপি নেন তিনি।

Advertisement

রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে তিন দফায় ১ কোটি ৯৩ লক্ষ টাকা সই ও নথি জাল করে খোয়া গিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী। স্থায়ী আমানত ভেঙে ওই টাকা গিয়েছে জনৈক সুব্রত দাসের অ্যাকাউন্টে। অর্থ দফতরের কর্মী ভক্ত মণ্ডলের নাম জড়িয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএমসিপি ইউনিটের সভাপতি সুমিত দলুইয়ের দাবি, তাঁরা ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে তদন্ত চেয়েছেন। ‘বর্ধমান ইউনিভার্সিটি কর্মচারী সমিতির’ সম্পাদক শ্যামাপদ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “তদন্তের উপর আস্থা আছে। আমরা চাই, টাকা উদ্ধারের সঙ্গে দোষীরাও শাস্তি পাক।’’ এবিভিপিও নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করে উপাচার্যকে চিঠি দিয়েছেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন