সাত দিনের মধ্যে নির্মাণ ভাঙার নির্দেশ
TMC

সরকারি জমি দখলে অভিযুক্ত তৃণমূল নেতা

মঙ্গলবারই জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বর্ধমান শহর লাগোয়া বাম বটতলায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ওই জমিতে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করান। তিনি দেখেন, সরকারি জমিতে কয়েকটি অস্থায়ী বাড়ি রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৩
Share:

এই নির্মাণ নিয়েই বিতর্ক। —নিজস্ব চিত্র।

সরকারি জমিতে বাড়ি তৈরির ঘটনায় বর্ধমান ২ ব্লকের বৈকুণ্ঠপুর ২ অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি শেখ আজাদ রহমান জড়িয়ে রয়েছেন বলে জেলাশাসকের (পূর্ব বর্ধমান) কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন জনা কুড়ি স্থানীয় বাসিন্দা। তাঁদের অভিযোগ, ওই জমিতে তৃণমূলের ওই নেতা ‘আন্ডারপাস’ দেওয়া দোতলা বাড়ি তৈরি করছেন। জমির অংশ তিনি কয়েক জনকে বিক্রিও করেছেন বলে অভিযোগ।

Advertisement

যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূলের ওই নেতা। বিএলএলআরও (বর্ধমান ২) সৌরভ রক্ষিত বলেন, “স্থায়ী ও পাকা বাড়ি মালিককে সাত দিনের মধ্যে বাড়ি ভাঙার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যতদূর শুনেছি, ওই নির্দেশ পাওয়ার পরেই তিনি বাড়ি ভাঙার কাজ শুরু করেছেন।”

মঙ্গলবারই জেলা পরিষদের সভাধিপতি শ্যামাপ্রসন্ন লোহার বর্ধমান শহর লাগোয়া বাম বটতলায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ওই জমিতে বেআইনি নির্মাণ বন্ধ করান। তিনি দেখেন, সরকারি জমিতে কয়েকটি অস্থায়ী বাড়ি রয়েছে। দেড়-দু’হাজার বর্গফুটের উপরে একটি বহুতল নির্মাণের কাজ চলছে। তৃণমূলের স্থানীয় নেতৃত্বের মদতেই সরকারি জমি দখল করে বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে বলেও অভিযোগ
পান তিনি।

Advertisement

বুধবার সভাধিপতি বলেন, “বেআইনি বাড়িগুলিকে সাত দিনের মধ্যে বিএলএলআরও (বর্ধমান ২) দফতরে প্রয়োজনীয় নথি জমা করতে বলা হয়েছে। না হলে দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

জেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগে জানানো হয়েছে, শেখ আজাদ রহমান তৃণমূলের ক্ষমতার বলে বেআইনি কাজ করছেন। বাম গ্রামের বাসিন্দারা এক যোগে প্রতিবাদ করলে তিনি দলের ক্ষমতা দেখিয়ে সরকারি সুবিধা থেকে বঞ্চিত করা, গ্রামছাড়া করার হুমকি দেন বলেও অভিযোগ। ওই নেতার বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগও আনা হয়েছে। অভিযুক্ত নেতার দাবি, “আমাদের দলের গ্রামের এক নেতা জমি-জায়গা সংক্রান্ত কাজে যুক্ত। সেই অভিযোগ আমাদের কাছে আসে। খোঁজ নিয়ে দেখি, সরকারি জমি দখলে তাঁর নাম রয়েছে। তাঁকে শো-কজ় করা হয়। পরে বহিষ্কার করা হয়েছে। ওই ব্যক্তিই বিরোধী দলের লোকদের এক করে আমাকে কালিমালিপ্ত করার জন্য মিথ্যা অভিযোগ করেছে। সরেজমিন তদন্ত করলেই জানতে পারবেন, দখলদাররা কার কাছ থেকে জমি কিনেছেন।”

তৃণমূলের বহিষ্কৃত নেতা, শেখ রাজু বলেন, “প্রতিবাদ করার জন্য আমাকে বহিষ্কৃত হতে হয়েছে। গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেছেন। বাড়িটা যাঁর নামে হচ্ছে, তিনি অঞ্চল সভাপতির নিকট আত্মীয়।” বিজেপির মুখপাত্র সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “শাক দিয়ে কী আর মাছ ঢাকা যায়। তেমনি বিরোধীদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দুর্নীতির হাত থেকে তৃণমূলের রেহাই নেই।”

অভিযোগে অস্বস্তিতে তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের বিধায়ক (বর্ধমান উত্তর) নিশীথ মালিক বলেন, “যে এই সব কাজ করেছে, সে বুঝবে।” ব্লক সভাপতি (বর্ধমান ২) পরমেশ্বর কোনার বলেন, “দলের কেউ যুক্ত থাকলে নেতৃত্ব ব্যবস্থা নেবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন