মেমারিতে গোষ্ঠী-সংঘর্ষে গ্রেফতার ৪০

পঞ্চায়েতের ‘ক্ষমতা’ নিয়ে বিবাদের জেরে গোষ্ঠী-সংঘর্ষ বাধল মেমারির বড়পলাশন ২ পঞ্চায়েতের মির্জাপুর গ্রামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫২
Share:

প্রতীকী ছবি।

পঞ্চায়েতের ‘ক্ষমতা’ নিয়ে বিবাদের জেরে গোষ্ঠী-সংঘর্ষ বাধল মেমারির বড়পলাশন ২ পঞ্চায়েতের মির্জাপুর গ্রামে। সংঘর্ষ থামাতে গেলে ইট-পাটকেলের মুখে পড়ে পুলিশ। বর্ধমান থেকে পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ঘটনাস্থল থেকে ৩৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরে তল্লাশি চালিয়ে আরও ৭ জনকে ধরে পুলিশ। শনিবার ধৃত ৪০ জনকে বর্ধমান আদালতে তোলা হলে বিচারক ১৪ দিন জেল-হাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

পুলিশের কাছে কোনও পক্ষ অভিযোগ জানায়নি। মেমারি থানার ওসি দীপঙ্কর সরকার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ৬৮ জনের নামে সংঘর্ষে জড়িত থাকার অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযোগে তিনি জানান, শুক্রবার বিকেলে মির্জাপুরে গ্রামের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে লাঠি, টাঙি, বল্লম, বাঁশ ও হাঁসুয়া নিয়ে সংঘর্ষ হয়। তাতে বেশ কয়েকজন আহত হন। খবর পেয়ে পুলিশ গেলে তাদের লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া হয়। পরে আরও পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ লাঠি, বাঁশ, ইটের টুকরো পেয়েছে। এ ছাড়া তল্লাশি চালানোর সময়ে গ্রামের দু’টি জায়গা থেকে ৯টি বোমা উদ্ধার করেছে পুলিশ।

স্থানীয় সূত্রের দাবি, তৃণমূলের অঞ্চল সভাপতি আবু আয়েলের সঙ্গে স্থানীয় নেতা গফফর মল্লিকের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্বেই এই সংঘর্ষ বাধে। অঞ্চল সভাপতি আবু আয়েলের স্ত্রী রুনু খাতুন এ বার বড়পলাশন ২ পঞ্চায়েতের প্রধান নির্বাচিত হয়েছেন। তৃণমূল সূত্রে জানা যায়, দলীয় নেতৃত্ব গফফরের স্ত্রী ডালিয়া খাতুনকে উপপ্রধান পদে চেয়েছিলেন। কিন্তু বোর্ড গঠনের সভায় ওই পঞ্চায়েতের ৫ জন সদস্য বর্তমান উপপ্রধান পরেশ দাসের নাম সমর্থন করেন। তখন বাকি সদস্যেরা সভা ছেড়ে বেরিয়ে যান। অঞ্চল সভাপতির গোষ্ঠীর দাবি, উপপ্রধান হওয়ার পরে টানা ১৪ দিন গ্রামছাড়া থাকতে হয় পরেশ দাসকে। পরে গফফর-গোষ্ঠীর কাছে ‘মুচলেকা’ দিয়ে তিনি গ্রামে ফেরেন। এই গোষ্ঠীর লোকজনের দাবি, গ্রামের মাঠ দিয়ে যাওয়ার সময়ে তাঁদের এক সঙ্গীকে মারধর করা হয়। তার পরে আচমকা কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকা এক ব্যক্তির লোকজনের উপরে হামলা চালানো হয়। তাতে তিন জন গুরুতর জখম হয়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। অঞ্চল সভাপতি আবু আয়েলের অভিযোগ, ‘‘সুষ্ঠু ভাবে পঞ্চায়েত চালাতে দেবে না বলে পরিকল্পিত ভাবে হামলা চালিয়েছে ওই গোষ্ঠী।’’

Advertisement

এই অভিযোগ অস্বীকার করে গফফর-গোষ্ঠীর দাবি, মুম্বই থেকে এসে ওই ব্যক্তি গ্রামে গোলমাল পাকায়। বারবার একই ঘটনা ঘটে বলে এ বার গ্রামবাসীরা সতর্ক ছিলেন। গফফরের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘আবু আয়েল পলাশন গ্রাম থেকে লোক নিয়ে হামলা করতে চাইলে গ্রামের মানুষ সংগঠিত ভাবে প্রতিবাদ করেছেন।’’

মেমারি ২ ব্লকের তৃণমূল নেতা অমর সাহা অবশ্য দাবি করেন, ‘‘মদ খাওয়া নিয়ে তর্কাতর্কি থেকে সংঘর্ষ হয়েছে। এর সঙ্গে আমাদের দলের কোনও সম্পর্ক নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন