ছড়িয়ে পড়েছে এই ছবি। নিজস্ব চিত্র
পাইপগান ও কার্তুজ-সহ এক ব্যক্তিকে ধরেছে পুলিশ। অথচ, সমাজ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ছবিতে (সত্যতা আনন্দবাজার পত্রিকা যাচাই করেনি) পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের বিধায়ক নবীনচন্দ্র বাগের সঙ্গে দেখা গিয়েছে সেই ব্যক্তিকে। সে সুবাদে বিরোধীদের দাবি, ওই লোকটি এলাকায় ‘বিধায়ক-ঘনিষ্ঠ’ বলেই পরিচিত। যদিও বিধায়কের দাবি, ‘‘ছবিতে যাঁকে দেখা যাচ্ছে, তাঁকে আমি চিনি না।’’
পুলিশের দাবি, বুধবার ভোরে বর্ধমান-আরামবাগ রোডের ফকিরপুর ঢালে নাকা তল্লাশি চলার সময়, রায়নার সেহেরাবাজারের পাওয়ারহাউস পাড়ার বাসিন্দা সম্পদ জুঁই ওরফে বাবুকে আটকানো হয়। স্কুটার নিয়ে গভীর রাতে তিনি কোথায় যাচ্ছিলেন জিজ্ঞাসাবাদ করার সময়েই তাঁর কাছ থেকে একটি পাইপগান ও কার্তুজ মেলে। আদালতে তোলা হলে, বিচারক পাঁচ দিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠান তাঁকে। এর পরেই সমাজ মাধ্যমে একটি ছবি পড়ে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, শীতের পোশাক পরে থাকা বিধায়কের পাশে এক জন দাঁড়িয়ে রয়েছেন। তাঁর মুখের উপর গোল চিহ্ন দিয়ে দাবি করা হয়েছে, তিনিই সম্পদ জুঁই। পুলিশ জানিয়েছে, সম্পদের বিরুদ্ধে মাদক মামলা-সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে।
বিজেপির বর্ধমান সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি সৌম্যরাজ বন্দ্যোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘সম্পদ জুঁই তৃণমূল-ঘনিষ্ঠ, সেটা সবাই জানেন। রায়নার পুলিশই কয়েক বছর আগে মাদক মামলায় তাঁকে গ্রেফতার করেছিল। জেলেও ছিলেন। অপকর্ম করবেন বলেই তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা ওঁর। সমাজ মাধ্যমের ছবি (আনন্দবাজার সত্যতা যাচাই করেনি) সেটা আরও স্পষ্ট করে দিল।’’ সিপিএমের জেলা কমিটির সদস্য বিনোদ ঘোষেরও কটাক্ষ, ‘‘নাম-কাজ দু’টোতেই সমান। এঁরাই তো তৃণমূলের সম্পদ। শুধু বিধায়ক নয়, ওই এলাকার তৃণমূল নেতা সঞ্জীব হাজরাকেও সম্পদের পাশে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যাচ্ছে। সমাজ মাধ্যমের ওই ছবি (সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার) বলে দিচ্ছে, তৃণমূলের সঙ্গে সমাজবিরোধীদের যোগ কতটা বেশি।’’
যদিও বিধায়কের দাবি, ‘‘ছবিটা সেহারাবাজারে হওয়া তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসের অনুষ্ঠানের ছবি। আমার পাশে যিনি দাঁড়িয়ে আছেন, তাঁর বাড়ি রায়নায় বলে শুনেছি। তাঁকে চিনি না। উনি কখন আমার পাশে এসে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন সেটাও আমার অজানা।’’ তৃণমূল নেতা সঞ্জীব হাজরারও দাবি, ‘‘সম্পদ জুঁইকে চিনি না। উনি তৃণমূলের কেউ নন।’’ তা হলে কী ভাবে বিধায়কের পাশে দাঁড়ালেন সম্পদ, সে উত্তর অবশ্য মেলেনি।
তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডু বলেন, ‘‘জনপ্রতিনিধিদের পাশে নানা রকমের মানুষজন ছবি তোলেন। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছিল, সেটা খোঁজ নেওয়া দরকার। আবার জন প্রতিনিধিদেরও সতর্ক থাকার প্রয়োজন।’’