—প্রতীকী ছবি।
কখনও থানা থেকে পালিয়ে যাচ্ছে আসামী। কখনও কালীপুজোর কুপন ছাপিয়ে টাকা তোলার অভিযোগ উঠছে। আবার কখনও কর্তব্যরত অবস্থায় প্রকাশ্যে ঝামেলা করতে গিয়ে ধরা পড়ছেন পুলিশকর্মী। কালনা মহকুমার একাধিক থানায় পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বহর বেড়েই চলেছে ক্রমশ। সপ্তাহখানেকের মধ্যে পূর্বস্থলী থানার দুই এসআই ও এক কনস্টেবলকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে। জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের পুলিশ লাইনে পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি চুরির অভিযোগে যজ্ঞেশ্বরপুর থেকে লাল মহম্মদ শাহজি নামে এক যুবককে গ্রেফতার করে পূর্বস্থলী থানার পুলিশ। রাতে তাঁকে ডিউটি অফিসারের ঘরে রাখা হয়। সকালে দেখা যায়, থানায় নেই তিনি। পরে পুলিশ ফের ওই যুবককে গ্রেফতার করলেও থানার নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে যায়। বিভাগীয় তদন্তের পরে ওই রাতে দায়িত্বে থাকা এএসআই ভোলানাথ মাল এবং এক কনস্টেবলকে সাসপেন্ড করা হয়। শুক্রবার ওই থানার আর এক এএসআই কবিরুদ্দিন খানকেও সাসপেন্ড করা হয়।
কালীপুজোর আগে এই থানার বিরুদ্ধে কুপন ছাপিয়ে নানা জায়গা থেকে টাতা তোলারও অভিযোগ ওঠে। খড়দত্তপাড়ার এক যুবক কুপন-সহ বেশ কিছু নথি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী এবং রাজ্য পুলিশের ডিজির কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। জেলা পুলিশ সুপারের নির্দেশে বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘তদন্ত চলছে।’’
এখানেই শেষ নয়, মাস দেড়েক আগে অবৈধ বালিবোঝাই লরি ধরতে গেলে এক বালি মাফিয়া দলবল নিয়ে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের আধিকারিক, কর্মীদের বাধা দেন। স্থানীয় মানুষজনের দাবি ছিল, পুলিশের মদতেই ওই বালি মাফিয়া এলাকায় জাল বিস্তার করেছিল। যদিও পরে তাঁকে পুলিশ গ্রেফতার করে। বছর খানেক আগে ভিন্ রাজ্যের এক আইনজীবীকে অপহরণের ঘটনায় আঙুল ওঠে এই থানার আইসির বিরুদ্ধে। আইসি এবং স্থানীয় এক যুবকের নামে কালনার আইনজীবীরা আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে টানা ১৬ দিন আদালত বয়কট করেন আইনজীবীরা।
লাগাতার এই থানার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে। তাঁদের দাবি, ব্যবস্থা না নিলে অভিযোগের তালিকা বাড়তেই থাকবে।
মাস দেড়েক আগে মন্তেশ্বরের জামনা এলাকায় এক কিশোরী খুনের ঘটনায় দোষীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না অভিযোগ তুলে রাস্তা অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। এই ঘটনার জেরে সরতে হয় মন্তেশ্বর থানার ওসিকে।
কালনা থানার এক পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে মদ খাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। দিন তিনেক আগে আদালত চত্বরে কর্তব্যরত অবস্থায় প্রকাশ্যে মাতলামি করার সময় ‘হাজতবাবু’কে ধরে ফেলেন কোর্ট ইনস্পেক্টর। এ দিন কালনার এক পুলিশ আধিকারিক জানান, ওই পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে জেলায়।
যদিও অভিযোগ নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শুধু বলেন, ‘‘অভিযোগ এলে যথাযথ তদন্ত করে দেখা হয়।’’