রবিবার সবাইকে সঙ্গে নিয়ে বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার। নিজস্ব চিত্র
সম্প্রতি এলাকায় দলের মিছিলে ডাক না পাওয়ার অভিযোগ করেছিলেন গুসকরা পুরসভার বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলরদের একাংশ। এই ঘটনায় ফের শহরে দলের কোন্দলই প্রকাশ্যে আসে বলে মনে করেছিলেন তৃণমূলের স্থানীয় নেতা, কর্মীদের একাংশ। তবে রবিবার বিদায়ী পুরপ্রধান বর্দ্ধেন্দু রায় এবং দলের শহর সভাপতি (গুসকরা) কুশল মুখোপাধ্যায়কে পাশে বসিয়ে ‘কোন্দল’-জল্পনা আদতে বিরোধীদের অপপ্রচার বলে দাবি করলেন আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার। তবে বিরোধীদের কটাক্ষ, কোন্দল এমন পর্যায়ে যে এলাকায় বিবদমান বলে পরিচিত দুই নেতাকে পাশে বসিয়ে কোন্দল নেই, তা জানাতে হচ্ছে বিধায়ককে।
এ দিন বিধায়ক ‘বাংলার গর্ব মমতা’ শীর্ষক কর্মসূচি উপলক্ষে সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই বলেন, ‘‘দলে কোনও কোন্দল নেই। সবটাই বিরোধীদের অপপ্রচার।’’ পাশাপাশি, আগামী পুরভোটের আগে কী ভাবে দলকে কাজ করতে হবে, তা-ও জানান বিধায়ক।
বিজেপি নেতা পতিতপাবন হালদার বিধায়কের এই মন্তব্য শুনে বলেন, ‘‘এলাকায় তৃণমূলের কোন্দল কী পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে তা বিধায়কের মন্তব্য শুনেই বোঝা যাচ্ছে। তাই ওঁকে দুই বিরুদ্ধ গোষ্ঠীর নেতাকে সঙ্গে নিয়ে বৈঠক করতে হচ্ছে।’’ সিপিএম নেতা মনোজ সাউ বলেন, ‘‘নিজেদের দলের খামতি, দ্বন্দ্ব বিরোধীদের ঘাড়ে ঠেলে বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বিধায়ক।’’
কিন্তু কেনই বা এমন ‘বার্তা’? বিরোধীদের দাবি, এর নেপথ্যে রয়েছে এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি। গুসকরা পুরসভার ১৬টি ওয়ার্ডের মধ্যে গত পুরভোটে ১১টিতে জেতে তৃণমূল। পাঁচটিতে জেতে সিপিএম। এর মধ্যে তৃণমূলের প্রাক্তন পুরপ্রধান তথা কাউন্সিলর চঞ্চল গড়াই বিজেপি-তে যোগ দেন। গত লোকসভা ভোটের ফলে দেখা যায়, ১৪টি ওয়ার্ডেই পিছিয়ে তৃণমূল। এগিয়ে বিজেপি।
এলাকায় লোকসভা ভোটে দলের এই ফলের জন্য ‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব’-কেই দায়ী করেন তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের একাংশ। তাঁদের মতে, এই কুশলবাবু এবং বুর্দ্ধেন্দুবাবু দলের অন্দরে ও এলাকায় পরস্পরের বিরোধী বলে পরিচিত। এই ‘দ্বন্দ্বে’র জেরেই কখনও কোনও কাউন্সিলর সোশ্যাল মিডিয়ায় দলের অবস্থা নিয়ে সরব হন। কখনও দলের মিছিলেই দেখা যায় না বিদায়ী তৃণমূল কাউন্সিলরদের বেশির ভাগকেই।
তবে এ দিন বুর্দ্ধেন্দুবাবু এবং কুশলবাবু দু’জনেই দাবি করেন, দলে এবং তাঁদের মধ্যে কোনও দ্বন্দ্ব নেই। বিরোধীদের ‘বার্তা-ব্যাখ্যা’ সম্পর্কে বিধায়কের প্রতিক্রিয়া, ‘‘কোন্দলই নেই, তা হলে বার্তা কি দেব? বিরোধীরা মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।’’ যদিও, সোশ্যাল মিডিয়ায় বিদায়ী কাউন্সিলর মল্লিকা চোংদারের সরব হওয়া প্রসঙ্গে এ দিন বিধায়ক বলেন, ‘‘দলের মধ্যে থেকে দলের সমালোচনা যাঁরা করেন, তাঁরা দলের কর্মীই নন।’’