নদী পের হতে গেলে গায়ে থাকতে হবে লাইফ জ্যাকেট। ফেরিঘাটে থাকতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণ সিসি ক্যামেরা। নৌকার মাঝি ও অন্যান্য কর্মীদের সাঁতারের প্রশিক্ষণ থাকাটাও বাধ্যতামূলক। সম্প্রতি পূর্ব বর্ধমান ও নদিয়া জেলা প্রশাসনের বৈঠকে এমনই বেশ কিছু নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি বর্ধমানে জেলাশাসকের দফতরে আয়োজিত বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব, নদিয়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (বিপর্যয় ব্যবস্থাপন), কাটোয়া-কালনার মহকুমাশাসক এবং পুরপ্রধানেরা। প্রশাসন সূত্রে খবর সেখানেই বর্ধমানের জেলাশাসক বলেন, “নির্দেশগুলি কার্যকর করা ও নিয়মিত পরিদর্শন করার জন্য পরিবহণ দফতর, পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনকে বলা হয়েছে।”
গত বছর কালনায় ভবাপাগলার মেলার সময়ে ভাগীরথীতে নৌকাডুবি হয়। তার পরে নৌকায় ‘নজরদারি’ শুরু করে বর্ধমান ও নদিয়া জেলা প্রশাসন। সম্প্রতি হুগলির তেলেনিপাড়ায় জেটি ভেসে যাওয়ার পরে রাজ্য সরকার আরও নড়েচড়ে বসে। কাটোয়ার দাঁইহাট, মাটিয়ারি ফেরিঘাট, অগ্রদ্বীপ, শাঁখাই, উদ্ধারণপুর, কল্যাণপুর, রঘুপুর, নসরতপুর, কালনার কিশোরীগঞ্জ, মনমোহনপুর, কমলনগর, মাহিশিলা, নসরৎপুর, সমুদ্রগড়ে ফেরিঘাট উন্নয়নের জন্য পাঁচ লাখ টাকা করে এবং কাটোয়ার বল্লভপাড়া ঘাট ও কালনা শহরের ফেরিঘাট উন্নয়নে ২০ লাখ টাকা বরাদ্দ করে পরিবহণ দফতর। পরিবহন মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীর দাবি, ‘‘রাজ্যে তিনশোরও বেশি ফেরিঘাট উন্নয়নে টাকা দেওয়া হচ্ছে। পূর্ব বর্ধমানের পুলিশকে লঞ্চ দেওয়ার বিষয়েও ভাবনাচিন্তা করা হচ্ছে।”
প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই বৈঠকে ঠিক হয়েছে, কতজন যাত্রী নিয়ে পারাপার করতে পারবে, তা নির্দিষ্ট করে প্রতিটি নৌকায় টাঙিয়ে রাখতে হবে। বোর্ডে এবং যাত্রী যাতায়াতের পথে থাকতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণ আলো। প্রকাশ্যে ‘রেট চার্ট’ টাঙানোও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ ছাড়াও ঘাটে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক ও সিভিক ভলান্টিয়ার্স মোতায়েন, ইজারাদারেরা যাতে ফেরিঘাটের নিরপত্তা ও সুরক্ষা বিধি মানেন, সে বিষয়েও মহকুমা প্রশাসন ও পরিবহণ দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে খবর। পূর্ব বর্ধমানের অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) নিখিল নির্মল বলেন, “জেলায় চারশোটি লাইফ জ্যাকেট কেনা হয়েছে। যাত্রীদের ওই জ্যাকেট পরা বাধ্যতামূলক।”