TMC

‘বিমুখ’দের ফিরিয়ে আনতে সক্রিয় তৃণমূল

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব মেটাতে ও নিষ্ক্রিয় কর্মীদের ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে দল।

Advertisement

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ০৭:২৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিধানসভা ভোট দুয়ারে। তার আগে ‘অন্তর্দ্বন্দ্বে’র জেরে দলের অনেকে ‘বিমুখ’। সবাইকে এক জায়গায় আনতে আজ, মঙ্গলবার দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন, সে দিকে তাকিয়ে রয়েছেন পূর্ব বর্ধমান জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

Advertisement

তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, গোষ্ঠী-দ্বন্দ্ব মেটাতে ও নিষ্ক্রিয় কর্মীদের ফিরিয়ে আনতে উদ্যোগী হয়েছে দল। নেতারা তো বটেই ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের সংস্থাকেও কাজে লাগানো হচ্ছে। পুরসভা, ব্লক, পঞ্চায়েত স্তরেও যোগসূত্র বজায় রাখার কাজ করছেন ভোটকুশলী সংস্থার সমন্বয়কারীরা। জানা গিয়েছে, নিচুতলার কর্মীদের তৃণমূলে রাখাটাই মূল উদ্দেশ্য তাঁদের। যদিও বিরোধীদের কটাক্ষ, এত দিন যাঁদের মনে পড়েনি, হারার ভয়ে তাঁদের কাছে যাচ্ছে তৃণমূল।

দল সূত্রে জানা যায়, বিধানসভা নির্বাচনের আগে বর্ধমান শহরের কমিটি গড়ার কথা জানিয়ে রাজ্য নেতৃত্বকে চিঠি দিয়েছিলেন সভাপতি অরূপ দাস। তিনি জানিয়েছিলেন, শহরে দলের পরিস্থিতি ভাল নয়। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব বেড়েছে। জেলা নেতৃত্বও কার্যত তা মেটাতে সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। পরে রাজ্যের দুই শীর্ষ স্থানীয় নেতা শহরে দলের বিরোধী গোষ্ঠী এক নেতার সঙ্গে কথা বলে ‘মানভঞ্জনের’ চেষ্টা করেন। কয়েকদিন আগে প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে কথা বলতে অরূপ দাস, জেলা যুব সভাপতি রাসবিহারী হালদার ও ‘বিরোধী শিবিরের’ খোকন দাস কলকাতায় গিয়েছিলেন বলেও জানা যায়। সম্প্রতি বর্ধমান শহরে একটি বাড়িতেও ফের বৈঠক হয়। সেখানেও ছিল ‘টিম পিকে’।

Advertisement

বর্ধমান উত্তর বিধানসভা নিয়েও একাধিক বৈঠক হয়। দলের কর্মীদের একাংশের দাবি, বর্ধমান ১ ও ২ ব্লকের বিবদমান গোষ্ঠী, বিধায়ককে নিয়ে রাজ্য নেতৃত্ব বৈঠক করে, আপাতত সামাল দিয়েছেন। জামালপুর, খণ্ডঘোষ, রায়না, মেমারি, পূর্বস্থলী, কালনা, গলসিতে দলের অঞ্চল নেতাদের সঙ্গে কথা বলছে ‘টিম পিকে’। যে সব নেতারা বসে রয়েছেন, তাঁদের বাড়ি গিয়ে দলে তাঁদের প্রয়োজন জানানো হচ্ছে। কাজে লাগানোর আশ্বাসও দেওয়া হচ্ছে। জানা গিয়েছে, কালনায় বিধায়কের অনুগামীদের সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। কাটোয়ায় ‘বিক্ষুব্ধ’দের সঙ্গে বৈঠক করেছেন রাজ্য নেতৃত্ব। ‘নিষ্ক্রিয়’দের জেলা-ব্লক কমিটিতে নেওয়া হচ্ছে।

তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডুর দাবি, “দু’-একটি জায়গায় বিচ্ছিন্ন ভাবে ক্ষোভ থাকলেও দিদির বক্তব্যের পরে তা কেটে যাবে বলে আশা করছি। বিশৃঙ্খলাকারীরা চলে যাওয়ায় আমাদের জেলায় সার্বিক ভাবে কোনও দ্বন্দ্ব নেই।’’ যদিও এতে সহমত নন দলের অনেক নেতা-কর্মীই। মেমারি ও রায়নার ‘নিষ্ক্রিয়’ অঞ্চল নেতাদের একাংশের দাবি, “কী ভাবে কাজে লাগানো হবে সবাইকে, যাঁদের জন্য লোকসভায় ফল খারাপ হয়েছে, তাঁদের সরানো হবে কি না—এ সব প্রশ্নের উত্তর কেউ দিচ্ছেন না।’’ এমনকি, রাজ্য নেতৃত্বের আশ্বাসেও পরেও জেলা-ব্লক নেতৃত্ব তাতে গুরুত্ব দিচ্ছেন না, এমন অভিযোগও উঠেছে। এ সব সামলাতে টিম পিকে দলের বিভিন্ন গোষ্ঠীর লোকেদের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলছেন। সেই রিপোর্ট পিকের দফতরে যাচ্ছে। নির্দেশ এলে, দুই গোষ্ঠীকে নিয়ে বসা হচ্ছে। তাতেও সমস্যা না মিটলে দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে।

শাসক দলের এই তৎপরতা কানে গিয়েছে বিরোধী দলের। বিজেপির জেলা সাংগঠনিক সভাপতি (বর্ধমান সদর) সন্দীপ নন্দীর দাবি, “যাওয়ার সময়ে কেউ নিষ্ক্রিয় না সক্রিয় তাতে মানুষের যায়-আসে না। তৃণমূলকে হারানোর জন্য সবাই এককাট্টা।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement