মশা নিধনে বসুক জাল, আবেদন

কলেজের ‘রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ’ ও ‘ইন্টারনাল কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সেল’-এর দাবি, শহরের নানা বহুতল ও পাকা নির্মাণগুলিতে থাকা সেপ্টিক ট্যাঙ্কগুলিই মশাদের বংশবৃদ্ধির মূল জায়গা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আসানসোল শেষ আপডেট: ২২ অক্টোবর ২০১৭ ০২:১৩
Share:

ফাইল চিত্র।

উত্তর ২৪ পরগনা, কলকাতা-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে ডেঙ্গি ও অন্যান্য মশাবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ছে। জ্বরের উপদ্রব দেখে রাজ্যের নানা এলাকার মতো আসানসোলবাসীও খানিক আশঙ্কায়। তাঁদের অনেকেরই দাবি, বহু এলাকায় সাফাই ঠিক মতো হয় না। যদিও মশার বংশ নিধন করতে তার ‘উৎসস্থলে’ই আঘাত হানতে হবে, এমনটাই মনে করছেন আসানসোল বানওয়ারিলাল ভালোটিয়া কলেজের এক দল গবেষক, শিক্ষক।

Advertisement

কী ভাবে সম্ভব মশানিধন?

কলেজের ‘রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট বিভাগ’ ও ‘ইন্টারনাল কোয়ালিটি অ্যাসিউরেন্স সেল’-এর দাবি, শহরের নানা বহুতল ও পাকা নির্মাণগুলিতে থাকা সেপ্টিক ট্যাঙ্কগুলিই মশাদের বংশবৃদ্ধির মূল জায়গা। ইতিমধ্যে নানা গবেষণায় প্রমাণ মিলেছে, পরিষ্কার জলের পাশাপাশি সেপ্টিক ট্যাঙ্কেও ডেরা বাঁধে ডেঙ্গির মশা।

Advertisement

আসানসোল-সহ বড় শহরগুলিতে বহুতলগুলির সেপ্টিক ট্যাঙ্কগুলি আকারে অনেক বড়। তাই মূলত সেগুলিই মশার আঁতুড়ঘর বলে দাবি কলেজের প্রাণিবিদ্যার শিক্ষক অরূপ ঘোষের। তাঁর দাবি, ‘‘ট্যাঙ্কগুলির কারিগরি ব্যবস্থাপনায় সামান্য বদল করলেই মশা-রোধ সম্ভব। ট্যাঙ্ক থেকে জল বেরনোর পাইপের মুখে একটি সাইফোন বা মশা-রোধী জাল বসাতে হবে। আর তা হলেই মিলবে মশার হাত থেকে নিষ্কৃতি। যত দ্রুত এটা করা যায়, ততই মঙ্গল।’’

বিবি কলেজের ওই গবেষকদল এবং শিক্ষকদের দাবি, তাঁদের সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, শিল্পাঞ্চলের প্রায় কোনও বহুতল বা পাকা নির্মাণেই সেপ্টিক ট্যাঙ্কগুলিতে এই কারিগরি ব্যবস্থা নেই।

তাঁদের এই সামগ্রিক সমীক্ষা বা গবেষণাটি ১৯তম ‘রাজ্য বিজ্ঞান ও কারিগরি কংগ্রেস’ অধিবেশন, ‘হু’ (ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন) দ্বারা স্বীকৃত বলেও দাবি বিবি কলেজের শিক্ষকদের।

আসানসোলের রেলপার এলাকার ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের ওকে রোড, ঝোপড়পট্টি, হাজিনগর, শীতলা, অলিনগর, নুরানি মসজিদ এলাকায় ঠিক মতো সাফাইয়ের কাজ হচ্ছে না বলে সম্প্রতি অভিযোগ করেছিলেন বাসিন্দারা। যদিও ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দাবি করেছিলেন, প্রয়োজনের তুলনায় সাফাই কর্মী কম থাকাতেই এই বিপত্তি।

এই পরিস্থিতিতে সাফাই অভিযানে জোর দেওয়ার পাশাপাশি সাইফোন বসানোটা আবশ্যিক করলে সুফল মিলতে পারে বলে ধারণা শিক্ষকদের। কলেজের অধ্যক্ষ অমিতাভ বসু বলেন, ‘‘শিল্পাঞ্চলবাসীকে এই বিষয়টি আমরা স্লাইড-শো করে বোঝানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আসানসোল পুরসভার মেয়রের কাছেও এ বিষয়ে সহযোগিতার আবেদন করব।’’

মেয়র জিতেন্দ্র তিওয়ারির যদিও দাবি, ‘‘সম্প্রতি ডিসেরগড়ে ম্যালেরিয়ায় এক জনের মৃত্যু ছাড়া অতীতে ডেঙ্গি বা অন্য কোনও মশাবাহিত রোগের প্রকোপের খবর নেই। তবে সাবধানের মার নেই। শিক্ষকদের আবেদন বিবেচনা করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন