জল ছাড়লে গ্রাম বাঁচবে তো, চিন্তা

সেচ দফতরের দামোদর ক্যানেল ডিভিশনের বাঁকুড়ার সোনামুখীর নির্বাহী বাস্তুকার অশোক দত্তের দাবি, “দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে দামোদরের ডান দিকের সমস্ত বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৮ ০২:২৩
Share:

বুধবার থেকে দফায় দফায় বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। টানা বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দফতর। চিন্তা বেড়েছে জেলার নদী তীরবর্তী গ্রামগুলির বাসিন্দাদেরও। গত বছর দামোদরের বাঁধ ভেঙে রায়না ২ ব্লক ও জামালপুরের বেশ কিছু গ্রাম জলে ডুবে গিয়েছিল। গ্রামবাসীদের অভিযোগ ছিল, জলমগ্ন হওয়ার ২৪ ঘন্টা পরেও প্রশাসন বা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের খোঁজ পাওয়া যায়নি। প্রশ্ন উঠছে, এ বারেও টানা বৃষ্টির জেরে অতিরিক্ত জল ছাড়ার মতো পরিস্থতি তৈরি হলে ফের কী ভাসবে গ্রাম।

Advertisement

সেচ দফতরের দামোদর ক্যানেল ডিভিশনের বাঁকুড়ার সোনামুখীর নির্বাহী বাস্তুকার অশোক দত্তের দাবি, “দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে দামোদরের ডান দিকের সমস্ত বাঁধ সংস্কার করা হয়েছে।’’ যদিও এই দাবির সঙ্গে একমত নন রায়না ২ ও জামালপুর ব্লকের বিস্তীর্ণ এলাকার বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, রায়না ২ ব্লকের গোতান, হাটশিমুল, আটাপুর-সহ বেশ কিছু এলাকায় বাঁধ সেই ভাঙা অবস্থায় রয়েছে। কিংবা বাঁধ নিচু হয়ে পড়ে রয়েছে। জল বাড়লেই বাঁধ উপচে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। রায়না ২ পঞ্চায়েতের বিদায়ী সভাপতি আনসার আলির দাবি, “১০০ দিনের কাজ থেকে বেশ কিছু জায়গায় বাঁধ মেরামত করা হয়েছে। কিন্তু ওই সব জায়গায় হয়নি।’’ ব্লকের বেশ কিছু রাস্তা ভয়াবহ বলে তিনি জানিয়েছেন।

জামালপুরের বাঁধও বেহাল বলে এলাকার বাসিন্দাদের দাবি। জেলা পরিষদের সদস্য মিঠু মাঝি জানান, বেরুগ্রাম, নাগড়া, কৈবর্তপুর-সহ বেশ কিছু জায়গায় বাঁধের উপর বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। দামোদর ক্যানেল ডিভিশনের কর্তারা জানিয়েছেন, জামালপুল নিম্ন দামোদর ডিভিশনের মধ্যে পড়ে। হুগলি থেকে ওই এলাকার বাঁধ নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বেশি জল ছাড়লে জামালপুর বা রায়না ২ ব্লকের বাঁধের পক্ষে তা ধরে রাখা অসম্ভব। কর্তাদের দাবি, এর মূল কারণ হচ্ছে, ওই এলাকায় দামোদর অনেকটা সরু। সে জন্য জল উপচে পড়ার সম্ভাবনা সবসময়ই থাকে।

Advertisement

ওই দফতর সূত্রেই জানা যায়, ভাগীরথীতে চারটে জায়গায় ভাঙনের জন্য বাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার মুখে। কাটোয়া ২ ব্লকের চরসাহাপুর, অগ্রদ্বীপ, পূর্বস্থলীর ঝাউডাঙা ও জালুইডাঙার পরিস্থিতি বেশ খারাপ। দফতরের নির্বাহী বাস্তুকার ভাস্করসূর্য মণ্ডল বলেন, “চরসাহাপুরের জন্য তিন কোটি, বাকি তিনটে জায়গার জন্য ৫ কোটি টাকা করে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে।’’ কিন্তু প্রকল্প অনুমোদন হয়ে আসার আগেই বাঁধ ভেঙে গ্রামে জল ঢুকতে শুরু করলে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সামলাতে পারবে? ওই দফতরের দাবি, এ বছর শুরু থেকেই কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। প্রতিটি ব্লকে ৫০ জন যুবককে নিয়ে একটি দল গঠন করা হয়েছে। জুন থেকে কাটোয়া ও কালনায় স্পিড বোট দেওয়া হয়েছে। আর দামোদরের বুকে স্পিড বোট চলবে না বলে বালি ঘাটের ইজারাদারের কাছ থেকে ৭৮টি নৌকা নেওয়া হয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন