বন্‌ধের ছাপ নেই শিল্পাঞ্চলে

নোট বাতিলের প্রতিবাদে বামেদের ডাকা হরতালে জনজীবন কার্যত স্বাভাবিক রইল আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে। বাজার-দোকান খোলা ছিল। সরকারি অফিস-কাছারিতে অন্য দিনের মতোই কাজ হয়েছে। কল-কারখানা বা খনিতেও শ্রমিক-কর্মীর হাজিরা স্বাভাবিক ছিল বলে জানানো হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল ও দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৬ ০০:০০
Share:

অন্য দিনের মতোই দলে দলে কাজ যোগ দিতে চলেছেন দুর্গাপুর স্টিল প্ল্যান্টের কর্মীরা। সোমবার সকালে বিকাশ মশানের তোলা ছবি।

নোট বাতিলের প্রতিবাদে বামেদের ডাকা হরতালে জনজীবন কার্যত স্বাভাবিক রইল আসানসোল-দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে। বাজার-দোকান খোলা ছিল। সরকারি অফিস-কাছারিতে অন্য দিনের মতোই কাজ হয়েছে। কল-কারখানা বা খনিতেও শ্রমিক-কর্মীর হাজিরা স্বাভাবিক ছিল বলে জানানো হয়েছে। বন্‌ধের সমর্থনে কোথাও পিকেটিং করতে দেখা যায়নি বাম কর্মীদের। তবে বিরোধিতায় মিছিল করেছে তৃণমূল।

Advertisement

এ দিন আসানসোল শিল্পাঞ্চলের সব রুটেই মিনিবাস চলাচল স্বাভাবিক ছিল। তবে ভোরের দিকে বাস নিয়ে রাস্তায় নামতে কিছুটা দ্বিধায় ছিলেন বাসকর্মীদের একাংশ। তৃণমূলের পরিবহণ কর্মী সংগঠনের নেতা রাজু অহলুওয়ালিয়া সকাল ৬টা নাগাদ আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে বাসকর্মীদের বাস নিয়ে বেরোনোর জন্য কার্যত নির্দেশ দেন। তার পরেই বাস চলাচল শুরু হয়। আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুদীপ রায় বলেন, ‘‘নোট বিড়ম্বনায় দিন পনেরো যাত্রী অনেক কম। এ দিনও তেমনটাই ছিল। তবে বেশিরভাগ বাসই প্রায় সারা দিন চলেছে।’’ শহরে বড় বাস চললেও দূরপাল্লার বাস খুব বেশি চলেনি। দুর্গাপুরেও সকালে যাত্রী হবে কি না, সেই আশঙ্কায় অল্প মিনিবাস বেরিয়েছিল। বেলা বাড়তেই অবশ্য আরও বাস চালু হয়। স্টেশনেও ভিড় ছিল আর পাঁচটা কাজের দিনের মতোই। কাঁকসা থেকে কুলটি, অন্ডাল থেকে রূপনারায়ণপুর, সর্বত্রই ছবিটা ছিল এক রকম।

আসানসোল ও দুর্গাপুরের সব বড় বাজারও খুলেছিল অন্য দিনের মতোই। ব্যবসায়ীরা জানান, নোটের চোটে ইদানীং বিক্রিবাটা একটু কমই হচ্ছে। এ দিনও তেমনটাই হয়েছে, আলাদা ভাবে বন্‌ধের প্রভাব বোঝা যায়নি বলেই তাঁদের দাবি। যানবাহন চলায় মানুষজনও বাড়ি থেকে বেরিয়েছেন। প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই খোলা ছিল। এর আগে নানা বন্‌ধে পুলকার চালকেরা রাস্তায় না নামায় পড়ুয়ারা অসুবিধেয় পড়ত। এ বার তেমনটা হয়নি। বেশ কিছু স্কুলে পরীক্ষাও চলছে। দুর্গাপুরের এমএএমসি মডার্ন হাইস্কুল কর্তৃপক্ষ যেমন জানান, তাঁদের বার্ষিক পরীক্ষা চলছে।। সমস্ত পড়ুয়াই এ দিন হাজির ছিল। কোনও সমস্যা হয়নি।

Advertisement

সরকারি-বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠানেও কাজ হয়েছে স্বাভাবিক ভাবে। সকাল ও দুপুর, দুই শিফ্‌টেই শ্রমিকদের রোজকার মতো কারখানায় যেতে দেখা গিয়েছে। ইস্কো স্টিল প্ল্যান্ট, চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানা থেকে ইসিএলের নানা খনি, সবেতেই হাজিরা স্বাভাবিক ছিল বলে সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে। ইসিএলের সিএমডি-র কারিগরি সচিব নীলাদ্রি রায় জানান, কোনও প্রভাব পড়েনি। কর্মীদের উপস্থিতি ও উৎপাদন ব্যাহত হয়নি।

এ দিন তৃণমূলের তরফে বন্‌ধের বিরোধিতা করে নানা জায়গায় সভা ও মিছিল করা হয়। দলের আসানসোল জেলা সভাপতি ভি শিবদাসন বলেন, ‘‘নোট বাতিলের বিরোধিতা আমরাও করছি। কিন্তু বন্‌ধ যে কোনও পথ নয়, মানুষ আজ ফের তা বুঝিয়ে দিলেন।’’ সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বন্‌ধ সফল না ব্যর্থ, তা আজ ব়ড় প্রশ্ন নয়। সাধারণ মানুষকে আমরা বোঝাতে চেয়েছি, তাঁদের গচ্ছিত টাকা তাঁরা পাচ্ছেন না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন