দুর্নীতি নিয়ে কথা বলায় হুমকি, নালিশ

কয়েকদিন আগেই মন্দিরে রাজনীতি, নিয়ম না মানার অভিযোগ করেছিলেন ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক শ্যামলেন্দু চট্টোপাধ্যায়। এ বার ওই চিঠি পাঠানোর পর থেকেই তাঁকে ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ জানালেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১৪
Share:

কয়েকদিন আগেই মন্দিরে রাজনীতি, নিয়ম না মানার অভিযোগ করেছিলেন ট্রাস্টি বোর্ডের সম্পাদক শ্যামলেন্দু চট্টোপাধ্যায়। এ বার ওই চিঠি পাঠানোর পর থেকেই তাঁকে ক্রমাগত হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ জানালেন তিনি। শুক্রবার জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনকে অভিযোগ জানিয়ে চিঠি পাঠান তিনি। চিঠির প্রতিলিপি দেন মুখ্যমন্ত্রী, জেলার দুই মন্ত্রী, বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক, বর্ধমান ও হুগলির জেলা জজ ও পুরপ্রধানকেও।

Advertisement

শ্যামলেন্দুবাবুর অভিযোগ, তাঁর অভিযোগের কথা সংবাদপত্রে বেরোনোর পরেই বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি তৃণমূল প্রভাবিত কর্মচারী সংগঠনের নেতা শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায় বৃহস্পতিবার দলবল নিয়ে অশালীন গালিগালাজ করে প্রাণনাশের হুমকি দেন তাঁকে। শুক্রবার ফের দিনেদুপুরে একই হুমকি দেওয়া হয় বলেও তাঁর দাবি। শ্যামলেন্দুবাবু বলেন, ‘‘আমি আতঙ্কিত। যে কোনও মুহূর্তে প্রাণনাশের আশঙ্কা করছি।’’ যদিও ট্রাস্টি বোর্ডের সভাপতি তথা পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের দাবি, ‘‘ওই সম্পাদকই গয়না বিক্রি নিয়ে দুর্নীতি করেছেন। উনি মিথ্যে অভিযোগ করায় মানুষের ক্ষোভ বাড়ছে।’’

পুরপ্রধান এবং শাসকদলের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে আরও বেশ কিছু অভিযোগ রয়েছে শ্যামলেন্দুবাবুর। তাঁর দাবি, বিগত সম্পাদক আশিস দাসগুপ্তের অপসারণের পরে তিনি দায়িত্ব নেন। সেই সময় থেকেই মন্দিরে নানা ধরণের লোকের প্রবেশ, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ দেখা যায়। শ্যামাপ্রসাদ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ তিন জন গত ১৯ জুলাই পুরোহিতদের হুমকি, ধাক্কাধাক্কি করেন এবং পুরোহিতেরা ঘটনার কথা বর্ধমান থানায় জানান বলেও তাঁর দাবি। এ ছাড়াও মন্দির সংস্কারে উদ্ধার হওয়া লোহার বিম প্রকাশ্যে নিলাম করে বিক্রি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রায় তিন লক্ষ টাকার লোহার বিম চুপিসারে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি। ট্রাঅথচ স্টি বোর্ডে জমা হয় মাত্র ১১ হাজার টাকা। এ ছাড়া গয়না বিক্রি, সভাপতির মদতে নিজের ইচ্ছেমতো কাজ, কর্মচারীর কাছ থেকে টাকা আত্মসাৎ, প্রতিবাদ করলে হুমকি— এ সব তো রয়েইছে। তাঁর আরও দাবি, সর্বমঙ্গলা মন্দিরের দুর্গাপুজোয় দূর থেকে মানুষ আসেন। অরাজকতা চললে শান্তি বিঘ্নিত হবে। জেলাশাসক সুষ্ঠ সমাধান না করলে শ্বেতপত্র প্রকাশ করতে বাধ্য হবেন বলেও জানান তিনি। বিধায়ক রবিরঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘খোঁজ নিয়ে দেখেছি সর্বমঙ্গলা মন্দির ঠিকমতো চলছে না।’’

Advertisement

তবে যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই শ্যামাপ্রসাদবাবুর দাবি, ‘‘ওনার সঙ্গে দেখা হয়নি। হুমকির প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে। আমার একটা সামাজিক পরিচয় আছে। এ ধরণের ঘৃণ্য কাজ আমার নয়। উনি কেন অভিযোগ করছেন বুঝতে পারছি না।’’ জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন বলেন, ‘‘অভিযোগ হাতে পাইনি। কী করা যায় দেখছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন