আবর্জনা: মৃত যুবকের বাড়ির কাছেই নোংরায় ভর্তি। ছবি: বিকাশ মশান
দুর্গাপুরের পাশাপাশি জ্বরের প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে আনাসসোলেও। ডেঙ্গির মোকাবিলায় বিশেষ পর্যবেক্ষক দল গঠন করেছে জেলা স্বাস্থ্য দফতর। পুরসভার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে তৈরি এই দলের সদস্যরা শহরাঞ্চল ও গ্রামাঞ্চলে এক যোগে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন, জেলার মুখ্য স্বস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদার। তাঁর দাবি জেলায় কয়েকজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হলেও এখনও কোনও মৃত্যুর খবর নেই। জ্বরে আক্রান্ত অঞ্চলগুলিতে প্রতিষেধক দেওয়া থেকে সচেতনতা প্রচার সবই নিয়মিত ভাবে করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। তবে আসানসোল পুরসভা এলাকায় সাম্প্রতিক জ্বরের প্রকোপ বাড়ায় বিরোধীরা শাসক দল তৃণমূলের দিকে আঙুল তুলেছেন।
পুরসভার বিরোধী দলনেতা ওয়াসিমুল হক এ বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়ে কর্তৃপক্ষকে চিঠি পাঠিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘পুরসভার ৬ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে জ্বরে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। পুরসভার তরফে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হলে নাগরিকেরা কষ্ট পেতেন না।’’ বিরোধীদের আরও অভিযোগ বার্নপুরের সূর্যনগর, রেলপাড়, জামুড়িয়ার সাতগ্রাম, আসানসোলের মহিশিলায় জ্বরের প্রকোপ বেড়েছে। পুরসভার বিজেপি কাউন্সিলর ভৃগু ঠাকুর বলেন, ডেঙ্গি বা জ্বরের মোকাবিলায় পুরসভার যত দ্রুততার সঙ্গে কাজ করা উচিত ছিল, তা হয়নি বলেই মানুষের আতঙ্ক বেড়েছে।’’ এই বিষয়ে সাফাই দফতরের মেয়র পারিষদ লক্ষ্মণ ঠাকুর বলেন, ‘‘আমরা এলাকায় মশা মারার ওষুধ স্প্রে থেকে আবর্জনা সাফাই নিয়মিত করছি।’’
এ দিকে, ডেঙ্গি নিয়ে পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এখনও পর্যন্ত চিন্তার বিশেষ কিছু নেই বলে দাবি করেছেন জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক দেবাশিস হালদার। তবুও তিনি বলেন, ‘‘সকলকে সাবধান থাকতে হবে। তাই একটি বিশেষ পর্যবেক্ষক দল গঠন করে গ্রাম ও শহরে ধারাবাহিক অভিযান চলানো হচ্ছে।’’ সম্প্রতি নিম্নচাপের বৃষ্টিতে বেশ কিছু অঞ্চলে জল দাঁড়িয়েছে। ওই সব এলাকায় মশার উপদ্রবও বেড়েছে। তাই জ্বরে আক্রান্তের খবর এলেই সেখানে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা ছুটে যাচ্ছেন। রোগীদের রোগ নির্ণয় কেন্দ্র ও হাসপাতালে পাঠানো হচ্ছে। প্রতিষেধক দেওয়া থেকে সচেতনতা প্রচারও করা হচ্ছে। দেবাশিসবাবু জানান, এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি সম্ভাবনা জেলায় এমন ১২ জন রোগী মিলেছে। প্রত্যেককেই জেলা হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।’’
হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘পাঁচজনের শরীরে ডেঙ্গির জীবাণু মিলেছে। তাঁদের মধ্যে তিন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।’’ হাসপাতাল সূত্রে খবর, সোমবার বিকেল পর্যন্ত প্রায় ৩৩ জন রোগী জ্বর নিয়ে ভর্তি রয়েছেন। তিন জনের শরীরে জাপানি এনসেফেলাইটিসের জীবাণু মিললেও কেউই ডেঙ্গি আক্রান্ত নন বলে দাবি নিখিলবাবুর। তাঁর দাবি, জ্বরে আক্রান্তরা সকলে এই জেলার বাসিন্দা নন। এঁদের অনেকেই ঝাড়খণ্ড, পুরুলিয়া বাঁকুড়া থেকেও চিকিৎসার জন্য এসেছেন।
এ দিকে,স্বাস্থ্য দফতরের মেয়র পারিষদ দিব্যেন্দু ভগত বলেন, ‘‘জেলা স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে যৌথভাবে পুরসভার স্বাস্থ্য আধিকারিকেরা একযোগে এই বিষয়ে কাজ করছেন।’’