কল্যাণেশ্বরীর হোটেল। নিজস্ব চিত্র
বড় হয়েছেন নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে। কোলিয়ারির সাধারণ কর্মী। কিন্তু কম সময়ের মধ্যে তাঁর সম্পত্তি উত্তরোত্তর বাড়তে থাকায় তাঁদেরও সন্দেহ হয়েছিল, দাবি সিবিআইয়ের হাতে ধৃত প্রাক্তন কাউন্সিলর কপিল মণ্ডলের প্রতিবেশীদের একাংশের। তবে শাসক দলের নেতা হওয়ায় কেউ এ নিয়ে কথা বলার সাহস দেখাননি বলে জানান কুলটির রামনগরের ওই বাসিন্দারা।
বুধবার রামনগরে কপিলবাবুর বাড়িতে তল্লাশি চালায় সিবিআই। আধিকারিকেরা জানান, বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র, কয়েক লক্ষ টাকা ও বেশ কিছু নথিপত্র উদ্ধারের পরে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়। সিবিআই সূত্রে জানানো হয়, ২০০৯ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ১.৩৮ কোটি টাকার সম্পত্তি জমানোর অভিযোগ হয়েছে কপিলবাবু ও তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে। অস্ত্র আইনে মামলা করে বৃহস্পতিবার তাঁকে আসানসোল আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল-হাজতে পাঠানো হয়।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নয়ের দশকের শেষ দিকে ইস্কোর রামনগর খনিতে কর্তব্যরত অবস্থায় মারা যান কপিলবাবুর বাবা কালো মণ্ডল। নিকটাত্মীয় হিসেবে তিনি সেই চাকরিতে যোগ দেন। প্রথমে জিৎপুর, পরে রামনগর খনির নিরাপত্তা দফতরে নিয়োগ করা হয় তাঁকে। ২০০৯-এর পুরভোটে নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে জেতেন কপিলবাবু। মাস কয়েক পরে কুলটির সোদপুরে তৃণমূলের একটি অনুষ্ঠানে তাঁকে দলে নেওয়া হয়। বুধবার গ্রেফতার হওয়ার পরে তিনি নিজেকে তৃণমূলের সদস্য হিসেবেই দাবি করেন। ব্লক তৃণমূল সভাপতি মহেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের অবশ্য দাবি, কপিলবাবুর সঙ্গে তৃণমূলের কোনও সম্পর্ক নেই।
প্রতিবেশীদের একাংশের দাবি, কাউন্সিলর হওয়ার পর থেকেই কপিলবাবুর ভোল পাল্টাতে শুরু করে। বড় বাড়ি, গাড়ি, কল্যাণেশ্বরীতে হোটেল— সম্পত্তি বাড়তে থাকে। পুলিশের একটি সূত্রের খবর, গত কয়েক বছর তিনি জমি কেনাবেচার কারবারেও যুক্ত ছিলেন। তাঁর হোটেলেও নানা বেআইনি কারবারের অভিযোগ উঠেছে।
সিবিআইয়ের তরফে কুলটি থানায় কপিলবাবুর বিরুদ্ধে বাড়িতে আগ্নেয়াস্ত্র মেলার অভিয়োগ করা হয়। পুলিশ অবশ্য এ দিন আদালতে ধৃতকে নিজেদের হেফাজতে চায়নি। পুলিশ জানায়, বিষয়টি সিবিআইয়ের অধীনে রয়েছে। তাই পরবর্তী পদক্ষেপ তারাই ঠিক করবে।