বিশ্ববিদ্যালয় ডিজিটাল করবে ৫৬ বছরের নথি

পড়ে রয়েছে গত ৫৬ বছরের কয়েক লক্ষ পড়ুয়ার মার্কশিট, শংসাপত্র ও রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট মিলিয়ে এক কোটিরও বেশি নথি। কার্যত অসংরক্ষিত অবস্থা সেগুলির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:১০
Share:

পড়ে রয়েছে গত ৫৬ বছরের কয়েক লক্ষ পড়ুয়ার মার্কশিট, শংসাপত্র ও রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেট মিলিয়ে এক কোটিরও বেশি নথি। কার্যত অসংরক্ষিত অবস্থা সেগুলির। এই সব নথি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের ফলে সমস্ত তথ্য কেন্দ্রের অনলাইন ব্যাঙ্কেও তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন তাঁরা। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে, ২০১৬ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৪৮টি বিএড কলেজের পড়ুয়াদের তথ্য অনলাইন ব্যাঙ্কে পরীক্ষামূলক ভাবে তোলা হবে।

Advertisement

১৯৬০ সালে বিশ্ববিদ্যলয় প্রতিষ্ঠা হয়। সেই সময় সাবেক বর্ধমান ছাড়াও লাগোয়া চারটি জেলার কলেজ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে ছিল। এ ছাড়া বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ ও বেশ কয়েকটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজও ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৬২ থেকে পরীক্ষা ব্যবস্থা শুরু হয়। সেই সময় থেকে পড়ুয়াদের মার্কশিট, শংসাপত্র অসংরক্ষিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘নথিগুলি এমন ভাবে আটকে রয়েছে যে হাত দিয়ে টানতে গেলেই ছিঁড়ে যাচ্ছে। আমরা বিশেষ যন্ত্রের মাধ্যমে হাওয়া দিয়ে পাতাগুলি আলাদা করে থাকি।’’

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কর্মসমিতির বৈঠকে ওই নথি ডিজিটাল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। চলতি আর্থিক বছরেই দরপত্র ডেকে সংরক্ষণের জন্য বিশেষজ্ঞ সংস্থাকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। ঠিক হয়েছে, প্রতিটি নথিই স্ক্যান করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করা হবে। তার পরে ‘ক্লাউড’ ভাড়া নিয়ে ওই সব তথ্য জমিয়ে রাখা হবে। এর মাধ্যমে ইউজিসি-র নির্দেশ মেনে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ও পড়ুয়াদের নথি কেন্দ্রের অনলাইন তথ্য ব্যাঙ্কে মজুত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

Advertisement

২০১৬ সালে চাকরিপ্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা যথাযথ কি না বা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে গেলে পড়ুয়ার প্রয়োজনীয় শিক্ষাগত যোগ্যতা আছে কি না— সেগুলি যাচাইয়ের জন্য তৈরি হয়েছে অনলাইন তথ্য ব্যাঙ্ক। যার পোশাকি নাম ‘ন্যাশনাল অ্যাকাডেমিক ডিপোজিটারি’ (ন্যাড)। বিশ্ববিদ্যালয় ঠিক করেছে, ২০১৬ সাল থেকে বিএডের সব পড়ুয়ার শংসাপত্র ও মার্কশিট ‘ন্যাড’-এ আপলোড করা হবে। ঠিকঠাক ভাবে তা করা গেলে স্নাতকোত্তর, গবেষকদের তথ্য তোলা হবে। সব শেষে স্নাতকদের তথ্য দেওয়া হবে।

ন্যাড-এর নোডাল অফিসার তথা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরীক্ষা নিয়ামক প্রদীপ রায় বলেন, ‘‘ওই তিন বছরের আগের কোনও পড়ুয়ার তথ্য ন্যাডে আপলোড করার প্রয়োজন থাকলে, আমাদের ই-মেল করলেই হবে। আমরা তাঁর তথ্য তুলে দেব।’’ বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রতিটি পড়ুয়াকে ন্যাডের একটি পরিচয়পত্র তৈরি করতে হবে। তাহলে ন্যাডে আপলোড করা তাঁর তথ্য তিনি দেখতে পারবে। চাকরি বা উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনে সেই আইডি ব্যবহার করলে কোনও প্রতিলিপি দেওয়ার প্রয়োজন হবে না। সংশ্লিষ্ট সংস্থা আবেদনকারীর অনুমতি সাপেক্ষে চটজলদি সমস্ত তথ্য দেখতে পাবেন।

প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘উপাচার্য চাইছেন, সমস্ত পড়ুয়া ওই পরিচয়পত্র তৈরি করতে থাকুন। তাতে পড়ুয়াদেরই পরে সুবিধা হবে। আমরাও উপাচার্যের অনুমতি নিয়ে শীঘ্রই একটি বিজ্ঞপ্তি দেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন